বৃহস্পতিবার, ১০ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা

‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত ৩

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর খিলগাঁও এবং নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের ৩০০ ফুট সড়কে পুলিশ ও র‌্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে দুজন নিহত হয়েছেন। তার মধ্যে খিলগাঁওয়ের আমুলিয়ায় গোয়েন্দা পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন লেনিন বাবু (৩৫)। পুলিশ বলছে, ১৯ এপ্রিল গেন্ডারিয়ায় পুলিশের সঙ্গে মাদক চোরাকারবারিদের গোলাগুলির ঘটনার মূল সন্দেহভাজন ছিলেন লেনিন বাবু। তবে র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহতের পরিচয় তত্ক্ষণাৎ জানা যায়নি। দুটি বন্দুকযুদ্ধই মঙ্গলবার দিবাগত ভোররাতে হয়েছে। গুরুতর অবস্থায় দুজনকেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল ও রূপগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার (পূর্ব) খন্দকার নুরুন্নবী জানান, ১৯ এপ্রিল গেন্ডারিয়ায় ইয়াবার চালান ধরতে গিয়ে গোলাগুলিতে তিন পুলিশ সদস্য আহত হন। ওই ঘটনার প্রধান সন্দেহভাজন ছিলেন লেনিন। তিনি ২০০২ সালের ২৯ মে খিলগাঁও থানার একটি হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি। রাজধানীর বিভিন্ন থানায় হত্যাচেষ্টা, চাঁদাবাজি, অস্ত্র ও মাদক আইনের আরও অন্তত ছয়টি মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে। মাঝে একবার পালিয়ে বিদেশে চলে গেলেও সম্প্রতি দেশে ফিরে লেনিন আবারও মাদকের কারবারে জড়িয়ে পড়েন। ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, লেনিন আমুলিয়া স্টাফ কোয়ার্টার এলাকায় অবস্থান করছেন খবর পেয়ে আমাদের একটি দল সেখানে যায়। টের পেয়ে লেনিন ও তার সহযোগীরা গুলি ছুড়তে শুরু করেন। এ সময় পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। গোলাগুলি থামার পর লেনিনকে সেখানে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মো. বাচ্চু মিয়া বলেন, আনুমানিক পঁয়ত্রিশ বছর বয়সী ওই গুলিবিদ্ধ যুবককে ভোর পৌনে ৪টার দিকে হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

বিকালেও ছিলেন কারাগারে সকালে গুলিবিদ্ধ লাশ : মঙ্গলবার বিকালেও মুক্তার আলী (৪৫) ছিলেন কারাগারে। সন্ধ্যায় জামিনে মুক্তি পান। গতকাল সকালে নিজ এলাকার একটি মাঠ থেকে পুলিশ তার গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করে। নিহত মুক্তার মণিরামপুর উপজেলার রতনদিয়া গ্রামের হাবিবুর রহমান হবির ছেলে। পুলিশের ধারণা, দুই দল ডাকাতের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধের সময় মুক্তার গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতিসহ অন্তত ১০টি মামলা রয়েছে। স্থানীয় লোকজন জানান, গতকাল ভোর সাড়ে ৫টার দিকে রাজগঞ্জ-পুলেরহাট সড়কের পাশে মাঠে একটি লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পরে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। খবর পেয়ে স্থানীয় শত শত মানুষ সেখানে ভিড় জমায়। স্থানীয় ঝাঁপা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সামছুল হক মন্টু লাশটি মুক্তার হোসেনের বলে শনাক্ত করেন। সাত মাস আগে ৪০০ পিস ইয়াবাসহ আটক হয়ে জেলে গিয়েছিলেন মুক্তার। মণিরামপুর থানার ওসি মোকাররম হোসেন বলেন, মুক্তার এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতি, অস্ত্র ও মাদকসহ বিভিন্ন থানায় অন্তত ১০টি মামলা রয়েছে। ওসি বলেন, দুই দল ডাকাতের মধ্যে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মুক্তার মারা গেছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ঘটনাস্থল থেকে এক রাউন্ড গুলি ও গুলির দুটি খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। লাশের ডান কানের নিচে গুলিবিদ্ধ হওয়ার চিহ্ন রয়েছে। এদিকে মুক্তারের বাবা হাবিবুর রহমান হবি ও মা শহর বানু জানান, মুক্তার সাত মাস ধরে জেলখানায়। দুই দিন আগে তিনি জামিন পান। কিন্তু তাকে জেল থেকে বের করার চেষ্টা করা হয়নি। মঙ্গলবার বিকালেও স্ত্রী জেলখানায় মুক্তারের সঙ্গে দেখা করে এসেছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মুক্তারের মৃত্যুর খবর বাড়িতে দেওয়া হলে তার বাবা, মা ও স্ত্রী প্রথমে তা বিশ্বাস করতে চাননি। কারণ আগের দিন বিকালেই তারা জেলখানায় মুক্তারের সঙ্গে দেখা করে এসেছেন। যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার আবু তালেব জানান, আদালত জামিন দেওয়ায় মুক্তার মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে জেল থেকে ছাড়া পান। পরের খবর কারাগার কর্তৃপক্ষের জানা নেই।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর