বুধবার, ৭ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা

আপটায় এবার সভাপতি বাংলাদেশ

রুকনুজ্জামান অঞ্জন

এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বাণিজ্য চুক্তি—আপটা’য় এবার সভাপতির দায়িত্ব পালন করবে বাংলাদেশ। থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে ৮ ও ৯ মার্চ এবারের বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে সদস্য দেশগুলোর শুল্ক ছাড় কার্যকর করার বিষয়ে সময় নির্ধারণ এবং প্রথমবারের মতো চারটি ওয়ার্কিং গ্রুপের আলোচনা শুরু হবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (এফটিএ) শফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল আপটা’র বৈঠকে অংশ নেবে।

বৈঠক প্রসঙ্গে শফিকুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আপটার সদস্য দেশগুলো শুল্ক ছাড়ের বিষয়ে পণ্য সংখ্যা ঘোষণা করলেও শ্রীলঙ্কা এবং দক্ষিণ কোরিয়া অভ্যন্তরীণ প্রস্তুতি নিতে না পারায় এখনো তা কার্যকর হয়নি। এরই মধ্যে দুই দফা সময় পেছানো হয়েছে। সে কারণে এবারের আলোচনায় শুল্ক ছাড় কার্যকর করার বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া হবে। ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে ব্যাংককে অনুষ্ঠিত আপটার চতুর্থ রাউন্ডের আলোচনায় সিদ্ধান্ত হয়েছিল, সদস্য দেশগুলো ঘোষিত পণ্যে ওই বছরের (২০১৭) জুলাই থেকে শুল্ক ছাড় কার্যকর করবে। কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়া ও শ্রীলঙ্কার প্রস্তুতির অভাবে সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়নি। এরপর চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে শুল্ক ছাড় কার্যকরের সিদ্ধান্ত হলেও ওই দুই সদস্য দেশের প্রস্তুতির অভাবে সেটিও কার্যকর হয়নি। এ কারণে এবারের সভায় শুল্ক ছাড় সুবিধা কার্যকরের দিনক্ষণ নির্ধারণ হবে বলে জানায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। জানা গেছে, আপটার চতুর্থ রাউন্ড নেগোসিয়েশনের আওতায় যে সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেটি কার্যকর হলে সদস্য দেশগুলোর মধ্যে শুল্ক সুবিধা প্রাপ্ত পণ্য সংখ্যা ৪ হাজার ৬৪৮ থেকে বেড়ে ১০ হাজার ৬৭৭টি হবে। ওই নেগোসিয়েশনের আওতায় বাংলাদেশ ৫৯৮টি পণ্যে ১০ থেকে ৭০ শতাংশ এবং এলডিসিভুক্ত দেশের জন্য আরও ৪টি পণ্যে ২০ থেকে ৫০ শতাংশ ছাড় দেবে। চীন ২ হাজার ১৯১টি পণ্যে ৫ থেকে ১০০ শতাংশ এবং এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর জন্য আরও ১৮১টি পণ্যে শূন্য থেকে সাড়ে ১২ শতাংশ শুল্ক সুবিধা দেবে। ভারত ৩ হাজার ৩৩৪টি পণ্যে ৫ থেকে ১০০ শতাংশ এবং এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর জন্য ১৪ থেকে ১০০ শতাংশ ছাড় দেবে। শুল্ক ছাড়ের বিষয়ে দক্ষিণ কোরিয়া ২ হাজার ৭৯৬টি পণ্যে ১০ থেকে ৫০ শতাংশ এবং এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর জন্য ৯৬১টি পণ্যে ২০ থেকে ১০০ শতাংশ, শ্রীলঙ্কা ৫৮৫টি পণ্যে ৫ থেকে ৬২ দশমিক ৫ শতাংশ এবং এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর জন্য ৭৫টি পণ্যে ১০ থেকে ৫০ শতাংশ ছাড় দেবে। লাওস বাণিজ্য সুবিধা দেবে ৯৯৯টি পণ্যে ২০ থেকে ৩৭ দশমিক শতাংশ এবং মঙ্গোলিয়া ৩৩৩টি পণ্যে ১০ থেকে ৩০ শতাংশ শুল্ক ছাড় দেবে। আপটা সদস্য হিসেবে মঙ্গোলিয়ার অন্তর্ভুক্তি এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে। ফলে বাংলাদেশ সর্বাধিক বাণিজ্য সুবিধা ভোগ করার সুযোগ পাবে।  ১৯৭৫ সালে স্বাক্ষরিত এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বাণিজ্য চুক্তি (আপটা) আগে ব্যাংকক চুক্তি নামে পরিচিত ছিল। পরে ২০০৫ সালে চীন যুক্ত হওয়ার পর এর নাম হয় আপটা। বর্তমানে বাংলাদেশ, ভারত, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, শ্রীলঙ্কা ও লাওসের সদস্য। গত বছর মঙ্গোলিয়াকেও সদস্য করার সিদ্ধান্ত হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর