রবিবার, ২০ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা

এক রাতের ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মাদক ব্যবসায়ীসহ চারজন নিহত

প্রতিদিন ডেস্ক

এক রাতের কথিত বন্দুকযুদ্ধে গতকাল তিন জেলায় চারজন নিহত হয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে তিন মাদক ব্যবসায়ী এবং একজন মামলার আসামি রয়েছেন। এ সময় ১০ পুলিশও আহত হয়েছে। গতকাল মধ্যরাতের পর যশোর, ময়মনসিংহ ও ফেনীতে এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনাগুলো ঘটেছে। যশোর, ময়মনসিংহ ও ফেনী প্রতিনিধির পাঠানো খবর অনুযায়ী, বন্দুকযুদ্ধে যশোরে মারা গেছেন আবুল কালাম (৪৭), হাবিবুর রহমান (৩৮) ও মিলন কাঁসারী (৪০)। ময়মনসিংহের নান্দাইলে মারা গেছেন মো. ইমন মিয়া (১৯)। এ ছাড়াও ফেনীর সোনাগাজীতে জসিম উদ্দিন (৩৫) নামের এক যুবক আহত হয়েছেন। এসব ঘটনায় তিন পুলিশ কর্মকর্তাসহ ১০ পুলিশ আহত হয়েছেন। যশোরের বন্দুকযুদ্ধ হয়েছে র‌্যাবের সঙ্গে এবং নান্দাইল ও সোনাগাজীর বন্দুকযুদ্ধ দুটি হয়েছে পুলিশের সঙ্গে। তিনটি ঘটনা মধ্যরাতের পর এক ঘণ্টার মধ্যে ঘটেছে। যশোরের ঘটনায় নিহত তিনজন মাদক ব্যবসায়ী বলে র‌্যাব দাবি করেছে। পুলিশ দাবি করেছে, নান্দাইলে নিহত ইমন মিয়া হত্যা মামলার আসামি ও সোনাগাজীতে আহত জসিম একজন ডাকাত। র‌্যাব জানায়, যশোরের অভয়নগর উপজেলার বাগদাহ এলাকায় রাত ৩টা ২০ মিনিটে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ তিন মাদক ব্যবসায়ী মারা গেছেন। তারা হলেন অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া গ্রামের কাদের আলী মোড়লের ছেলে আবুল কালাম, একই গ্রামের আবদুল বারিক শেখের ছেলে হাবিবুর রহমান এবং আবদুস সাত্তার কাঁসারীর ছেলে মিলন কাঁসারী। অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ গনি মিয়া জানান, র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত তিনজনই অস্ত্রধারী মাদক ব্যবসায়ী। সকালে র‌্যাব তিনটি মরদেহ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ তিনটি যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। এ ছাড়া রাত ৩টার দিকে ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার খলাপাড়া গ্রামে নান্দাইল-তাড়াইল সড়কে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মো. ইমন মিয়া নিহত হন। তার বাড়ি নান্দাইল উপজেলার গাংগাইল ইউনিয়নের বিনয়রামপুর গ্রামে। ইমন মিয়ার বিরুদ্ধে থানায় একটি হত্যা মামলা ছিল। নান্দাইল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম মিয়া জানান, গত বৃহস্পতিবার রানা মিয়া (১৪) নামে এক কিশোরকে হত্যা করেন ইমন। রানা মিয়া এলাকায় ইজিবাইক চালাতেন। সকালে বরাইল বাজার এলাকায় রানা মিয়ার লাশ পাওয়া যায়। রানাকে খুন করে তার ইজিবাইক নিয়ে যান ইমন। ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার রায়েরবাজার এলাকায়  সেটা বিক্রির চেষ্টা করার সময় সন্দেহবশত আটক করেন স্থানীয় লোকজন। পরে রানার পরিবার ইমনের বিরুদ্ধে মামলা করে। এরপর পুলিশ ইমনকে সঙ্গে নিয়ে তার সহযোগীদের ধরতে রাতে খলাপাড়া এলাকায় অভিযান চালায়। এ সময় ইমনের সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। এ সময় ইমন পালানোর চেষ্টা করেন। পরে পুলিশ রাস্তার পাশে ইমনকে পড়ে থাকতে দেখে। তাকে সেখান থেকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। তখন জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা ইমনকে মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ আরও জানায়, রাত ৩টার দিকে ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার চরদরবেশ ইউনিয়নের দক্ষিণ চরসাহাভিকারী গ্রামের হাজীপাড়া এলাকায় ডাকাত দলের সঙ্গে গোলাগুলিতে পুলিশের তিন কর্মকর্তাসহ ১০ জন আহত হয়েছেন। এ সময় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় জসিমকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জসিম তালিকাভুক্ত শীর্ষ জলদস্যু ও আন্তজেলা ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দেশীয় একটি এলজি, দুটি গুলি, একটি মোবাইল ফোন ও কয়েকটি ছোরা উদ্ধার করেছে। জসিমের বাড়ি উপজেলার চরদরবেশ ইউনিয়নের দক্ষিণ চরসাহাভিকারী এলাকায়। জসিমের বিরুদ্ধে সোনাগাজী থানায় হত্যা, অপহরণ, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, অস্ত্র ও ডাকাতির অভিযোগে নয়টি মামলা রয়েছে।

সর্বশেষ খবর