মঙ্গলবার, ২০ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

ভয়াবহ পানি সংকট আসছে বিশ্বব্যাপী

প্রতিদিন ডেস্ক

জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা (ইউনেস্কো) জানিয়েছে, বিশ্বের ৩৬০ কোটি অর্থাৎ প্রায় অর্ধেক মানুষ বছরে অন্তত এক মাস পানি সংকটে ভোগেন। আর এভাবে চলতে থাকলে ২০৫০ সালের মধ্যে এই সংখ্যা ৫৭০ কোটি পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। সূত্র : অন লাইনের। গত সোমবার ব্রাজিলের রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় বিশ্ব পানি সম্মেলনে উপস্থাপিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তন ও ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার হুমকির মুখে থাকা কোটি কোটি মানুষের পানির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ‘সবুজনীতি’ গ্রহণ করতে হবে। পানির সরবরাহ ও মান উন্নয়নের জন্য সব দেশের সরকারকে আরও মনোযোগ দিতে হবে। ইউনেস্কোর মহাপরিচালক অদ্রি আজুলাই ব্রাসিলিয়া সম্মেলনে প্রতিবেদন উপস্থাপনায় বলেন, ‘আমরা যদি কিছুই না করি, তাহলে ২০৫০ সালের মধ্যে প্রায় ৫০০ কোটি মানুষ পানির তীব্র অভাবের মধ্যে পড়বে।’ তিনি আরও বলেন, প্রকৃতির ওপর ভিত্তি করে পানি ব্যবস্থাপনার উন্নয়নের জন্য এই প্রতিবেদনে কিছু সুপারিশ করা হয়েছে। পানি সংক্রান্ত দ্বন্দ্ব নিরসনে আমাদের সবাইকে এক হয়ে দায়িত্বশীলতার সঙ্গে এসব বাস্তবায়ন করতে হবে।

 প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বে পানির ব্যবহার ছয়টি কারণে গত শতাব্দীর চেয়ে বেড়েছে। আর এখনো প্রতি বছর এক শতাংশ হারে তা বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। অন্য কারণের মধ্যে রয়েছে জনসংখ্যা বৃদ্ধি, অর্থনৈতিক উন্নয়ন। অভিযোজনের ধরনে পরিবর্তনের কারণে পানির ব্যবহার বেশি বাড়ছে। প্রতিবেদনের প্রধান সম্পাদক রিচার্ড কনর বলেন, তথাকথিত মানুষের তৈরি অবকাঠমো যেমন সংরক্ষণাগার, সেচ খাল ও পরিশোধন কেন্দ্র এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য যথেষ্ট নয়। আর পলি ভরাট, পরিবেশগত উদ্বেগ ও প্রতিবন্ধকতার কারণে নতুন করে সংরক্ষণাগার তৈরি করা ক্রমেই কঠিন হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া বেশির ভাগ উন্নত দেশের স্বল্প ব্যয়ের ও সহজলভ্য স্থানগুলো এরই মধ্যে ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সবুজ সমাধানে এরই মধ্যে ব্যাপক সফলতা পাওয়া গেছে। উদাহরণস্বরূপ বলা হয়, নিউইয়র্কে ১৯৯০ সাল থেকে পানি সরবরাহের জন্য তিনটি বড় জলাধার সংরক্ষণ করা হয়ে থাকে। বন সংরক্ষণ কর্মসূচি ও কৃষকদের পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি ব্যবহারের জন্য আলাদা করে অর্থ প্রদান করা হয়। সবচেয়ে বড় অপরিশোধিত পানি সরবরাহ ব্যবস্থা স্থাপনের মাধ্যমে শহরটি এখন অনেক অর্থ সাশ্রয় করতে পারছে। সেখানকার সমুদ্রের পানি পরিশোধন ও উপকূল রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ শহর কর্তৃপক্ষ বছরে ৩০ কোটি ডলার সাশ্রয় করতে পারছে। একই ধরনের আরেকটি উদাহরণ হলো চীনের স্পনজি সিটির পানি উন্নয়ন প্রকল্প। ২০২০ সালের মধ্যে চীন দেশজুড়ে তিনটি পাইলট প্রকল্প শুরু করার পরিকল্পনা করছে। এর মাধ্যমে বৃষ্টির পানির ৭০ শতাংশ পরিশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। এজন্য মাটি ব্যবস্থাপনা, ধারণ ক্ষমতা বাড়ানো ও সংরক্ষণ করা, পানি বিশুদ্ধকরণ ও আশপাশের জলাধারে তা সংরক্ষণ করার পরিকল্পনা করছে তারা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর