বুধবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

রাবেয়া-রোকাইয়ার জোড়া মাথা পৃথক করা হচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

জোড়া মাথার যমজ শিশু রাবেয়া-রোকাইয়াকে আলাদা করতে অস্ত্রোপচার করা হবে। এজন্য গতকাল সকালে তাদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে অস্ত্রোপচারের প্রাথমিক ধাপ সম্পন্ন হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে হাঙ্গেরি থেকে আসা দুজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে অস্ত্রোপচারের প্রাথমিক ধাপ সম্পন্ন হয়। সকালে শিশু দুটির এনজিওগ্রাম শেষে ঢামেকের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে চিকিৎসকরা জানান, তাদের মস্তিষ্কের রক্ত সঞ্চালনের বিষয়টি পরীক্ষা করা হয়েছে। এটি জটিল প্রক্রিয়া। জোড়া মাথা আলাদা করার পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হতে বছরখানেক লাগবে। বিদেশি পরামর্শকসহ ২০ সদস্যের একটি মেডিকেল টিম শিশু দুটির পরীক্ষা ও অস্ত্রোপচারের কাজ করবে। এ দলের সদস্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, শিশু দুটির অস্ত্রোপচার করা জটিল হবে। প্রথমে তাদের মাথার রক্তনালি আলাদা করা হবে। এরপর মাথা ধীরে ধীরে আলাদা করা হবে। সংবাদ সম্মেলনে বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়কারী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, এনজিওগ্রাম করার মাধ্যমে আমরা প্রথম ধাপ অতিক্রম করলাম। শিশু দুটির চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদি। আমাদের অনেক দূর যেতে হবে। তাদের মস্তিষ্কের রক্ত চলাচল আলাদা করতে হবে। না হলে কোনো দিনই তাদের দুজনকে আলাদা করা যাবে না। আজ আরও কিছু পরীক্ষা করা হবে।

এরপর বলা যাবে, শিশুদের কী অবস্থা। রাবেয়া-রোকাইয়ার অস্ত্রোপচারের জন্য হাঙ্গেরি থেকে এসেছেন অ্যান্ডোভাসকুলার সার্জন স্টিফেন হুডোক। তিনি বলেন, এটা অনেক কঠিন একটা ডায়াগনোসিস। আজ আমরা চিকিৎসার দ্বিতীয় ধাপে যাব। বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম বলেন, কোনো না কোনো সময় তাদের সেপারেশনে যেতেই হবে। ওদের মা-বাবা এটা চাইছেন। এখন সবাইকে ধৈর্য ধরতে হবে। ১৮ মাস বয়সী রাবেয়া ও রোকাইয়ার জন্ম ২০১৬ সালের ১৬ জুলাই। তারা পাবনার চাটমোহর উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের আটলঙ্কা গ্রামের শিক্ষক দম্পতি রফিকুল ইসলাম ও তাসলিমা খাতুনের সন্তান। রাবেয়া ও রোকাইয়ার শরীরের পুরো অংশই আলাদা, শুধু মাথা জোড়া লাগানো। গত বছরের ২০ নভেম্বর ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয় তাদের।

সর্বশেষ খবর