শনিবার, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা
প্রধানমন্ত্রীর সফর

চাওয়া-পাওয়ার হিসাব কষছে দক্ষিণের মানুষ

রাহাত খান, বরিশাল

ছয় বছর পর আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বরিশাল সফরে চাওয়া-পাওয়ার হিসাব কষছে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। উন্নয়ন প্রত্যাশার পাশাপাশি আগামী সিটি এবং জাতীয় নির্বাচনে দলের প্রার্থী মনোনয়নের জটিল সমীকরণ কষছে ক্ষমতাসীন দলটির পদ-প্রত্যাশী নেতাসহ তাদের কর্মীরা।

বৃহস্পতিবার নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে বিশাল জনসভায় আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে দক্ষিণাঞ্চলের নদী খনন, ভোলার গ্যাস পাইপ লাইনের মাধ্যমে বরিশালে সরবরাহ, বরিশালে স্বতন্ত্র মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক খেলা আয়োজন, বরিশাল বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উন্নীতকরণ, বানারীপাড়ার সন্ধ্যা নদীর ওপর সেতু নির্মাণ এবং বাবুগঞ্জের পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি ক্যাম্পাসকে স্বতন্ত্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের সাত দাবি করেন জনসভার সভাপতি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ এমপি। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বক্তব্যে ৭ দাবির মধ্যে ভোলার গ্যাস পাইপ লাইনের মাধ্যমে বরিশালে সরবরাহ এবং মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হয়ে ভোলার গ্যাস ভিত্তিক পাওয়ার প্লান্টের মাধ্যমে বরিশালে বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং বরিশাল থেকে ভোলা যেতে নদীর ওপর সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু অন্যগুলোর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে কিছু উল্লেখ করেননি। বরিশাল সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সাবেক সভাপতি প্রফেসর এম. মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, জনগণের চাহিদা একরকম। আর দেশের প্রধানমন্ত্রীর হিসাব-নিকাশ অন্যরকম। তিনি আঞ্চলিকতার ভিত্তিতে কোনো সিদ্ধান্ত নেন না। তবে প্রধানমন্ত্রী সময়-সুযোগ মতো অবশ্যই এসব দাবির ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখাবেন। এদিকে বরিশাল আওয়ামী লীগের একটি অংশ, বিশেষ করে তরুণরা মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাদিক আবদুল্লাহকে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আগামী সিটি নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী ঘোষণা দেবেন বলে ধরে নিয়েছিলেন। সেই লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু উদ্যানে ছিল সাদিকময়। পুরো নগরী এবং বঙ্গবন্ধু উদ্যানজুড়ে সাদিকের তোরণ, ব্যানার-বিলবোর্ড এবং ‘সাদিককে মেয়র মনোনয়ন চাই’ স্লোগানসহ তার ছবি দিয়ে টি-শার্ট পরিহিত হাজার হাজার নেতা-কর্মীর জনসভায় উপস্থিতিতে এই দাবি জোরালো করেছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী জনসভা মঞ্চে ওঠার আগেই আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান এমপি যখন বক্তব্য দিচ্ছিলেন তখন বঙ্গবন্ধু উদ্যানে সাদিকের ছবি উঁচিয়ে রাখা নেতা-কর্মীদের ধমক দিয়ে সেগুলো নামাতে বাধ্য করেন। আবদুর রহমান তার বক্তব্যে বলেন, সাদিককে তারা চেনেন, ছবি দিয়ে সাদিককে চেনাতে হবে না। এতে তারা কিছুটা হতাশা হয়েছেন। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার বক্তব্যের সময় সাদিককে দলীয় মেয়র প্রার্থী হিসেবে পরিচয় করিয়ে না দেওয়ায় হতাশায় নিমজ্জিত বরিশাল আওয়ামী লীগের তরুণ নেতা-কর্মীরা। জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুস এমপি জনসভায় উত্থাপিত ৭টি দাবি প্রধানমন্ত্রী গুরুত্বের সঙ্গে পর্যায়ক্রমে মেনে নেবেন বলে আশা করেন তিনি। সাদিক আবদুল্লাহকে মেয়র মনোনয়ন ঘোষণার বিষয়ে তিনি বলেন, এই মুহূর্তে এ জাতীয় ঘোষণার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। এ নিয়ে এখনই হতাশার কিছু নেই।

সর্বশেষ খবর