বুধবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

হরেক রকম প্রজাপতির মেলা

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

হরেক রকম প্রজাপতির মেলা

সমুদ্রসৈকত, নদী-সাগরের মিলন মোহনা নয়নাভিরাম সৌন্দর্যের এক দর্শনীয় স্থান। তার পাশেই কর্ণফুলী ও বঙ্গোপসাগরের কূল ঘেঁষে বাহারি সব রঙের প্রজাপতি নিয়ে গড়ে উঠেছে বাংলাদেশের প্রথম প্রজাপতি উদ্যান ও প্রজাপতি পার্ক ‘বাটারফ্লাই পার্ক বাংলাদেশ’। দেশের একমাত্র এ প্রজাপতি পার্কে রয়েছে ট্রপিক্যাল গার্ডেন, বাটারফ্লাই জোন, বাটারফ্লাই মিউজিয়াম, কৃত্রিম লেক-ঝরনা, ফিশ ফিডিং জোন ও বাটারফ্লাই ফিডিং জোন। এ পার্কে দর্শনার্থীদের প্রজাপতি, তাদের জীবনচক্র, বৈশিষ্ট্য ও পরিবেশ রক্ষায় প্রজাপতির ভূমিকা ইত্যাদি বিষয় মুগ্ধ করে। প্রজাপতির জীবনকাল সম্পর্কে পার্কের অন্যতম উদ্যোক্তা ও ইন্ট্রাকো গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইরাদ আলী বলেন, ব্যবসায়িক চিন্তাভাবনা থেকে নয়, মূলত জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং এ বিষয়ে মানুষকে ধারণা দিতে এ পার্কটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। দেশ-বিদেশের অনেক গবেষক এসে গবেষণা করেন এ পার্কে। আমরা চাই এ পার্কের মাধ্যমে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশকে তুলে ধরতে। বাটারফ্লাই পার্কের সামনে দাঁড়ালেই মনে হবে ভিতরে প্রজাপতির রঙিন দুনিয়া অপেক্ষা করছে। ভিতরে ঝোপঝাড়ে ঘুরে বেড়ায় হরেক রকমের প্রজাপতি। পার্ক ঘুরে দেখা যেতে পারে কমন রেড ফরেস্টার, ক্লিপার, গ্রে কাউন্ট, টনি কোস্টার, ব্লু-পানসি, কমন ল্যাসকার, কমন নওয়াব, রাসটিক, কমন সিলভার লাইন, শট সিলভার লাইন নানা নামে সব প্রজাপতি। পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত ও চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দরের পাশ ঘেঁষে ছয় একর জমির ওপর গড়ে তোলা হয়েছে ওই ‘বাটারফ্লাই পার্ক’। ২০০৯ সালে পার্কটি প্রতিষ্ঠিত হয়। তবে পার্কটির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু ২০১২ সালে। পার্কের ভিতরে রয়েছে জীবন্ত প্রজাপতির জোন, ফার্ন ল্যান্ড, ওয়াটার প্লান্ট,  মিউজিয়াম, রিয়ারিং রুম ও  অডিও ভিজ্যুয়াল রুম । এ পার্কে ৩২০ প্রজাতির প্রজাপতি আছে। এ ছাড়াও পার্কটিতে আছে কৃত্রিম ঝরনা, লেক ও বাচ্চাদের খেলাধুলার জায়গা যেখানে দর্শনার্থীরা একটি মনোরম পরিবেশে সপরিবারে সময় কাটাতে পারেন। পার্কটিতে প্রজাপতি সংরক্ষণ ও প্রজননের জন্য বনজ ও ঔষধি গাছের ১৫০ প্রজাতির ২০০০ ধরনের গাছ আছে। যার মাধ্যমে সৃষ্টি করা হয়েছে নয়নাভিরাম সবুজ অরণ্য। প্রতি বছর কয়েক হাজার প্রজাপতি সম্পূর্ণ প্রাকৃতিকভাবে পার্কে প্রজননের মাধ্যমে বিভিন্ন বনাঞ্চলে অবমুক্ত করা হয়। এ কার্যক্রম সুষ্ঠু সুন্দরভাবে সম্পাদনের জন্য পার্কে রয়েছে অত্যন্ত দক্ষ জীববিজ্ঞান বিশেষজ্ঞ ও কিউরেটর। যারা অবিরাম পরিশ্রম করে প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে প্রজাপতি প্রজননের মতো অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়ে সাফল্যের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর