বুধবার, ৭ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা
ব্র্যাকের গবেষণা প্রতিবেদন

গণপরিবহনে ৯৪ শতাংশ নারী যৌন হয়রানির শিকার

নিজস্ব প্রতিবেদক

গণপরিবহনে যাতায়াতের সময় ৯৪ শতাংশ নারী কোনো না কোনো সময় মৌখিক, শারীরিক ও অন্যান্য যৌন হয়রানির শিকার হয়। ৪১ থেকে ৬০ বছর বয়সী পুরুষের দ্বারাই নারীরা বেশি যৌন নির্যাতনের শিকার হয়। এ হার ৬৬ শতাংশ। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘নারীর জন্য যৌন হয়রানি ও দুর্ঘটনামুক্ত সড়ক’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন অনুষ্ঠানে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। ব্র্যাক এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরেন ব্র্যাকের জেন্ডার, জাস্টিস অ্যান্ড ডাইভারসিটি কর্মসূচির সমন্বয়কারী হাসনে আরা বেগম ও ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট কবিতা চৌধুরী।

গত বছরের এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত গবেষণা করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে বলে জানায় সংস্থাটি। এতে সংখ্যাগত ও গুণগত ভিত্তিতে ৪১৫ জন নারী অংশগ্রহণ করেন। নিম্ন ও নিম্নমধ্য আয়ের পরিবারের নারীদের সড়ক ও গণপরিবহন ব্যবহারের অভিজ্ঞতার এই গবেষণা পরিচালনা করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, ৩৫ শতাংশ নারী জানিয়েছেন তারা ১৯ থেকে ২৫ বছর বয়সী পুরুষের দ্বারা যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন। ৫৯ শতাংশ জানিয়েছেন, তারা ২৬ থেকে ৪০ বছর বয়সী পুরুষের দ্বারা উত্ত্যক্তের শিকার হয়েছেন। শারীরিক যৌন হয়রানির মধ্যে রয়েছে ইচ্ছাকৃত স্পর্শ করা, চিমটি কাটা, কাছে ঘেঁষে দাঁড়ানো, আস্তে ধাক্কা দেওয়া, নারীদের চুল স্পর্শ করা, কাঁধে হাত রাখা, হাত, বুক বা শরীরের অন্যান্য অংশ দিয়ে নারীর শরীর স্পর্শ করা ইত্যাদি। এসব ঘটনায় ৮১ শতাংশ নারী চুপ থাকেন। ৭৯ শতাংশ আক্রান্ত হওয়ার স্থান থেকে সরে আসেন। ছেলে-মেয়েদের আলাদা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষাদান পদ্ধতি যৌন হয়রানির অন্যতম কারণ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে প্রতিবেদনে। দেশে আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগ না থাকা, বাসে অতিরিক্ত ভিড়, যানবাহনে পর্যাপ্ত আলো না থাকা, তদারকির অভাবে নারীদের ওপর যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটছে বলেও জানানো হয়। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, নারীদের শিক্ষাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আগের চেয়ে অগ্রগতি লক্ষ্য করা গেলেও কর্মক্ষেত্রে এখনো তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তাই গবেষণা সুপারিশের ভিত্তিতে তারা এ ব্যাপারে জনসচেতনতার পাশাপাশি আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগের ওপর জোর দাবি জানান। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৈয়দ সাদ আন্দালিব, ব্র্যাকের সড়ক নিরাপত্তা কর্মসূচির ডিরেক্টর আহমেদ নাজমুল হোসেইন প্রমুখ এতে বক্তব্য দেন। ব্র্যাকের জেন্ডার জাস্টিস অ্যান্ড ডাইভারসিটি কর্মসূচির সমন্বয়কারী নিশাত সুলতানা অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।

সর্বশেষ খবর