রবিবার, ৬ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা
এডিবির বার্ষিক সভা

বাংলাদেশকে প্রশংসায় ভাসালেন প্রেসিডেন্ট

মানিক মুনতাসির, ম্যানিলা (ফিলিপাইন) থেকে

এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ৫১তম বার্ষিক সভার মূল আলোচনার প্রথম সেশনে বাংলাদেশকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন সংস্থাটির প্রেসিডেন্ট তাকিহিকো নাকাও। তিনি বলেন, বাংলাদেশ গত ১০ বছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি দ্বিগুণ করেছে। অর্থনীতিতে ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করেছে। বাংলাদেশের প্রকৌশলীরা মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার মতো শীর্ষস্থানীয় জায়গায় কাজ করছেন। এটি অবশ্যই বাংলাদেশের জন্য গর্বের বিষয়। দেশটিতে শিক্ষা, স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন ও দারিদ্র্য বিমোচনে অভাবনীয় সাফল্য দেখিয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার। গতকাল ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলায় হোটেল সাংগ্রিলায় এক ওপেনিং সেশন অব দ্য বোর্ড গভর্নরসে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এবং ইআরডি সচিব কাজী শফিকুল আজমসহ অর্থমন্ত্রীর সফরসঙ্গীরা এতে অংশ নেন। এ ছাড়া সব অংশগ্রহণকারী দেশের সদস্য এতে উপস্থিত ছিলেন। গতকাল মোট ছয়টি সেশন অনুষ্ঠিত হয়। আজ বার্ষিক সভার সমাপনী দিন।

এদিকে এডিবির বার্ষিক সভায় মিয়ানমার ও বাংলাদেশের রোহিঙ্গা সংকট নিয়েও আলোচনা হয়েছে। সেখানে আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীকে এ সংকট সমাধানে শুধু আর্থিক সহযোগিতাই নয়, বরং স্থায়ী সমাধানের উদ্যোগ নেওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। ইতিমধ্যে অনেক উন্নয়ন-সহযোগী সংস্থা এ সমস্যা সমাধানে এগিয়ে এসেছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

এর আগে এডিবির বোর্ডসভায় এবং বিশ্বব্যাংকের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, রোহিঙ্গা সংকটের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে প্রতি বছর অতিরিক্ত ১ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করতে হবে। এতে বাজেটে কিছুটা চাপ ইতিমধ্যে পড়তে শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। আর রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহে নেতৃত্ব দেবে বিশ্বব্যাংক ও এডিবি।

ওপেনিং সেশনে এডিবি প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘ফেব্রুয়ারিতে আমি বাংলাদেশ সফরে গিয়ে সেখানকার স্থানীয় ও প্রান্তিক পর্যায়ের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অবকাঠামো ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের অগ্রগতি দেখে এসেছি। সত্যি সেটি অভাবনীয় এবং ঈর্ষণীয়। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির উচ্চ ধারা এশিয়ার অনেক দেশের জন্যই শিক্ষণীয়। সেখানে স্কুলপড়ুয়া শিশুরাও আইসিটিতে দক্ষ হয়ে উঠছে। তারা নাসার বিজ্ঞানী হওয়ার স্বপ্ন দেখছে। কেননা গত কয়েক বছরে বাংলাদেশ আইসিটি খাতে অনেক এগিয়েছে। এ ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সবার জন্য অনুকরণীয়।

এ সময় টেকসই উন্নয়নের জন্য যে ২০৩০ ঘোষণা করা হয়েছে, এর বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন নাকাও। এই সময়ের মধ্যে টেকসই এশিয়া গড়ে তোলারও অঙ্গীকার করেন তাকিহিকো নাকাও।

এদিকে অর্থমন্ত্রী গতকাল সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের জানান, এডিবি বাংলাদেশের উন্নয়নে সব ধরনের সহায়তা বাড়ানোর আশ্বাস দিয়েছে। রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে এডিবির বোর্ড অব গভর্নরসের সদস্যরা কোনো উদ্বেগ জানিয়েছেন কি না— এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, তারা উদ্বেগ জানাননি। তবে এ সংকটের সমাধানের ব্যাপারে পুরো বিশ্ববাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন সদস্যরা। এ সময় তার সঙ্গে এডিবির বিকল্প নির্বাহী পরিচালক মাহবুব আহমেদ, ইআরডি সচিব কাজী শফিকুল আজম ও ফিলিপাইনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আসাদ আলম সিয়াম উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ খবর