বুধবার, ১১ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা

মাঠে দুই সিটির প্রার্থীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

মাঠে দুই সিটির প্রার্থীরা

ভোটযুদ্ধের জন্য মাঠে নেমে পড়েছেন গাজীপুর ও খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। বিশেষ করে মেয়র পদে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীরা এরই মধ্যে দলীয় প্রতীক পেয়ে নেতা-কর্মীদের দ্বারস্থ হয়েছেন। ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হয়ে তারা নির্বাচনের কৌশল গ্রহণ করতে শুরু করেছেন। খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার আবদুল খালেক মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর আনন্দ মিছিল ও পাড়া-মহল্লায় মিষ্টি বিতরণ হয়েছে। দলীয় মনোনয়ন না পাওয়া নেতারাও তাকে স্বাগত জানিয়ে নির্বাচনের মাঠে সক্রিয় থাকার দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন। পাশাপাশি বিএনপির দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর নগর কমিটির সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে ঘিরেও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন তার সমর্থকরা। তিনি দিনভর নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পার্টি অফিসে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। নিজের নামে রাজনৈতিক মামলাগুলোর জামিনও নেন। আগামীকাল তিনি নির্বাচন কমিশনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করবেন।

এদিকে গাজীপুরে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী তরুণ নেতা অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম গতকাল দিনভর ব্যস্ত ছিলেন নির্বাচনী প্রচারণায়। নেতা-কর্মীসহ সর্বসাধারণের সঙ্গে কুশল বিনিময় করছেন তিনি। দুপুরে তিনি ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। গতকাল মনোনয়নপত্রও সংগ্রহ করেন আওয়ামী লীগের এই প্রার্থী। এ ছাড়া আরও অন্তত ১৫ জন মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৩৭০ জন এবং সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ৯৬ জন মনোনয়পত্র সংগ্রহ করেন। এর মধ্যে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৩৩ জন এবং মহিলা কাউন্সিলর পদে ১৪ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তবে মেয়র পদে কোনো প্রার্থী এখন পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দেননি। বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা হাসান উদ্দিন সরকার দুপুরের দিকে মেয়র এম এ মান্নানের বাসায় গিয়ে দেখা করেন। তার দোয়া নিয়ে নির্বাচনী প্রচারে মাঠে নামেন তিনি। এ সময় মান্নানের ছেলে রনিও ধানের শীষকে বিজয়ী করতে মাঠে কাজ শুরু করে দেন। হাসান উদ্দিন সরকার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বিএনপিতে সিটি নির্বাচন নিয়ে কোনো ধরনের গ্রুপিং নেই। অন্যদিকে মহানগর জামায়াতে ইসলামীর আমির অধ্যক্ষ মো. সানাউল্লাহ স্বতন্ত্র প্রার্থী হবেন বলে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, গাজীপুর মহানগরকে একটি সুন্দর পরিবেশের বাসযোগ্য নগরী করতে আমরা নির্বাচনে অংশ নেব।  গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার কার্যালয়ের সমন্বয়ক তারিক আহম্মেদ জানান, আগামী ১২ এপ্রিল মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেওয়ার শেষ দিন। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ১৫ ও ১৬ এপ্রিল, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২৩ এপ্রিল, প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে ২৪ এপ্রিল। ১৫ মে ভোট গ্রহণ। এদিকে গতকাল সকালে গাজীপুর সার্কিট হাউস সভাকক্ষে দুই দিনব্যাপী রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও সহায়ক কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ কর্মশালা শুরু হয়েছে। কর্মশালার উদ্বোধন করেন নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম। এ সময় তিনি বলেন, গ্রহণযোগ্য ও আইনানুগ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের জন্য আমরা সবকিছু করব যাতে করে একটি গ্রহণযোগ্য এবং আইনানুগ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ জন্য রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার এবং তাদের সহায়তাকারী কর্মকর্তাদের দুই দিনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন স্থানে নির্বাচন আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিভিন্ন ওয়ার্ডে মেয়র ও কাউন্সিলর পদের সম্ভাব্য প্রার্থীরা তাদের কর্মী-সমর্থক নিয়ে মিছিল-সমাবেশ করছেন। নির্বাচন আচরণবিধি অনুযায়ী প্রতীক বরাদ্দের পূর্বে নির্বাচন প্রচার-প্রচারণা চালানোর কোনো সুযোগ নেই। খুলনায় খুলনা নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার আবদুল খালেক দিনভর ব্যস্ত সময় কাটান। বাগেরহাট ও খুলনার নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন। তালুকদার আবদুল খালেকের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সুজন আহমেদ বলেন, এরই মধ্যে তিনি বাগেরহাট-৩ আসনের সংসদ সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি চেয়ে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। গত নির্বাচনে দলীয় কিছু লোকের কারণে তিনি পরাজিত হলেও এবার সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে তার পক্ষে কাজ করার অঙ্গীকার করেছেন। তবে মনোনয়ন দৌড়ে বাদ পড়া জেলা বিএনপির সভাপতি শফিকুল আলম মনার সমর্থকদের মধ্যে রয়েছে ক্ষোভ। তা সত্ত্বেও গতকাল মনার পক্ষে তারা মনোনয়নপত্র কিনেছেন। এ নিয়ে দলের মধ্যেই রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। সিটির বর্তমান মেয়র মনিরুজ্জামান মনিও নির্বাচন কমিশন থেকে মনোনয়নপত্র কিনেছেন বলে জানা গেছে।

সর্বশেষ খবর