শুক্রবার, ৯ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা
একনেকে ৬ প্রকল্প অনুমোদন

অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ৮ হাজার ফ্ল্যাট নির্মাণের উদ্যোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে। মুক্তিযুদ্ধের প্রধান লক্ষ্য ছিল স্বাধীন রাষ্ট্রে জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণ করা। বাসস্থান মানুষের একটি অন্যতম মৌলিক চাহিদা। সরকারের বিভিন্ন আবাসন প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের নিম্ন ও মধ্যম আয়ের লোকদের আবাসন সুবিধা দেওয়া হয়। কিন্তু স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধারা এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত থেকে যান। অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধারা সবাই বয়োজ্যেষ্ঠ এবং উপার্জনক্ষম না হওয়ায় তাদের পক্ষে কিস্তি বা এককালীন অর্থ পরিশোধের মাধ্যমে ফ্ল্যাট কেনা সম্ভব নয়। এ লক্ষ্যে প্রত্যেক জেলা-উপজেলায় তৈরি হবে বহুতল আবাসিক ভবন। এ লক্ষ্যে পিছিয়ে পড়া অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বহুতল আবাসিক ভবন করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ জন্য প্রতি জেলা/উপজেলায় বহুতল ভবন নির্মাণ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে গতকাল জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় (একনেকে)। শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় এই প্রকল্পটিসহ ৭ হাজার ৪৬৬ কোটি টাকার ৬টি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, চলতি বছর থেকে ২০২০ সালের জুনের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি)-এর এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ২ হাজার ২৭৩ কোটি ২১ লাখ টাকা। নির্মাণ করা হবে ৮ হাজার ফ্ল্যাট। দুই ইউনিট বিশিষ্ট ২৬৪টি এবং চার ইউনিট বিশিষ্ট ২৬৮টি অর্থাৎ মোট ৫৩২টি ভবন নির্মাণ করা হবে। প্রতিটি ইউনিট বা ফ্ল্যাটের আয়তন হবে ৯৮২ বর্গফুট। এতে ৩টি বেডরুম, ১টি ড্রইং কাম ডাইনিং রুম, ২টি বাথরুমসহ বারান্দা থাকবে। তবে যেসব জেলা বা উপজেলায় ৩ বা ততোধিক ভবনের প্রয়োজন হবে সেখানে আবাসন কমপ্লেক্স নির্মাণ করে অন্যান্য সুবিধাদি যেমন- অভ্যন্তরীণ সড়ক, লাইটিং ও ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ অন্যান্য সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। মূল খাসজমির ওপর ভবনগুলো নির্মাণ করা হবে। তবে যেসব উপজেলায় খাসজমি পাওয়া যাবে না সেখানে জমি অধিগ্রহণ করা হবে। পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের ফ্ল্যাট দেওয়ার জন্য সুস্পষ্ট নীতিমালা করার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সংশ্লিষ্ট মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুর পর সন্তানদের মধ্যে ফ্ল্যাটের উত্তরাধিকার নির্ধারণে এ নীতিমালা অনুসরণ করা হবে।

একনেকে অনুমোদিত অন্য প্রকল্পগুলো হচ্ছে— ৬৬২ কোটি টাকা ব্যয়ে জলবায়ু সহিষ্ণু অবকাঠামো প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ প্রকল্প; ৩০১ কোটি টাকা ব্যয়ে সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন কর্মসূচি (সিভিসি) প্রকল্প; ৩ হাজার ৪৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে গুরুত্বপূর্ণ নগর অবকাঠামো উন্নয়ন (দ্বিতীয় পর্যায়) প্রকল্প; ৬২৬ কোটি টাকা ব্যয়ে সিলেট বিমানবন্দর বাইপাস ইন্টারসেকশন-লালবাগ-সালুটিকর-কোম্পানীগঞ্জ-ভোলাগঞ্জ সড়ককে জাতীয় মহাসড়ককে উন্নীতকরণ (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প এবং ১৩৮ কোটি টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সম্প্রসারণের লক্ষ্যে আনুষঙ্গিক সুবিধাসহ নতুন ১২ তলা ভবন নির্মাণ প্রকল্প।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর