শুক্রবার, ১৬ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা

গাজীপুর-খুলনা সিটির ভোটের কার্যপত্র প্রস্তুত

মের প্রথম সপ্তাহে ভোট করার চিন্তা

গোলাম রাব্বানী

গাজীপুর-খুলনা সিটির ভোটের কার্যপত্র প্রস্তুত

ঈদুল ফিতরের আগে গাজীপুর ও খুলনা সিটি করপোরেশনে ভোট করার পরিকল্পনা নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ জন্য ভোটের কার্যপত্র প্রস্তুত করা হয়েছে। ১৯ মার্চ নির্বাচন কমিশনের আনুষ্ঠানিক সভায় এ দুই সিটির ভোট নিয়ে আলোচনা হবে। তবে বৈঠকে নির্বাচন কমিশনররা একমত হলে ওই দিনই দুই সিটির ভোটের তফসিল ঘোষণা হতে পারে। ৮ মার্চ থেকে গাজীপুর সিটিতে ভোট করার দিন গণনা শুরু হয়েছে। তাই মের প্রথম সপ্তাহে ভোট করতে এ দুই সিটিতে কোনো সমস্যা নেই। এ ছাড়া ভোটের বিষয়ে মতামত চেয়ে গত সপ্তাহে স্থানীয় সরকার বিভাগকে চিঠিও দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তবে সরকার এ দুই সিটিসহ পাঁচ সিটিতে ভোট করার বিষয়ে কোনো আপত্তি জানায়নি। সূত্র জানিয়েছে, মের প্রথম সপ্তাহে ৩-৬ মে ভোট গ্রহণের প্রাথমিক  তারিখ চিন্তা করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ১৯ মার্চ ভোটের তফসিল ঘোষণা হলে ভোট করার জন্য ৪৫ থেকে ৪৮ দিন হাতে থাকবে নির্বাচন কমিশনের। এ ছাড়া এপ্রিলের মধ্যে এসব ভোটের ব্যালট পেপারের কাগজ সংগ্রহের কাজও শুরু করেছে কমিশন। ভোটার তালিকার সিটি প্রস্তুত করতে চিঠি দেওয়া হয়েছে ভোটের তালিকা প্রকল্পে। সেই সঙ্গে সরকারও ভোট করার জন্য গ্রিন সিগন্যাল দিয়েছে কমিশনকে।

ইসির কর্মকর্তারা বলেছেন, আগামী ১৭-১৮ মে রমজান শুরু হতে পারে। এ জন্য রমজানের আগেই ভোট গ্রহণ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে ভোট গ্রহণের জন্য নির্বাচন কমিশন ৪৫ দিন হাতে রেখে তফসিল ঘোষণা করবে। প্রথমত দুই সিটিতে ভোটের কার্যপত্র তৈরি করা হয়েছে। ১৯ মার্চের কমিশন বৈঠকে তা উপস্থাপন করা হবে। কমিশন অনুমোদন করলে ওই দিন তফসিলও ঘোষণা হতে পারে। তবে কমিশনের বৈঠকের ভোট গ্রহণের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে বলে জানান কর্মকর্তারা। ইসির কর্মকর্তারা বলেছেন, গতকাল ৮ মার্চ থেকে গাজীপুর সিটির নির্বাচনের দিন গণনা শুরু হয়েছে। আর ৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। খুলনা সিটির নির্বাচনের দিন গণনা শুরু হবে ৩০ মার্চ থেকে। আর ২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। তাই এ দুই নির্বাচন আগামী ঈদের আগে মে মাসের প্রথম দিকে করতে চায় ইসি। এ ছাড়া এককভাবে শুধু গাজীপুর সিটিতেও ভোট করতে পারে ইসি। সেই সঙ্গে রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের মেয়াদ এ বছরই শেষ হচ্ছে। সিলেটের ৮ অক্টোবর, রাজশাহীর ৫ অক্টোবর ও বরিশালের ২৩ অক্টোবর মেয়াদ ফুরাচ্ছে। ২০১৩ সালের ১৫ জুন একসঙ্গে চারটিতে এবং ৭ জুলাই গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন হয়েছিল। এদিকে সিটি করেপারেশনের ভোটের বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, সংসদ নির্বাচনের আগে চলতি বছর জুলাইয়ের মধ্যে গাজীপুর, খুলনা, রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট সিটি করপোরেশনে নির্বাচন করা হবে। তিনি বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আগামী জুলাইয়ের মধ্যে পাঁচ সিটি করপোরেশনে নির্বাচন করা হবে। এ নিয়ে কমিশনের সভায় সিদ্ধান্ত হবে। তবে প্রাথমিকভাবে জুলাইকেই টার্গেটে রাখা হয়েছে। ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দলভিত্তিক সিটি নির্বাচনে মে থেকে জুলাই মাসের মধ্যে ভোট গ্রহণের লক্ষ্য ধরে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা প্রয়োজনীয় কর্মপরিকল্পনা তৈরি করছেন। চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের পর ভোটার তালিকার সিডি তৈরি কাজ দ্রুতগতিতে চলছে। নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা জানান, জাতীয় নির্বাচনের আগে এসব নির্বাচন শেষ করার লক্ষ্যে কাজ চলছে। ইসির কর্মকর্তারা জানান, মে থেকে অক্টোবরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের অগ্রাধিকারমূলক কাজের চাপ থাকবে; নভেম্বর-ডিসেম্বরে তফসিলের আয়োজন চলবে। সে ক্ষেত্রে জুলাইয়ের মধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়া সাপেক্ষে সিটি নির্বাচন করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতির কাজ চলছে। ভোটের সময় চলে আসায়  ইতিমধ্যে ইসির পক্ষ থেকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে চিঠি পাঠিয়ে পরামর্শ চাওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, কোনো মামলা না থাকলে নির্বাচন করার দিকেই তিনি এগোতে বলবেন ইসিকে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, ‘আইনের বাধ্যবাধকতা আছে। আমরা যদি নির্বাচন না করি, তবে আইন পরিবর্তন করতে হবে। আমরা চিন্তা করছি বাধাটা কোথা থেকে আসতে পারে। আমরা ডিভিশনাল কমিশনারদের কাছে জানতে চেয়েছি, এসব সিটি করপোরেশনে কোনো মামলা-মোকদ্দমা আছে কি না। কেউ যদি মামলা-মোকদ্দমা করে থাকে, তবে তো আমরা নির্বাচন করতে পারব না।’ এর পরই তিনি বলেন, ‘আমরা এই রিপোর্টটি পেলে নির্বাচন কমিশনকে বলব তাদের সুবিধামতো সময়ে নির্বাচন করতে। তারা যদি পারে, একসঙ্গে পাঁচটাতেই করুক। তারা যদি পর্যায়ক্রমে করতে চায়, তাতেও আমাদের কোনো আপত্তি থাকবে না।’

সর্বশেষ খবর