রবিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

দ্বৈত ভোটার করতে সহায়তায়ও মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছবিসহ ভোটার তালিকায় ২ লাখ ৫ হাজারের মতো ব্যক্তির দুবার ভোটার হওয়ার প্রমাণ পাওয়ার পর সহযোগিতাকারীদের বিরুদ্ধেও মামলা করার হুমকি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সেই সঙ্গে কোনোভাবেই পুনঃ ভোটার বা দ্বৈত ভোটার যেন কেউ হতে না পারে, সে বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়েছে সংস্থাটি। এএফআইএস (অটোমেটেড ফিঙ্গারপ্রিন্ট আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম) ম্যাচিংয়ের মাধ্যমে দ্বৈত ভোটার ধরা হচ্ছে। এরই মধ্যে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় দুই ব্যক্তি মিথ্যা তথ্য দিয়ে ও তথ্য পরিবর্তন করে দুবার ভোটার হওয়ায় তার বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য সংশ্লিষ্ট রেজিস্ট্রেশন অফিসারকে নির্দেশ দিয়েছে ইসি সচিবালয়। ইসি সচিবালয়ের উপসচিব মো. আবদুল হালিম স্বাক্ষরিত এ-সংক্রান্ত আলাদা চিঠি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে। ভোটার তালিকা আইন অনুযায়ী, মিথ্যা তথ্য দিয়ে ভোটার হলে অনধিক ছয় মাস কারাদণ্ড বা অনধিক ২ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে। ৩১ জানুয়ারি হালনাগাদের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের পর ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ জানিয়েছিলেন, ১৭ কোটি মানুষের বাংলাদেশে ভোটার এখন ১০ কোটি ৪১ লাখ ৪২ হাজার ৩৮১ জন। হালনাগাদের আগে দেশে ভোটার ছিল ১০ কোটি ১৪ লাখ ৪০ হাজার ৬০১ জন। সচিব জানান, এবার হালনাগাদে ১৭ লাখ ৪৮ হাজার ৯৩৪ জন মৃত ভোটার এবং ২ লাখ ৪ হাজার ৮৩১ জন দ্বৈত নিবন্ধিত ভোটারের নাম বাদ পড়েছে। এবার ভোটার তালিকায় যুক্ত হয়েছেন ৪৬ লাখ ৫৫ হাজার ৫৪৫ জন নতুন ভোটার। দেশের উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের (রেজিস্ট্রেশন কর্মকর্তা) চিঠিতে বলা হয়েছে, ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন কার্যক্রমকালে কিছু ব্যক্তিকে দ্বৈত ভোটার হিসেবে এএফআইএস (অটোমেটেড ফিঙ্গারপ্রিন্ট আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম) ম্যাচিংয়ের মাধ্যমে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব ভিন্ন ভিন্ন হাতের আঙুলের ছাপ ও ভোটারের ব্যক্তিগত তথ্য আংশিক পরিবর্তন করে একই ব্যক্তিকে দুবার ভোটার হওয়ার বিষয়ে যিনি বা যারা সহযোগিতা করবেন পরবর্তী সময়ে তা তদন্তে প্রমাণিত হলে তার বা তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থাসহ ফৌজদারি মামলা করা হবে। এ বিষয়ে অধীনস্থ কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্টদের সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। হাতিয়া উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও রেজিস্ট্রেশন কর্মকর্তার কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, মো. আবদুল খালেক ও মো. আবদুল মান্নান উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অসত্য/মিথ্যা তথ্য প্রদান বা তথ্য পরিবর্তন করে দুবার ভোটার হয়েছেন। কমিশন তাদের বিরুদ্ধে ভোটার তালিকা আইন, ২০০৯-এর ১৮ ধারা অনুযায়ী মামলা করার নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি মামলার বিবরণ ইসি সচিবালয়কে জানাতে বলা হয়েছে। সম্প্রতি দ্বৈত ভোটার হওয়ার কারণে টাঙ্গাইল, পঞ্চগড়, নোয়াখালী, বরিশাল ও পিরোজপুরের কয়েকজনের বিরুদ্ধেও মামলা করার জন্য বলা হয়েছে বলে জানান ইসি কর্মকর্তা।

প্রথমটি বহাল রেখে দ্বিতীয়টি বাতিল : খালেক ও মান্নানের বিরুদ্ধে মামলার পাশাপাশি এ দুজনের দ্বৈত ভোটার থেকে প্রথমটি বহাল রেখে দ্বিতীয়টি ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিতে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগকে চিঠি দিয়েছে ইসি সচিবালয়। এনআইডি উইংয়ের পরিচালকের (অপারেশনস) কাছে চিঠিতে বলা হয়, এ দুই ব্যক্তির প্রথম অন্তর্ভুক্তি বহাল রেখে দ্বিতীয় অন্তর্ভুক্তি বাতিলের ব্যবস্থা নিতে হবে।

সর্বশেষ খবর