পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের প্রতি শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এ অঞ্চলের ভূমির মালিকানা তাদেরই থাকবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পার্বত্য অঞ্চলের মানুষকে আমি বলব, শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে। কারণ শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ছাড়া উন্নয়ন সম্ভব নয়।’ দুর্গম পার্বত্য এলাকায় বহুমুখী ব্যবহার উপযোগী চার হাজারতম পাড়াকেন্দ্রের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। গতকাল রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেল থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তিনি নারী ও শিশুর সব ধরনের মৌলিক সামাজিক সেবা নিশ্চিত করতে এই চার হাজারতম পাড়াকেন্দ্রের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড ও ইউনিসেফের সহযোগিতায় রাঙামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলার মিটিঙ্গাছড়িতে পাকা দালানবিশিষ্ট এই চার হাজারতম পাড়াকেন্দ্রটি নির্মাণ করা হয়েছে। খবর বাসসের। সরকার শান্তিচুক্তির সিংহভাগ বাস্তবায়ন করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জমি-জমার মালিকানা সেই ব্রিটিশ আমলে করা আইন দিয়ে নয়, বরং আমাদের সব জায়গার মানুষ যেন তাদের ভূমির মালিকানা পায়, পার্বত্য অঞ্চলের মানুষ যেন তাদের ভূমির মালিকানা সেভাবে নিতে পারে, সেটিই আমরা নিশ্চিত করতে চাই।’ শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের একটা অঞ্চল অবহেলিত থাকবে এটা সরকার চায় না। পার্বত্য শান্তিচুক্তি করেছে তার সরকার এবং এ জন্য এর বাস্তবায়নও সরকার করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমরা আড়াই শর মতো সেনাক্যাম্প প্রত্যাহার করে নিয়েছি এবং সেখানকার সার্বিক নিরাপত্তার জন্য বর্ডার গার্ডের (বিজিবি) বিওপি তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে। প্রত্যেকটা মানুষের জীবনমান উন্নয়নের জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’ সরকারপ্রধান বলেন, যারা অস্ত্র সমর্পণ করেছিল তাদের পুলিশ এবং আনসার-ভিডিপিতে চাকরি দেওয়া হচ্ছে। তাদের জন্য প্রয়োজনে নীতিমালা পর্যন্ত শিথিল করা হচ্ছে। এখানে আধুনিক পদ্ধতিতে জমি-জমা চাষ হবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জমি-জমার মালিকানা সেই ব্রিটিশ আমলে করা আইন দিয়ে নয়, বরং সব জায়গার মানুষ যেন তাদের ভূমির মালিকানাটা পায়, পার্বত্য অঞ্চলের মানুষ যেন তাদের ভূমির মালিকানাটা সেভাবে নিতে পারে, আমরা সেই ব্যবস্থাই করতে চাই। ওই মালিকানা তাদেরই (পার্বত্যবাসীর) থাকবে, সেটি আমরা নিশ্চিত করতে চাই।’ প্রধানমন্ত্রী পরে ‘চিটাগাং হিলট্র্যাক্টস জার্নি টুওয়ার্ডস পিস অ্যান্ড প্রসপারিটি’ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন। পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উসেসিংয়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন ড. গওহর রিজভী, আর এ এম ওবায়দুল মুক্তাদির চৌধুরী এবং এডুয়ার্ড বেইগবেডার। ভিডিও কনফারেন্স সঞ্চালনা করেন পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নববিক্রম কিশোর ত্রিপুরা।