বৃহস্পতিবার, ১০ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা

সম্মেলনে ব্যস্ত ছাত্রলীগের সঙ্গে আওয়ামী লীগ

এখানে কোনো সিন্ডিকেট নেই : সোহাগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগামীকাল শুক্রবার আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ২৯তম জাতীয় সম্মেলন। এ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী নেতারা। কমিটি গঠন নিয়ে ঘুম হারাম আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদেরও। সম্মেলন ঘিরে এবার সবচেয়ে বেশি আলোচিত হচ্ছে,  সমঝোতার ভিত্তিতে কমিটি হবে নাকি আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার চালু করা স্বচ্ছ ব্যালটে ভোটের মাধ্যমে আসবে নতুন নেতৃত্ব। তবে সমঝোতা না হলে ভোটের মাধ্যমেই কমিটি করা হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে আগেই জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রতি বছরের মতো এবারও ভোট দিয়ে নেতা বানাতে চান সারা দেশের কাউন্সিলররা। তবে প্রধানমন্ত্রী যে সিদ্ধান্ত দেবেন তা-ই চূড়ান্ত বলে মনে করেন ছাত্রলীগের বর্তমান ও পদপ্রত্যাশী নেতারা। গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগ সভাপতি মো. সাইফুর রহমান সোহাগ জানিয়েছেন, ছাত্রলীগে কোনো সিন্ডিকেট নেই। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। সম্মেলনের সবরকম প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। সূত্রমতে, ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ৩৩০ জনের বেশি নেতা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। পদপ্রত্যাশীদের মধ্যে উৎসাহ বিরাজ করছে। কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে সকালে মধুর ক্যান্টিন, বিকালে ছাত্রলীগের দেখভালের দায়িত্বে থাকা নেতাদের বাসা-বাড়ি গিয়ে ধরনা দিচ্ছেন তারা। যোগ্যতা ও দলের জন্য ত্যাগ-তিতিক্ষা জানিয়ে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।

সঠিক নেতৃত্ব বাছাই করতে নড়েচড়ে বসেছেন ছাত্রলীগের কাউন্সিলে দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। তারা বলছেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী, মেধাবী এবং সংগঠনের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত নেতা-কর্মীরাই ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আসবেন। এরই মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মহানগরী উত্তর ও দক্ষিণের সম্মেলন সম্পন্ন করা হয়েছে। এখনো কমিটি গঠন করা হয়নি। আগামীকাল কেন্দ্রীয় সম্মেলনের পর কেন্দ্রের সঙ্গে এ কমিটিগুলো ঘোষণা করা হতে পারে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পদ-পদবি পেতে ছাত্রলীগের নেতারা যেমন ব্যস্ত সময় পার করছেন, তেমন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারাও ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন ‘মাইম্যান’কে পদে বসাতে। কেউ কেউ অঞ্চলভিত্তিক বা নিজের পছন্দের কাউকে ছাত্রলীগের নেতা বানাতে তৎপর হয়ে উঠেছেন। সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার পরপরই ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীর মধ্যে দেখা দিয়েছে প্রাণচাঞ্চল্য। যাদের আগামীতেও নেতৃত্বে আসার মতো বয়স ও সম্ভাবনা রয়েছে তাদের মধ্যেই উদ্দীপনা বেশি লক্ষ্য করা গেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন, হাকিম চত্বর, টিএসসিসহ রাজনৈতিক জোনগুলোয় ভিড় বেড়েছে আগের চেয়ে ঢের বেশি। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত আড্ডায় মুখর হয়ে থাকছে সর্বত্র।

ছাত্রলীগ ‘সিন্ডিকেট’ শব্দের সঙ্গে পরিচিত নয় : ছাত্রলীগ ‘সিন্ডিকেট’ শব্দের সঙ্গে পরিচিত নয় মন্তব্য করে একে গুজব হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন ছাত্রলীগ সভাপতি মো. সাইফুর রহমান সোহাগ। গতকাল দুপুরে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। সোহাগ বলেন, ছাত্রলীগ ‘সিন্ডিকেট’ শব্দের সঙ্গে পরিচিত নয়। দেশরত্ন শেখ হাসিনার ভ্যানগার্ড ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ডকে বিতর্কিত করতেই এই সিন্ডিকেট শব্দটি ব্যবহার করে কিছুসংখ্যক ব্যক্তি বা গোষ্ঠী। ছাত্রলীগের একমাত্র অভিভাবক শেখ হাসিনা। তাঁর নির্দেশেই ছাত্রলীগ পরিচালিত হয়। তাঁর নির্দেশনা অনুযায়ী আগামীর নেতৃত্ব তৈরি হবে। এ নেতৃত্বই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনতে সক্রিয় ভূমিকা রাখবে। তিনি বলেন, ১১ মে বিকাল ৩টায় সম্মেলন শুরু হবে। প্রথমে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন। এরপর শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর শোকপ্রস্তাব, সাংগঠনিক রিপোর্ট, প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনামূলক বক্তৃতার পর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থাকবে। এরপর দ্বিতীয় অধিবেশনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হবে।

