বুধবার, ৭ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা

নাফ নদের ওপারেও মিয়ানমার সেনা

পাহাড়ের ওপর চলছে নতুন বাঙ্কার খনন

ফারুক তাহের, চট্টগ্রাম ও আয়ুবুল ইসলাম, কক্সবাজার

নাফ নদের ওপারেও মিয়ানমার সেনা

তুমব্রু সীমান্তের পর এবার ওপারের ঢংখালী এবং নাফ নদের ওপারে বিভিন্ন এলাকাজুড়ে সেনা সমাবেশ ও টহল বৃদ্ধি করেছে মিয়ানমার। সোমবার বেলা ৩টার দিকে সেনা, বিজিপি ও নাটাল বাহিনীর তিনটি গ্রুপকে দেখা গেছে পাহাড়ের ওপর অবস্থান করতে। এ সময় বাইনোকুলার দিয়ে তাদের এপারের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতেও দেখা গেছে। এ ছাড়া মিয়ানমার সেনাদের রাখাইন রাজ্যে নতুন করে পাহাড়ের ওপর বাঙ্কার খনন করতে দেখা গেছে বলে জানিয়েছেন সীমান্তবর্তী স্থানীয় লোকজন। তুমব্রু সীমান্তের শূন্যরেখায় রাতে সেনা, দিনে বিজিপি ও নাটাল বাহিনী টহল অব্যাহত রেখেছে। এর মধ্যেও সোমবার থেকে গতকাল পর্যন্ত দুই দিনে ৩৪ পরিবারের ৯৫ জন রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশু এপারে অনুপ্রবেশ করেছে। তারা নৌকাযোগে মংডুর ঢংখালী এলাকা থেকে শাহপরীর দ্বীপ হয়ে অনুপ্রবেশ করেছে বলে জানা গেছে। এতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সীমান্তের সার্বিক পরিস্থিতি কিছুটা অবনতি হয়েছে বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা।

বিজিবি ৩৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মঞ্জুরুল হাসান খান বলেন, সেনা টহল তাদের নিয়মিত রুটিন ওয়ার্ক। বাঙ্কার খননের বিষয়ে তিনি বলেন, সেটি মিয়ানমার নিজেদের নিরাপত্তার জন্য করতেই পারে। এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তবে সীমান্ত পরিস্থিতি আগের তুলনায় ভালো আছে। এদিকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবরাং হারিয়াখালী অস্থায়ী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মরত জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধি টেকনাফ উপজেলা মত্স্য কর্মকর্তা দেলোয়ার হাসান জানান, দুই দিনে টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের হারিয়াখালী সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে ৯৫ জন রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে। তাদের যথারীতি প্রাথমিক আশ্রয়শিবিরে পাঠানো হয়েছে।

ঘুমধুম ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ জানান, সীমান্তের শূন্যরেখার ওপারে সব সময় বিজিপি, সেনা ও নাটাল বাহিনীসহ রাখাইন যুবকরা ঘোরাঘুরি করে। রাতের বেলায় তারা মদ্যপ অবস্থায় সীমান্তের শূন্যরেখায় অবস্থিত রোহিঙ্গা ঝুপড়িতে নানা জিনিস নিক্ষেপ করে। তাদের ঘন ঘন উপস্থিতি ও টহলের কারণে এপারের গ্রামগুলোতে বসবাসরত লোকজনকে আতঙ্কে থাকতে হয়। এদিকে মংডুর পুঁইমালীপাড়া থেকে গতকাল আসা রোহিঙ্গা হালিমা খাতুন ও বাদশা মিয়া জানান, তারা মংডু থেকে বাংলাদেশে আসার জন্য রওনা দিলে দেখতে পান, পথে মিয়ানমারের অনেক সেনাসদস্য ট্রাকে করে টহল দিচ্ছে। তাদের দলে অন্তত ৫০ জন রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশু ছিল। সেনাদের দেখে দলটি ভয়ে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পরে ১০ জনের মতো তারা একত্র হয়ে ঢংখালী সীমান্তে এসে নৌকায় করে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে। অন্যরা কে কোথায় রয়েছে তারা কিছুই জানে না। এদিকে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল হাসান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘নাফ নদের ওপারে মিয়ানমার সেনারা টহল দিচ্ছে বলে আমরা সংবাদকর্মীদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। এটি ঊর্ধ্বতন মহলে জানানো হয়েছে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর