মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট হিসেবে গত পরশু ইউ টিন চ পদত্যাগের পর দেশটির পরবর্তী প্রেসিডেন্ট কে হচ্ছেন তা নিয়ে আলোচনা চলছে। টিন চ এমন সময় পদত্যাগ করেছেন, যখন রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন বন্ধে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েছে দেশটির সরকার। টিন চ ছিলেন মিয়ানমারের ডি ফ্যাক্টো নেত্রী অং সান সু চির ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও বন্ধু। পদত্যাগের কারণ হিসেবে তিনি বিশ্রামের কথা উল্লেখ করেছেন। সংবিধান অনুসারে প্রেসিডেন্টের নির্বাহী ক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু কার্যত তিনি ছিলেন পুতুল প্রেসিডেন্ট। মূলত সু চি-ই নির্বাহী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতেন। দেশটির সংবাদমাধ্যম ইরাবতি’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সু চির জন্য এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ তার প্রতি বিশ্বস্ত ও অনুগত একজন প্রেসিডেন্টকে দায়িত্ব দেওয়া। ইরাবতি জানায়, প্রেসিডেন্ট হিসেবে সু চি ও তার দল এনএলডির পছন্দের ব্যক্তি হচ্ছেন নিম্নকক্ষের স্পিকার উইন মুইন্ট (৬৭)। তিনি সু চির প্রতি বিশ্বস্ত বলে পরিচিত। গত পরশু প্রেসিডেন্টের আচমকা পদত্যাগের দিনই স্পিকারের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেছেন তিনি। ফলে ধারণা করা হচ্ছে, তিনি সু চির ইঙ্গিতেই পদত্যাগ করেছেন এবং তিনিই হবেন মিয়ানমারের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট। আর এটা যদি সত্যি হয় তবে ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা পাওয়া মিয়ানমারের তিনি হবেন দশম প্রেসিডেন্ট। মিয়ানমারের সংবিধান অনুসারে, কোনো প্রেসিডেন্টের মৃত্যু হলে বা অবসরে গেলে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট ক্ষমতা পাবেন। এরপর নতুন ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এরপর তিনজন ভাইস প্রেসিডেন্টের মধ্য থেকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করা হবে। সেনাবাহিনীর সাবেক জেনারেল মুইন্ট সয়ে এখন প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট। ফলে তিনিই এখন ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আর পরবর্তী সাত দিনের মধ্যে দেশটির পার্লামেন্ট নতুন প্রেসিডেন্টকে নিয়োগ দেবে। পদত্যাগী প্রেসিডেন্টের সঙ্গে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সম্পর্ক ভালো ছিল। নতুন প্রেসিডেন্টের জন্যও সেনাবাহিনীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখাই হবে প্রধান চ্যালেঞ্জ। ইরাবতির মতে, সেনাবাহিনীর সঙ্গে উইন মুইন্টের সম্পর্কে কিছুটা ফারাক রয়েছে। রক্ষণশীল ও দলের প্রতি অনুগত বলে পরিচিত এই নেতা সরকার ও পার্লামেন্টের রক্ষায় সক্রিয় ছিলেন। দ্য ইরাবতি।