শুক্রবার, ১২ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা
সামরিক সচিবের বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি

বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানানো সবার দায়িত্ব

নিজস্ব প্রতিবেদক

বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানানো সবার দায়িত্ব

বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যাতে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারে তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

গতকাল বঙ্গভবনের দরবার হলে ‘১৯৭১ : রেজিসটেন্স, রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড রিডেম্পশান’ শীর্ষক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক একটি গবেষণাধর্মী বইয়ের প্রকাশনা উত্সবে রাষ্ট্রপতি এ আহ্বান জানান। বইটির লেখক রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মো. সরোয়ার হোসেন। বইটি বাংলা একাডেমি প্রকাশ করেছে।

বইটির মোড়ক উন্মোচন করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। পরে বইয়ের লেখক মেজর জেনারেল সরোয়ার হোসেন এবং বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান একটি কপি রাষ্ট্রপতির হাতে তুলে দেন। প্রকাশনা অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, স্বাধীনতার ৪৭ বছরেও এ দেশের মানুষ পরিপূর্ণভাবে স্বাধীনতার সুফল ভোগ করতে পারেনি। স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী একটি চক্র এখনো সুযোগ পেলে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করতে উঠেপড়ে লাগে। অতীতেও এ চক্রটি আমাদের মুক্তিসংগ্রামে ও মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বার বার বদলানোর অপচেষ্টা করেছে। তিনি বলেন, সাময়িকভাবে এ চেষ্টা সফল হলেও চূড়ান্তভাবে তারা পরাস্ত হয়। ইতিহাস তার নিজস্ব গতিতে চলে। কেউ তা বদলাতে পারে না। বরং যারা এ অপচেষ্টা করে তারাই ইতিহাসের আঁস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়। তাই বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যাতে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে পারে তা নিশ্চিত করা আমাদের সবার পবিত্র দায়িত্ব ও কর্তব্য।

অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি বলেন, মুক্তিসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অনেক লেখালেখি হলেও গবেষণাধর্মী বইয়ের সংখ্যা খুব একটা বেশি নয়। আর যা আছে তাও বেশির ভাগ এলাকাভিত্তিক, বাহিনীভিত্তিক বা অপারেশনভিত্তিক। সে বিবেচনায় ‘১৯৭১ : রেজিসটেন্স, রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড রিডেম্পশান’ প্রকাশনা একটি গুরুত্বপূর্ণ গবেষণাকর্ম। এতে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে গবেষণার অনেক উপকরণ রয়েছে। তিনি বলেন, আমি আশা করব, আমাদের প্রাজ্ঞ লেখক, গবেষক, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিকসহ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সিক্ত আগ্রহীগণ মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিসংগ্রাম নিয়ে গবেষণা চালাবেন। এতে প্রজন্মের পর প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে পারবে, নিজেদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমৃদ্ধ করতে পারবে। আর তাহলেই দেশ ও জাতি উপকৃত হবে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার দেশকে উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথে এগিয়ে নিতে নিরলস প্রয়াস চালাচ্ছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ইতিমধ্যে বাংলাদেশ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, তথ্যপ্রযুক্তিসহ বিভিন্ন খাতে বিশ্বব্যাপী উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ধীরে ধীরে বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় পরিণত হচ্ছে। দেশপ্রেম ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশকে এগিয়ে নিই— এটাই হোক সবার অঙ্গীকার।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী বলেন, বইটিতে অনেক জটিল বিষয় অসাধারণ সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন লেখক। এটি গবেষণা কর্মের জন্য অনেক সহায়ক হবে। আলোচনায় অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, বইটিতে সামরিক-অসামরিক সম্পর্কের বিষয়টি অসাধারণভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এটা পড়ে অনেকেই উপকৃত হতে পারবেন। অধ্যাপক ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, বইয়ের লেখক ইতিহাসের প্রতি আগাগোড়া বস্তুনিষ্ঠতা রেখেছেন। তিনি এমন কোনো  তথ্যের উপস্থাপনা করেননি যা নিয়ে বিতর্ক হতে পারে। বইয়ের লেখক মেজর জেনারেল সরোয়ার হোসেন বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় আমার মাত্র সাত বছর বয়স ছিল। মুক্তিযোদ্ধাদের বীরগাথা নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরে গর্বিত হতে চাই।

সর্বশেষ খবর