মঙ্গলবার, ২৪ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা
কী থাকছে প্রার্থীদের ইশতেহারে

প্রতীক নিয়ে আজ মাঠে নামছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রতীক নিয়ে আজ মাঠে নামছেন

গাজীপুর ও খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ছিল গতকাল। আজ মঙ্গলবার প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পর আনুষ্ঠানিকভাবে মেয়র প্রার্থীরা দলীয় প্রতীক এবং কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীরা নির্দলীয় প্রতীক নিয়ে প্রচার-প্রচারণায় নামবেন।

গাজীপুর  সিটি নির্বাচনে চূড়ান্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন মেয়র পদে ৭, কাউন্সিলর পদে ২৫৬ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৮৪ জন। মেয়র প্রার্থীরা হলেন— আওয়ামী লীগের মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, বিএনপির মো. হাসান উদ্দিন সরকার, ইসলামী ঐক্যজোটের ফজলুর রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. নাসির উদ্দিন, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মো. জালাল উদ্দিন, বাংলদেশ কমিউনিস্ট পার্টির কাজী মো. রুহুল আমিন এবং স্বতন্ত্র ফরিদ আহমদ। খুলনা সিটিতে চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় মেয়র পদে রয়েছেন ৫ জন, ৩১টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৪৮ জন ও ১০টি সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর পদে ৩৮ জন প্রার্থী।  পাঁচ মেয়র প্রার্থী হলেন— আওয়ামী লীগের তালুকদার আবদুল খালেক, বিএনপির নজরুল ইসলাম মঞ্জু, জাতীয় পার্টির মুশফিকুর রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাওলানা মোজ্জাম্মিল হক ও সিপিবির মিজানুর রহমান বাবু।

গাজীপুরে ৩৬ জনের প্রার্থিতা প্রত্যাহার : গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে গতকাল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনে মেয়র পদে ২ জন, সংরক্ষিত  নারী প্রার্থী পদে ৩ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী পদে ৩১ জন তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন বলে জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা রকিব উদ্দিন মণ্ডল।

খুলনায় ৩৯ জনের প্রার্থিতা প্রত্যাহার : রিটার্নিং অফিসার ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো, ইউনুচ আলী জানান, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিনে খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৩৯ জন কাউন্সিলর প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন। এর মধ্যে ৩৪ জন সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও ৫ জন সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর। তবে বিভিন্ন ওয়ার্ডে এখনো স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বেশ কয়েকজন বিদ্রোহী প্রার্থী রয়ে গেছেন। মেয়র প্রার্থীর কেউ তাদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। খুলনা সিটি নির্বাচনের ৩১টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৪৮ জন ও ১০টি সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর পদে ৩৮ জন প্রার্থী চূড়ান্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়ে গেছেন।

জাসদ প্রার্থীর আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে সমর্থন, বিএনপি প্রার্থীকে সমর্থন জামায়াত প্রার্থীর : গাজীপুরে জাসদ মনোনীত মেয়র প্রার্থী রাশেদুল হাসান রানা গতকাল বিকালে মেয়র পদে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে ১৪ দল সমর্থিত আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মো. জাহাঙ্গীর আলমকে সমর্থন দেন। জামায়াতের জেলা আমির ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. ছানাউল্লাহ বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকারকে সমর্থন করে তার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন।

ভোট কেন্দ্রে সেনা মোতায়েনের দাবি হাসান সরকারের : গাজীপুরে প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি জানিয়েছেন বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার। গতকাল গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গীর তার বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ দাবি জানান। নির্বাচন কমিশন, রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসারদের নিরপেক্ষ দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়ে হাসান উদ্দিন সরকার বলেন, নির্বাচন অনুষ্ঠানের নির্দিষ্ট তারিখের সাত দিন আগে থেকে নির্বাচনী এলাকায় টহলসহ প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে।  এক লিখিত বক্তব্যে ১০ দফা দাবি উপস্থাপনে হাসান উদ্দিন সরকার বলেন, নির্বাচন কমিশন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গাজীপুর সিটি নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার লক্ষ্যে সন্ত্রাস দমন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও তালিকাভুক্ত চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারসহ সব রকম পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক বিএনপি তথা ২০-দলীয় ঐক্যজোটের ধানের শীষ প্রতীকের নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের অহেতুক মিথ্যা মামলা দিয়ে যেন হয়রানি না করা হয়।

বিএনপি নেতা-কর্মীর বাড়িতে হামলার অভিযোগ মঞ্জুর : খুলনা সিটি নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু গতকাল সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, নির্বাচন সামনে রেখে নগরীর বিভিন্ন স্থানে নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা করা হচ্ছে, তাদের ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। আর অবৈধ রাজনৈতিক প্রভাবে এরই মধ্যে পুলিশের চেহারা বদলে গেছে। তিনি বলেন, ‘পুলিশকে আমরা বলেছি সন্ত্রাসীর তালিকা বানাতে। পুলিশ বিএনপি নেতা-কর্মীদের তালিকা বানিয়ে অভিযান শুরু করেছে।

মন্ত্রী-এমপিরা প্রচারে অংশ নিতে পারছেন না : গাজীপুর ও খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আজ থেকে শুরু হচ্ছে আনুষ্ঠানিক প্রচার কার্যক্রম। নিয়ম অনুযায়ী প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সিটি করপোরেশন (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা অনুযায়ী প্রচার চালাতে পারবেন। তবে আচরণ বিধিমালা সংশোধন না হওয়ায় মন্ত্রী বা এমপিরা প্রচারে অংশ নিতে পারবেন না। এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মন্ত্রী বা এমপিরা প্রচার চালাতে পারবেন না। আচরণ বিধিমালা সংশোধনের বিষয়ে কমিশন সভায় কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। ওই সভায় একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটিকে আচরণ বিধিমালা পর্যালোচনা করে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। যেহেতু আচরণ বিধিমালা সংশোধন হয়নি, তাই মন্ত্রী বা এমপিরা প্রচার চালাতে পারবেন না।

ইসির কর্মকর্তারা জানান, দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় আচরণ বিধিমালা প্রতিপালন করে প্রার্থীরা প্রচার চালাচ্ছেন কিনা- তা দেখতে অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে থাকবেন। কেউ বিধিমালা লঙ্ঘন করে প্রচার চালালে ছয় মাসের জেল বা ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড দিতে পারবেন। আর রাজনৈতিক দল বিধি লঙ্ঘন করলে ৫০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। আর কমিশন আচরণ বিধিমালা লঙ্ঘনের দায়ে প্রার্থিতা বাতিল করতে পারবে। পাশাপাশি কমিশনও প্রচার কার্যক্রম নজরদারি করবে। কমিশন কর্মকর্তারা মনে করেন, প্রচারের শুরুর দিন থেকেই বোঝা যাবে আগামী দিনের পরিস্থিতি কেমন হবে।

সর্বশেষ খবর