বুধবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

পুরান ঢাকায় টাকা লুটে দুই ছাত্রলীগ নেতার স্বীকারোক্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক

পুরান ঢাকার সূত্রাপুর থেকে ৩৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা ডাকাতির সঙ্গে জড়িত ছাত্রলীগের সাবেক দুই নেতাসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এরা হলেন দেওয়ান নাসির উদ্দিন ওরফে সোহাগ, তারিকুল ইসলাম ওরফে টগর, আওলাদ হোসেন, রবিন, আবুল হাসান মিঠু ও মাকসুদ। এর মধ্যে সোহাগ ও আওলাদ ডাকাতি করার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।

তদন্ত-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গ্রেফতার সবাই সূত্রাপুর ও বংশালের স্থানীয় বাসিন্দা। মিঠু ও মাকসুদ ছাড়া চারজনই এজাহারনামীয় আসামি। গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতি করে নেওয়া প্রায় ৩ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। জানা গেছে, সোহাগ ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ও মিঠু বংশাল থানা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সূত্রাপুর থানার এসআই নাজমুল হোসাইন জানান, ডাকাতি করে পালিয়ে যাওয়ার একটি ভিডিও ফুটেজ উদ্ধার করা হয়েছে। সেই ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আসামিদের শনাক্ত করা হয়েছে। প্রথমে গ্রেফতার করা হয় সোহাগকে। ২১ ফেব্রুয়ারি তিনি আদালতে জবানবন্দি দেন। তার জবানবন্দিতে উঠে আসে বংশাল থানা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা মিঠুসহ অন্যদের নাম। গ্রেফতার করা হয় আরও পাঁচজনকে। এর মধ্যে আওলাদও আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। বাকি চারজন জেল হাজতে রয়েছেন।

তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, আসামি সোহাগ ও আওলাদ তাদের জবানবন্দিতে ডাকাতির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের নাম প্রকাশ করেছেন। এরা হলেন আলাউদ্দিন, শফিকুল ও মাহবুব সুমন। এর মধ্যে আলাউদ্দিন একজন হুন্ডি ব্যবসায়ী, বাড়ি কুমিল্লায়। তার কাছেই ডাকাতির বেশির ভাগ টাকা আছে। পুলিশ বলছে, শফিকুল ও মাহবুব সুমন স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের কর্মী। ভিডিও ফুটেজে ডাকাতিতে ৮-১০ জনের সম্পৃক্ততার ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া গেছে। জড়িত অন্যদের ধরতে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছেন এসআই নাজমুল হোসাইন। এর আগে ২০ ফেব্রুয়ারি বিধান চন্দ্র দত্ত নামে এক ব্যবসায়ী ৩৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা ডাকাতি হয়েছে উল্লেখ করে সূত্রাপুর থানায় একটি মামলা করেন (নম্বর-১২)। এতে সাতজনের নাম উল্লেখ করা হয়। মামলায় উল্লেখ করা হয়, কুমিল্লা থেকে সোনা বিক্রি করতে ঢাকায় আসেন বিধান চন্দ্র দত্ত ও তার বন্ধু বিধু মিত্র। ১৯ ফেব্রুয়ারি পুরান ঢাকার তাঁতিবাজারে সোনা বিক্রির পর টাকা নিয়ে রিকশাযোগে রাজধানী মার্কেটে যাচ্ছিলেন। বেলা সোয়া ১২টার দিকে সূত্রাপুরের কুঞ্জবাবু লেনে গেলে ১৩-১৪ জন রিকশার গতি রোধ করেন। পরে তাদের রিকশা থেকে নামিয়ে পাশের কাজী আবদুর রউফ রোডের ভাঙাবাড়ির গলির ভিতর নিয়ে এলোপাতাড়ি চড়-থাপড় ও কিলঘুষি মারতে থাকে ডাকাতরা। একপর্যায়ে আগ্নেয়াস্ত্রের ভয় দেখিয়ে দুজনের কাছ থেকে সোনা বিক্রির ৩৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় দুর্বৃত্তরা। পরে বিধান চন্দ্র দত্ত এ ঘটনায় সূত্রাপুর থানায় ডাকাতির মামলা করেন।

সর্বশেষ খবর