শিরোনাম
শনিবার, ৯ জুন, ২০১৮ ০০:০০ টা

ভিড়ের মধ্যে উঠে গেল ট্রাক, নিহত ৪

ধাক্কা দিয়ে নারীর মাথায় বাস তুলে দিল চালক

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

রিকশা, সিএনজি ও টেম্পোর জন্য আপেক্ষমাণ যাত্রীদের ভিড়ে উঠে গেল ট্রাক। এতে ঘটনাস্থলেই নারীসহ ৪ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১০ জন। গতকাল সকালে চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়া থানাধীন শাহ আমানত সেতু এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। বাকলিয়া থানার ওসি প্রণব চৌধুরী বলেন, ‘একটি ট্রাক কর্ণফুলী থেকে নগরীর দিকে আসার সময় নতুন ব্রিজ এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফুটপাথে উঠে যায়। এ সময় কয়েকটি রিকশা এবং পথচারীদের চাপা দেয়। এ ঘটনায় চারজন নিহত এবং কয়েকজন আহত হয়েছেন।’ প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মেরিনার্স সড়কের প্রবেশ মুখে রিকশা ও সিএনজি ট্যাক্সির জন্য যাত্রীরা দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ ছাড়া টেম্পোতে ওঠার জন্য রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিলেন অনেকে। ট্রাকটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ওই ভিড়ের মধ্যে উঠে পড়ে। এত হতাহতের ঘটনা ঘটে। চমেক হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সকালে একটি সিমেন্টবাহী ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে থাকা কয়েকটি রিকশা ও সিএনজি ট্যাক্সিকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে নার্গিস আকতার, হাসিনা আকতার, শাহ পরান ও নুরুল আবছার নিহত হন। এ ঘটনায় কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে আবদুস সাত্তার, ইমরান, আবদুর রহমান, অনিল বড়ুয়া, শারমিন আক্তার, রিগান, সিফাত, দিদার ও জাহাঙ্গীর আলমকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ছেলেকে রক্ষা করে নিজে গেলেন পরপারে

অসুস্থ মাকে দেখে সাতকানিয়া থেকে ভাটিয়ারীর বাসায় ফিরছিলেন হাসিনা আকতার। সঙ্গে ছিল তার ছয় বছরের সন্তান ইমরান হোসেন। নগরীর শাহ আমানত সেতু এলাকায় বাস থেকে নেমে ফের গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন তারা। এ সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ঘাতক ট্রাক তেড়ে আসে তাদের দিকে। তিনি উপায়ন্তর না দেখে ছেলেকে ধাক্কা দিয়ে দূরে ফেলে দেন। নিজে ট্রাক চাপা পড়ে চলে যান পরপারে। গতকাল নগরীর শাহ আমানত সেতু এলাকায় ট্রাক চাপায় নিহত চার জনের একজন হাসিনা আকতার।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন-আহত শিশু ইমরান মায়ের কল্যানে জীবন রক্ষা পেলেও শঙ্কামুক্ত নয়। সে মাথা, হাত ও শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত পেয়েছে। ডান হাত ভেঙে গেছে। তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিউরো সার্জারি বিভাগে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। একই ঘটনায় আহত চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রিদওয়ান বলেন, আমরা বাস থেকে নেমে নিউমার্কেটগামী বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। আমার পাশেই দাঁড়ানো ছিলেন নিহত ওই নারী (হাসিনা আকতার)। সন্তানকে আগলেই রেখেছিলেন। হঠাৎ বেপরোয়া  ট্রাকটি সামনে চলে আসে। এ সময় তিনি সন্তানকে ধাক্কা দিয়ে প্রাণে রক্ষা করেন। কিন্তু নিজে বাঁচতে পারলেন না। নিহত হাসিনার আরেক সন্তান সায়েদ হোসেন জানান, তাদের গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের সাতকানিয়া। বৃহস্পতিবার তার মা অসুস্থ নানিকে দেখতে গ্রামের বাড়িতে যান। শুক্রবার তাদের ভাটিয়ারির বাসায় ফেরার পথে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন তার মা।

সর্বশেষ খবর