আগামী নেতৃত্বে আলোচনায় যারা : ছাত্রলীগের আগামী নেতৃত্বে আলোচনায় রয়েছেন বর্তমান সহসভাপতি আদিত্য নন্দী, রুহুল আমিন, সোহান খান, আরেফিন সিদ্দিক সুজন, চৈতালী হালদার চৈতী, যুগ্মসম্পাদক দিদার মো. নিজামুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ মো. শওকতুজ্জামান সৈকত, আশিকুল পাঠান সেতু, প্রচার সম্পাদক সাইফ উদ্দিন বাবু, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সম্পাদক ইয়াজ আল রিয়াদ, কৃষি সম্পাদক বরকত হোসেন হাওলাদার, আইন সম্পাদক আল নাহিয়ান খান জয়, দফতর সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা, গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক রাকিব হোসেন, প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম শামীম, বিজ্ঞান সম্পাদক আনোয়ার পারভেজ আরেফিন, শিক্ষা ও পাঠচক্র সম্পাদক গোলাম রাব্বানী, গণশিক্ষা সম্পাদক আনিসুল ইসলাম জুয়েল, উপ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক ইশাত কাসফিয়া ইরা, রাসেল হোসেন, উপ-স্কুলছাত্র সম্পাদক অসীমকুমার বৈদ্য, উপ-আপ্যায়ন সম্পাদক আরিফুজ্জামান আল ইমরান, সৈয়দ আরাফাত ও খাজা খায়ের সুজন, উপ-আইন সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, উপ-পাঠাগার সম্পাদক শেখ ইনান, উপ-পরিবেশ সম্পাদক সুরঞ্জন ঘোষ, সহ-সম্পাদক খাদিমুল বাশার জয়, সহ-সম্পাদক মাহফুজ ইবনে রহমান দীপু, সহ-সম্পাদক এনামুল হক প্রিন্স, উপ-পরিবেশ সম্পাদক ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী সজীব ও ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্স, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদক শেখ জয়নুল আবেদীন রাসেল, বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান কনক, ঢাবির এফ রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি হাফিজুর রহমান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সভাপতি বরিকুল ইসলাম বাঁধন, সাধারণ সম্পাদক আল আমিন রহমান, জগন্নাথ হলের সভাপতি সঞ্জিত দাস, সাধারণ সম্পাদক উৎপল বিশ্বাস প্রমুখ। এ ছাড়া আলোচনায় আছেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাহানুর ইসলাম সাকিল, হোম ইকোনমিক্স কলেজের সভাপতি জেসমিন আরা রুমা, সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্মসাধারণ সম্পাদক প্রদীপকুমার গুহ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতৃত্বে ইমরান জমাদ্দার, রুম্মন হোসেন, শাহরিয়ার সিদ্দিক শিশিম, সৈয়দ মো. আরিফ হোসেন, রানা হামিদ, শেখ সাগর আহমেদ, ফুয়াদ হোসেন শাহাদাত, মোহাম্মদ রনি, শাহরিয়ার কবির, রবিউল ইসলাম, হাফিজুর রহমান, শাহেদ খান, ফখরুল ইসলাম জুয়েল, মুরাদ হায়দার টিপু, এইচ এম তাজ উদ্দিন, খাজা খায়ের সুজন, মো. জাবেদ হোসেন, তাহসান আহমেদ রাসেল, মাহমুদুল হাসান তুষার, সঞ্জিত চন্দ্র দাস, মেহেদী হাসান তাপস, রকিবুল ইসলাম ঐতিহ্য, হাসানুর রহমান হাসু, হায়দার মোহাম্মদ জিতু, সাগর হোসেন সোহাগ, ইউসুফ উদ্দিন খান, বরিকুল ইসলাম বাঁধন, সাবরিনা ইতি, নিপু তন্বী, জিয়াসমিন শান্তা, লিপি আক্তার প্রমুখ।

ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের প্রার্থী তালিকায় শীর্ষে আলোচনায় আছেন সদ্য বিদায়ী দুই সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ ও মহিউদ্দিন আহমেদ। এ ছাড়া আলোচনায় আছেন সিদ্ধেশ্বরী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি আশরাফুল ইসলাম লিনাজ, সাবেক ক্রীড়া সম্পাদক মিল্লাত, মতিঝিল থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান, মহানগরীর সাবেক সহসভাপতি আরমান হোসেন, আইন সম্পাদক ছোটন, সাংগঠনিক সম্পাদক অনীক, যুগ্মসম্পাদক সাগর মজুমদার, উপ-সম্পাদক ইমতিয়াজ আহমেদ আলামিন, সাংগঠনিক সম্পাদক জুবায়ের হোসেন, কদমতলী থানা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশিদ মারুফ, শ্যামপুর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ ইসলাম শাকিল।

ঢাকা মহানগরী উত্তরের আলোচনায় আছেন সদ্য বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন আহমেদ, সহসভাপতি মাজহারুল হক মাহফুজ, মাহবুবুল আলম সুমন, সদ্য বিদায়ী সাংগঠনিক সম্পাদক শাহজাহান মোল্লা সাগর, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান হৃদয়, সাব্বির আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক সম্রাট, ফারুক আহমেদ, ঢাকা পলিটেকনিকের সভাপতি মেহেদী হাসান, গুলশান থানা ছাত্রলীগ সভাপতি বেনজির রহিম খান, ঢাকা পলিটেকনিকের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল মোল্লা, বাড্ডা থানার নজরুল ইসলামসহ দুই ডজন নেতা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর