মঙ্গলবার, ২৩ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

দিল্লিতে ধরা পড়ল মোস্ট ওয়ানটেড জঙ্গি কুরেশি

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

২০০৮ সালে ভারতের গুজরাটে সিরিজ বিস্ফোরণসহ একাধিক নাশকতার অন্যতম মাস্টারমাইন্ড আবদুল সুবহান কুরেশিকে (৪৬) আটক করেছে দিল্লি পুলিশ। গতকাল দিল্লি পুলিশের তরফে জঙ্গি সংগঠন ইন্ডিয়ান মুজাহিদীনের সহপ্রতিষ্ঠাতা কুরেশিকে আটকের কথা জানানো হয়েছে। সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার ও বোমা তৈরির বিশেষজ্ঞ কুরেশি ‘ভারতের বিন লাদেন’ বলে পরিচিত ছিল। দিল্লির গাজীপুরে কোনো একটি জায়গা থেকে তাকে আটক করা হয়। গোপন সূত্রে খবর পেয়েই কুরেশিকে ধরতে গোপন ফাঁদ পেতেছিল পুলিশ। যদিও এই শীর্ষ সন্ত্রাসীকে ধরতে দুই পক্ষের মধ্যেই গুলির লড়াই হয়। অবশেষে পুলিশের জালে ধরা পড়ে সে। কুরেশিকে আদালতে তোলা হলে ১৪ দিনের পুলিশি রিমান্ডে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আগামী শুক্রবার দেশটির প্রজাতন্ত্র দিবসের আগে এই শীর্ষ সন্ত্রাসীকে আটক করাটা পুলিশের কাছে একটা বড় সাফল্য বলে মনে করা হচ্ছে। দিল্লি পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (স্পেশাল সেল) প্রমোদ কুশওয়া জানান, ‘আমরা কুরেশির কাছ থেকে পিস্তল ও কিছু নথি পেয়েছি, সে ইন্ডিয়ান মুজাহিদীন ও স্টুডেন্টস ইসলামিক মুভমেন্ট অব ইন্ডিয়ার (সিমি) মতো জঙ্গি সংগঠনকে পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করছিল। ভুয়া নথি নিয়ে কুরেশি নেপাল গিয়েছিল এবং সেখানে বহু বছর কাটিয়েছিল। ২০১৩-২০১৫ সালের মধ্যে সৌদি আরব ভ্রমণ করে ভারতে ফিরে এসে ওই জঙ্গি সংগঠনগুলোকে চাঙ্গা করার পরিকল্পনা নিয়েছিল।’ ২০০৮ সালের ২৬ জুলাই গুজরাটের আহমেদাবাদ ও সুরাটে সিরিজ বিস্ফোরণের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছিল এই কুরেশির বিরুদ্ধে। বাস টার্মিনাল, হাসপাতালসহ শহরের ব্যস্ততম এলাকাগুলোতে টিফিন বক্স ও মোটরসাইকেলের ভিতর ২১টিরও বেশি বোমা রেখে দেওয়া হয়েছিল বলে জানা যায়। ওই বোমা বিস্ফোরণেই ৫৬ জনের মৃত্যু হয়। ওই ঘটনার পর থেকে গত কয়েক বছর ধরেই ভারতের বিভিন্ন জায়গায় এই সন্ত্রাসীর খোঁজ চালিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু প্রতিবারই পুলিশের জাল থেকে পালিয়েছে সে। এমনকি বাংলাদেশে আত্মগোপন করেছিল বলেও পুলিশের কাছে খবর আসে, কিন্তু পরমুহূর্তেই ঠিকানা পরিবর্তন করে ফেলে কুরেশি। নিষিদ্ধ সংগঠন সিমিতে যোগদানের আগে উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা তিন সন্তানের পিতা কুরেশি মুম্বাইয়ের একটি সফটওয়্যার সংস্থায় কাজ করত। মূলত কাজের সন্ধানেই কুরেশির পরিবার উত্তরপ্রদেশ ছেড়ে মুম্বাইয়ে পাড়ি দেয়। ২০১৪ সালে বেঙ্গালুরুতে বিস্ফোরণের পরিকল্পনা, ২০১০ সালে দিল্লি সিরিজ বিস্ফোরণ ও ২০০৬ সালে মুম্বাইয়ের লোকাল ট্রেনে সিরিজ বিস্ফোরণের পেছনেও তার সম্পৃক্ততার অভিযোগে কুরেশিকে ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ তালিকাভুক্ত করে ভারতের জাতীয় তদন্ত সংস্থা এনআইএ।

সর্বশেষ খবর