শুক্রবার, ১২ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা
উন্নয়নের সুফল পাচ্ছে মানুষ : প্রধানমন্ত্রী

দেশজুড়ে উন্নয়ন মেলা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০২১ সালে বাংলাদেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত দেখতে চাই। আমরা উন্নয়নের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি, যার সুফল পাচ্ছে জনগণ। তিনি বলেন, উন্নয়ন কর্মকাণ্ড যেন সঠিকভাবে পরিচালনা করা হয় সেজন্য সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। গতকাল সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সারা দেশে একযোগে তিন দিনের উন্নয়ন মেলার উদ্বোধনের সময় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এ সময় অনলাইনের মাধ্যমে দেশের সব জেলা ও উপজেলা এবং অনেক ইউনিয়ন তথ্যকেন্দ্র যুক্ত ছিল গণভবনের সঙ্গে। এর মধ্যে বরগুনা, ঝিনাইদহ, হবিগঞ্জ, গাইবান্ধা ও চাঁদপুর জেলার সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এই মেলায় আজকে যারা সম্পৃক্ত রয়েছেন তাদের বলব যে কাজগুলো আমরা করতে পেরেছি এবং যে কাজগুলো ভবিষ্যতে করার পরিকল্পনা নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে সেগুলো সম্পর্কে যেমন জনগণকে সচেতন করতে হবে, তেমনি আমাদের উন্নয়ন কর্মসূচিগুলো যেন সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হয় সেজন্য সবার সহযোগিতা একান্তভাবে দরকার। তিনি বলেন, এই উন্নয়ন যেন অব্যাহত থাকে সেই লক্ষ্য নিয়েই এই উন্নয়ন মেলার সূচনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ ঘর পাবে, চিকিত্সাসেবা পাবে, প্রতিটি মানুষ আলোকিত হবে। এগুলোই ছিল বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর কীভাবে দেশের মানুষের উন্নতি করা যায় আমাদের সেই ভাবনা ছিল সবসময়। আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করছি। আমরা বিনামূল্যে বই দিচ্ছি, বৃত্তি প্রাইমারি থেকে মাস্টার্স পর্যন্ত দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছি। প্রতিটি জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় করে দিচ্ছি। শিক্ষার মানোন্নয়নে উপজেলা পর্যন্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছি। সরকারপ্রধান বলেন, আমাদের উন্নয়ন সার্বিকভাবে সব মানুষের, বিশেষ করে গ্রামের মানুষের জন্য। গ্রামের মানুষের উন্নয়নের জন্য রাস্তাঘাট নির্মাণ, শিক্ষাব্যবস্থার উন্নতিসহ আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি যেন বিশ্বদরবারে সম্মানজনক স্থানে পৌঁছাতে পারি। সরকারের উন্নয়ন কর্মসূচিগুলো যেন সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হয় সেজন্য সবার সহযোগিতা চেয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা যেসব উন্নয়নকাজ করতে পেরেছি ও করার পদক্ষেপ নিয়েছি সেগুলোর ব্যাপারে জনগণকে সচেতন করতে হবে। সরকারের উন্নয়ন হচ্ছে জনগণের উন্নয়ন, তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের উন্নয়ন। ডিজিটাল বাংলাদেশের মানুষ এখন সব ধরনের সেবা পাচ্ছে। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে মানুষের জীবনমান উন্নত ও সহজ করাই আমাদের লক্ষ্য, আমরা তা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সমন্বয়ক (এসডিজি) মো. আবুল কালাম আজাদ ও পরিচালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান। এ সময় সরকারের উন্নয়নবিষয়ক একটি ভিডিওচিত্র দেখানো হয়। গণভবনে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়া, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টারা, সংসদ সদস্যসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দেশের সব জেলাকে ভিক্ষুকমুক্ত ঘোষণা করতে স্থানীয় পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা এক দিনের বেতন দিয়ে তহবিল তৈরি করবেন। এ ছাড়া তিনি নিজের কল্যাণ তহবিল থেকেও অনুদান দেবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আজকের বাংলাদেশ তাঁর দেওয়া ঘোষণা অনুযায়ী ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপ নিচ্ছে! বাংলাদেশের মানুষ আজ সব ধরনের সেবা পাচ্ছে। মোবাইল ফোন প্রত্যেকটি মানুষের হাতে পৌঁছে গেছে। প্রায় ৮ কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছে এবং প্রযুক্তি ব্যবহার করে। মানুষের জীবনমানের এই উন্নয়নই তাঁর সরকারের লক্ষ্য। তিনি বলেন, ইনশা আল্লাহ আমরা বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে সক্ষম হব। যে স্বপ্ন একদিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেখেছিলেন। বর্তমান সরকারের লক্ষ্যই তৃণমূল মানুষের জীবনমান উন্নয়ন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশকে যদি অর্থনৈতিকভাবে উন্নত করতে হয় তবে শুধু ধনিক শ্রেণিকে আরও ধনী বানানোর প্রয়োজন নেই। বরং যারা একেবারে তৃণমূলে পড়ে আছে, অবহেলিত রয়েছে তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে হবে। গ্রামের জনগণের প্রাপ্য সকল প্রকার নাগরিক সুবিধা দিতে হবে এবং গ্রামের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী ও মজবুত করতে হবে। গ্রামে অর্থপ্রবাহ বৃদ্ধি করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি ছেলে-মেয়ে বিদ্যালয়ে যাবে, পড়াশোনা করবে এবং মানুষ মানুষের মতো বাঁচবে। এ সময় চাঁদপুরে লঞ্চে যাওয়া-আসার স্মৃতিচারণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চাঁদপুরের মত্স্যজীবী মানিক দেওয়ানের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, শুধু ব্যবহারকারীই নয়, কারেন্ট জাল প্রস্তুতকারক ও বিক্রেতাদের বিরুদ্ধেও সরকার কঠোর ব্যবস্থা নেবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর