মঙ্গলবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

স্ত্রী নির্যাতনের ভয়াবহ চিত্র

আইসিডিডিআরবির গবেষণা প্রতিবেদন

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশে স্পাউজাল ভায়োলেন্স (এসভি) বা স্বামীর দ্বারা স্ত্রী নির্যাতনের হার প্রকট। নতুন এক গবেষণায় দেখা যায়, বাংলাদেশে ঘনিষ্ঠ সঙ্গীর দ্বারা নির্যাতনের হার শতকরা ২৭ শতাংশ। আর পোশাক খাতে কর্মরত নারীদের স্বামী কর্তৃক নির্যাতনের হার আরও বেশি। এই খাতের মোট নারী শ্রমিকদের শতকরা ৫৩ শতাংশই স্বামীর মাধ্যমে নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। এর ফলে নারী শ্রমিকদের মধ্যে বিষণ্নতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। গার্মেন্টের মোট ৪০ শতাংশ নারী এজন্য বিষণ্নতায় ভুগছে। গতকাল আন্তর্জাতিক উদারাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি)-এর অডিটোরিয়ামে ‘মিজারিং দ্য ইফেক্ট অব এইচইরেসপেক্ট : অন ইন্টারভেনশন অ্যাড্রেসিং ভায়োলেন্স এগেইনস্ট ফিমেইল গার্মেন্ট ওয়াকার্স ইন ফোর ফ্যাক্টরিস অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক গবেষণা প্রকল্পের ফলাফল থেকে এসব তথ্য জানা যায়। আইসিডিডিআরবি কর্তৃক প্রকাশিত এই গবেষণার অর্থায়ন করেছে যুক্তরাজ্যের ডিপার্টমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট সাউথ আফ্রিকান মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিল। এক বছর ধরে চারটি কারখানার মোট ৮০০ নারী শ্রমিককে নিয়ে এই গবেষণা জরিপটি করা হয়। গবেষণায় বলা হয়, গার্মেন্টের নারী শ্রমিকদের মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশই কর্মক্ষেত্রে কোনো না কোনোভাবে শারীরিক ও মৌখিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। মূলত কমবয়সী ও অভিবাসী নারী কর্মীদের সামাজিক অবস্থানের কারণে নির্যাতনকে একটি সামাজিক শাস্তি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। দেখা যায়, একজন নারী কর্মীর সঞ্চয় অর্ধলাখ টাকার বেশি হলে তার নির্যাতনের ঝুঁকি বহুগুণে বেড়ে যায়। আর কর্মক্ষেত্রে নির্যাতন, কাজের চাপ, আত্মসম্মানবোধ এবং স্বামীর দ্বারা নির্যাতনের জন্য এই নারী কর্মীদের বিষণ্নতার মাত্রা বৃদ্ধি পায়। গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফলে, স্বামী কর্তৃক নির্যাতনের জন্য নারীর কর্মক্ষেত্র          সংক্রান্ত মানসিক চাপ বৃদ্ধি পায়। এর ফলে বিষণ্নতা থেকে নারীর উৎপাদনশীলতাও হ্রাস পায়। আইসিডিডিআরবির গবেষক ড. রুচিরা তাবাসসুম নভেদ বলেন, স্বামীর দ্বারা নির্যাতনের কথা বলেছে এমন প্রায় ৪০ শতাংশ গার্মেন্ট নারী কর্মীর মধ্যে বিষণ্নতার উপসর্গ দেখা গেছে।

সর্বশেষ খবর