সোমবার, ২২ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা
জামায়াতি স্বার্থ উদ্ধারের অভিযোগ

আরিফ আজাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দুদকের চিঠি

নিজস্ব প্রতিবেদক

মত্স্য অধিদফতরের মহাপরিচালক (চলতি দায়িত্ব) সৈয়দ আরিফ আজাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মত্স্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিবকে অনুরোধ করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সচিব ড. মো. শামসুল আরেফিন। তার বিরুদ্ধে একাধিক পদ দখলে রেখে স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতে ইসলামীর স্বার্থ হাসিলের অভিযোগ আনা হয়েছে।

জানা গেছে, গত বছরের ৮ নভেম্বর দুদক থেকে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। চিঠিতে বলা হয়, মত্স্য অধিদফতর মহাপরিচালক সৈয়দ আরিফ আজাদের অনৈতিক কর্মকাণ্ড বর্তমান সরকারের দুর্নীতিবিরোধী অঙ্গীকারের পরিপন্থী। এ ছাড়া সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ১৯৮৫ অনুযায়ী তিনি শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। দুদক সূত্র জানায়, নথি পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সৈয়দ আরিফ আজাদ উপ-পরিচালক পদমর্যাদার কর্মকর্তা। অথচ দায়িত্ব পালন করছেন মহাপরিচালকের। সাত বছর ধরে তিনি গুরুত্বপূর্ণ এ পদের দায়িত্বে রয়েছেন। তার কারণে মহাপরিচালকের পদে আসতে পারছেন না যোগ্য কোনো কর্মকর্তা। কারণ সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ডের কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে পদোন্নতিও বন্ধ আছে। মহাপরিচালকের পদে আসীন এই উপ-পরিচালকই হয়ে উঠেছেন সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। জামায়াত সমর্থিত এই কর্মকর্তা নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত রাখতে গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতেও বসিয়েছেন সরকারবিরোধী কর্মকর্তাদের। দুদক সূত্র আরও জানায়, আরিফ আজাদের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। তথ্য-উপাত্ত পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেবে দুদক। এ ব্যাপারে দুদক উপ-পরিচালক প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, মত্স্য অধিদফতরের মহাপরিচালক (চলতি দায়িত্ব) সৈয়দ আরিফ আজাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। অবৈধ সম্পদ পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দীর্ঘ সাত বছরে দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছে মত্স্য অধিদফতরে। আরিফ আজাদের অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা, লুটপাট, প্রজেক্ট কমিশন ও নিয়োগ বাণিজ্যের কারণে অধিদফতরের কার্যক্রম অনেকটাই স্থবির হয়ে আছে। ফলে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে। তাদের অভিযোগ, আরিফ আজাদ নিজের ইচ্ছামতো চালাচ্ছেন মত্স্য খাত। এ অধিদফতর ও জেলা শহরে ১৬৩টি গুরুত্বপূর্ণ পদ রয়েছে। এর মধ্যে ফ্যাবের ৯৬ কর্মকর্তা রয়েছেন। এতে করে মত্স্য খাত পুরোটাই এখন তার কব্জায়। দরিদ্র পরিবারের সন্তান হয়ে সরকারি চাকরিতে এসে অগাধ সম্পদের মালিক বনে গেছেন তিনি। ২০১১ সালে রাজনৈতিক ভোল পাল্টে জ্যেষ্ঠ ও দক্ষ কর্মকর্তাদের ডিঙিয়ে অধিদফতরের উপ-পরিচালক হন তিনি। উপ-পরিচালক থাকা অবস্থায় তিনি মহাপরিচালকের দায়িত্ব পান এবং দীর্ঘ সাত বছর ধরে এ পদেই রয়েছেন।

সর্বশেষ খবর