রবিবার, ৪ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা
চাঁদা না দেওয়ার জের

রংপুর মেডিকেলে নির্মাণকাজ বন্ধ করে দিয়েছে ছাত্রলীগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

চাঁদা না দেওয়ায় রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালের ডেন্টাল ইউনিটের নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের হুমকি-ধমকিতে নয় দিন কাজ বন্ধ রাখার পর বৃহস্পতিবার কাজ শুরু করা হয়। গতকাল দুপুরে মহানগর ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মী গিয়ে কাজ বন্ধ করে দেওয়ার পর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ডটি ভেঙে পুড়িয়ে দেন। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে রমেক হাসপাতালের দোতলা ডেন্টাল ইউনিটের ওপর বর্ধিত চার তলার নির্মাণকাজ চলছে। বগুড়ার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স কাজী এরফানুর রহমান নির্মাণকাজ করছে। নির্মাণকাজের তদারকি করছে রংপুর গণপূর্ত বিভাগ। বর্ধিত চার তলার মধ্যে তিন তলা পর্যন্ত নির্মিত হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক কাজী উজ্জ্বল অভিযোগ করেন, ‘মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের নেতারা ১৯ ফেব্রুয়ারি এসে চাঁদা দাবি করেন। আমি ঠিকাদার ও প্রকল্প ইনচার্জের সঙ্গে কথা বলতে বলি। তারা কথা বলেছেন কিনা জানি না। ২০ ফেব্রুয়ারি এসে তারা কাজ বন্ধ করে দেন। গত বৃহস্পতিবার ফের কাজ শুরু করা হয়। আমি ছুটিতে বাড়িতে এসেছি।’ গতকাল দুপুরে প্রকল্পের প্রকৌশলী ফোনে জানান, ‘ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এসে নাকি কাজ বন্ধ করে দিয়ে সাইনবোর্ডটি পুড়িয়ে দিয়েছেন।’ প্রকল্প প্রকৌশলী শাহ মোহাম্মদ সুমন অভিযোগ করেন, বেলা ১২টার দিকে একদল যুবক এসে নিজেদের রংপুর মহানগর ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী দাবি করে কাজ বন্ধ করতে বলেন। পরে তারা প্রকল্পের সাইনবোর্ডটি ভেঙে পুড়িয়ে দেন। ঠিকাদার তাদের সঙ্গে কথা না বলা পর্যন্ত কাজ করতে নিষেধ করেন। নিষেধ অমান্য করলে পরিস্থিতি আরও খারাপ করবেন বলেও তারা হুমকি দিয়ে যান। এর পর থেকে কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। বিষয়টি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক, অধ্যক্ষ, ডেন্টিস্ট্রি বিভাগের প্রধান এবং গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীকে তত্ক্ষণাৎ অবহিত করা হয়েছে বলে জানান তিনি। মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক গৌরাঙ্গ চন্দ্র সাহা বলেন, ‘চাঁদাবাজির বিষয়টি ভিত্তিহীন। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নন-গ্রেড রড ও দ্বিতীয় শ্রেণির ইট দিয়ে কাজ করছে। প্রকল্প এলাকায় স্টিমিটেশন বোর্ড লাগানো হয়নি। এ কারণে আমরা কাজ বন্ধ রাখতে বলেছি।’ রংপুর মহানগর ছাত্রলীগ সভাপতি সাফিউর রহমান স্বাধীন বলেন, ‘মেডিকেল কলেজের নির্মাণকাজে মহানগর ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা হস্তক্ষেপ করেছে বলে আমার বিশ্বাস হচ্ছে না। হয়তো মহানগর ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে কেউ ফায়দা লুটতে চাইছে। বিষয়টি খতিয়ে না দেখার আগে কিছু বলা যাবে না।’ রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. অজয় কুমার রায় বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। এ ব্যাপারে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সর্বশেষ খবর