বৃহস্পতিবার, ১০ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা

নির্বাচনী বাজেটে উন্নয়ন ব্যয় এক লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা

প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে আজ এনইসির বৈঠক, সর্বোচ্চ বরাদ্দ যাচ্ছে পরিবহন ও বিদ্যুতে

রুকনুজ্জামান অঞ্জন

আগামী ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য সব মিলিয়ে ১ লাখ ৮০ হাজার ৮৬৯ কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) প্রস্তাব করতে যাচ্ছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়। প্রস্তাবিত এডিপিতে ৭ হাজার ৮৬৯ কোটি টাকা ধরা হয়েছে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব তহবিলের উন্নয়ন ব্যয় হিসেবে। ফলে মূল এডিপির আকার হতে পারে ১ লাখ ৭৩ হাজার কোটি টাকা।

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী চেয়ারম্যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আজ পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলন কক্ষে আগামী অর্থবছরের এই উন্নয়ন ব্যয় চূড়ান্ত করা হবে। বরাদ্দকৃত টাকা দিয়ে উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন হয় বলে এডিপিকে উন্নয়ন বাজেট হিসেবেও অভিহিত করা হয়। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় জানায়, ১ লাখ ৭৩ হাজার কোটি টাকার মূল এডিপিতে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ ধরা হয়েছে। বৈদেশিক সহায়তা থেকে প্রাক্কলন করা হয়েছে ৬০ হাজার কোটি টাকা। তবে আলোচনার সময় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে মূল এডিপির আকারের পরিবর্তন করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত আগেই আভাস দিয়েছেন, নতুন অর্থবছরের বাজেটের আকার দাঁড়াবে প্রায় ৪ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি।  চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের মূল বাজেটের আকার ছিল ৪ লাখ ২৬৬ কোটি টাকা। এতে মূল এডিপির আকার ১ লাখ ৫৩ হাজার ৩৩১ কোটি টাকা। সে হিসাবে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় বাড়িয়ে নতুন অর্থবছরের উন্নয়ন বাজেট প্রস্তাব করা হচ্ছে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সূত্রগুলো জানায়, নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকারের অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন জোরদার করা হচ্ছে। বিশেষ করে পদ্মা সেতু, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং মেট্রোরেলের বাস্তবায়ন কাজে গতি বেড়েছে। ফলে এসব খাতে বরাদ্দও বাড়ছে। পাশাপাশি মানবসম্পদ ও সামাজিক খাতের উন্নয়নেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে গ্রামীণ অর্থনীতিতে গতিশীলতা আনয়ন এবং অধিক কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য পল্লী উন্নয়ন ও পল্লী প্রতিষ্ঠানে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এসব কারণে উন্নয়ন বাজেটে ব্যয় বাড়ছে। জানা গেছে, নতুন বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে সর্বোচ্চ ৪৫ হাজার ৪৪৯ কোটি টাকা বরাদ্দ যাচ্ছে পরিবহন খাতে, যা এডিপির ২৬ দশমিক ২৭ শতাংশ। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, পদ্মা সেতু এবং পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ প্রকল্পের গুরুত্ব বিবেচনা করে সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে এ খাতটিতে। এ ছাড়া অগ্রাধিকার বিবেচনায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২২ হাজার ৯৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ পাচ্ছে বিদ্যুৎ খাত। এরপর পর্যায়ক্রমে ভৌত পরিকল্পনা-পানি সরবরাহ ও গৃহায়ন খাতে ১৭ হাজার ৮৮৯ কোটি টাকা এবং পল্লী উন্নয়ন ও পল্লী প্রতিষ্ঠান খাতে ১৬ হাজার ৬৯০ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রাক্কলন করা হয়েছে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় জানায়, শিক্ষার প্রসার ও গুণগতমান বৃদ্ধির লক্ষ্যে শিক্ষা ও ধর্ম খাতে ১৬ হাজার ৬২০ কোটি  টাকা বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণসহ তথ্য প্রযুক্তির প্রসারে বিজ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে ১৪ হাজার ২১০ কোটি টাকা বরাদ্দ ধরা হয়েছে।

স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে স্বাস্থ্য-পুষ্টি-জনসংখ্যা ও পরিবারকল্যাণ খাতে বরাদ্দ ধরা হয়েছে ১১ হাজার ৯০৫ কোটি টাকা।

সর্বশেষ খবর