শুক্রবার, ১১ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা

মেগা প্রকল্প পেল ৩০ হাজার কোটি টাকা

ভোট বছরের এডিপিতে ১ হাজার ৪৫২ প্রকল্প

নিজস্ব প্রতিবেদক

পরিবহন ও বিদ্যুৎ খাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ দিয়ে ভোটের বছরের জন্য ১ লাখ ৮০ হাজার ৮৬৯ কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) অনুমোদন দিয়েছে সরকার। নতুন এডিপিতে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানসহ মোট ১ হাজার ৪৫২টি প্রকল্প যুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে বরাদ্দসহ অনুমোদিত প্রকল্পের সংখ্যা ১ হাজার ৩৪৬টি। এসব প্রকল্পের মধ্যে চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের সংশোধিত এডিপি থেকে স্থানান্তরিত হচ্ছে ১ হাজার ২৩৪টি প্রকল্প। আর একেবারেই নতুন অনুমোদিত প্রকল্প রয়েছে ১১২টি। বরাদ্দহীনভাবে অননুমোদিত নতুন প্রকল্প তালিকায় থাকছে ১ হাজার ৩৩৮টি। পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপে (পিপিপি) বাস্তবায়নের জন্য রেকর্ড ৭৮টি প্রকল্প যুক্ত হয়েছে আগামী এডিপিতে।

গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) বৈঠকে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের  জন্য নতুন অর্থবছরের এডিপি অনুমোদন করা হয়। অনুমোদিত এডিপিতে সরকারের মেগাপ্রকল্পগুলোতে ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে। ওই প্রকল্পের জন্য নতুন ১১ হাজার ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ ধরা হয়েছে। এ ছাড়া ২য় সর্বোচ্চ বরাদ্দ থাকছে পদ্মা সেতু রেল লিংক প্রকল্পে ৫ হাজার ৩৩০ কোটি টাকা এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ পেয়েছে স্বপ্নের পদ্মা সেতু প্রকল্প, প্রায় ৪ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা। সরকারের অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত অন্য প্রকল্পগুলোর মধ্যে মেট্রোরেল প্রকল্পে ৩ হাজার ৯০২ কোটি টাকা, মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পে ২ হাজার ১৭১ কোটি টাকা, কর্ণফুলী টানেল নির্মাণ প্রকল্পে ১ হাজার ৯০৫ কোটি টাকা এবং দোহাজারি-রামু-কক্সবাজার-ঘুমধুম রেলপথ প্রকল্পে ১ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রাক্কলন করা হয়েছে। সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, ১ লাখ ৭৩ হাজার কোটি টাকার মূল এডিপির সঙ্গে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব অর্থায়নের ৭ হাজার ৮৬৯ কোটি টাকা মিলিয়ে মোট ১ লাখ ৮০ হাজার ৮৬৯ কোটি টাকার এডিপি অনুমোদন করা হয়েছে এবার। এই এডিপিতে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ ধরা হয়েছে। বৈদেশিক সহায়তা থেকে প্রাক্কলন করা হয়েছে ৬০ হাজার কোটি টাকা। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, এডিপি হচ্ছে জিডিপির লাইফ লাইন। তাই আমরা পরিকল্পিতভাবে এগোচ্ছি। আমাদের লক্ষ্য ২০৪১ সালে উন্নত দেশে উন্নীত হওয়া। অর্থাৎ এসডিজির হাত ধরে  উন্নত দেশে যেতে চাই। মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী চারটি বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এগুলো হলো— সবার স্কুলে উপস্থিতি, ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে যাওয়া, ডিজিটাল বাংলাদেশ এবং ২০২১ সালের মধ্যে সবার জন্য বিদ্যুৎ সুবিধা নিশ্চিত করা। ইতিমধ্যেই এসব প্রতিশ্রুতি পূরণের পথে রয়েছে বাংলাদেশ। আগামী অর্থবছরে সর্বোচ্চ বরাদ্দ পরিবহন খাতে। এই খাতে প্রায় ৪৫ হাজার ৪৪৯ কোটি ৮৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, যা মোট এডিপির ২৬ দশমিক ২৭ শতাংশ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ গেছে বিদ্যুৎ খাতে। প্রায় ২২ হাজার ৯৩০ কোটি টাকা, যা মোট এডিপি র ১৩ দশমিক ২৫ শতাংশ। এ ছাড়া তৃতীয় সর্বোচ্চ ভৌত-পরিকল্পনা-পানি সরবরাহ ও গৃহায়ণ খাতে ১৭ হাজার ৮৯০ কোটি টাকা, যা এডিপির প্রায় ১০ দশমিক ৩৪ শতাংশ।

সর্বশেষ খবর