শিরোনাম
সোমবার, ১১ জুন, ২০১৮ ০০:০০ টা

বিআরটি নির্মাণে ধীরগতি

৬ মাসে মাত্র ৩১ পিলারের পাইলিং

নিজামুল হক বিপুল

রাজধানী ঢাকার সঙ্গে গাজীপুরের সড়ক যোগাযোগ নিরবচ্ছিন্ন করতে এয়ারপোর্ট থেকে গাজীপুর পর্যন্ত বাস র‌্যাপিড ট্রানজিটের (বিআরটি) নির্মাণকাজ শুরু হলেও চলছে ধীরগতিতে। এ প্রকল্পের আওতায় ছয়টি ফ্লাইওভার নির্মাণের কাজ চলছে। গত প্রায় ছয় মাসে ফ্লাইওভারের জন্য মাত্র ৩১টি পিলারের পাইলিংয়ের কাজ শেষ হয়েছে। এখন আরও ৬৭০টি পিলারের পাইলিং বাকি। ২০২০ সালের জুনের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা।

সরকার রাজধানীর সঙ্গে গাজীপুরের যোগাযোগ দ্রুত ও সহজ করতে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), ফরাসি দাতা সংস্থা (এএফডি), গ্লোবাল এনভায়রনমেন্ট ফ্যাসিলিটি (জিইএফ) অর্থায়নে বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট প্রকল্প হাতে নেয় গত বছর। মূলত যাতায়াতে সময় কমাতেই প্রায় দুই হাজার ৩৯ কোটি ৮৫ লাখ টাকার প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়। প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, গত বছর চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরের পর গত বছরের এপ্রিল ও ডিসেম্বর মাসে এ প্রকল্পের চারটি প্যাকেজের কাজ শুরু হয়। এর মধ্যে গাজীপুরে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন লিমিটেডের (বিটিসিএল) জমিতে বাসের ডিপো নির্মাণের কাজ শুরু হয়। অপরদিকে এ প্রকল্পের আওতায় ছয়টি ফ্লাইওভারের নির্মাণকাজও শুরু হয় গত ডিসেম্বরে। প্রকল্প সূত্র জানায়, ডিপো নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। আগামী জুনের মধ্যে ডিপো নির্মাণের কাজ পুরোপুরি শেষ হয়ে যাবে। তবে মূল কাজ বিআরটির জন্য ফ্লাইওভার এবং বিআরটি চলাচলের করিডর নির্মাণ শুরু হলেও চলছে ধীরগতিতে। এ প্রকল্পের আওতায় যে ছয়টি ফ্লাইওভার নির্মাণ হবে, তার জন্য ৭০০টি পিলার করতে হবে। এর মধ্যে গাজীপুর অংশে মাত্র ৩০টি পিলারের পাইলিংয়ের কাজ শেষ হয়েছে। এ ছাড়া এয়ারপোর্ট অংশে একটি পিলারের পাইলিং শেষ হয়েছে। বিআরটির প্রকল্প পরিচালক (পিডি) সানাউল হক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বিআরটি প্রকল্পের নির্মাণ দ্রুতগতিতে চলছে। দিনে-রাতে কাজ হচ্ছে দাবি করে তিনি বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সর্বাত্মক সহযোগিতা পেলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই প্রকল্পের কাজ শেষ করা সম্ভব হবে। বিআরটি প্রকল্পের প্রথম ধাপে নির্মাণ হচ্ছে গাজীপুর থেকে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার। থাকছে ছয়টি ফ্লাইওভার, এলিভেটেড সড়ক, ১৪১টি সংযোগ সড়ক, ১২ কিলোমিটার স্টর্ম ড্রেন, হাজীপুর বাস ডিপো, জয়দেবপুর বাস টার্মিনাল এবং এয়ারপোর্ট বাস টার্মিনাল নির্মাণ। এ ছাড়া বিমানবন্দর রেলস্টেশন-সংলগ্ন এলাকায় পিপিপির ভিত্তিতে একটি মাল্টিমোডাল হাব নির্মাণ করা হবে। এ প্রকল্পের আওতায় সেতু বিভাগ টঙ্গীতে তুরাগ নদের ওপর আট লেনবিশিষ্ট টঙ্গী সেতু নির্মাণ করছে। জানা গেছে, ইতিমধ্যে সেতু নির্মাণের জন্য টেস্ট পাইলিংয়ের কাজও শুরু হয়েছে। গত বছর শুরু হওয়া এ প্রকল্পের মেয়াদ হচ্ছে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যে এ প্রকল্পের নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু বাস্তবতা একেবারেই ভিন্ন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কাজের যে গতি তাতে নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়া বেশ কঠিন। এর ওপর যদি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে কাজে কোনোরকম খামখেয়ালি করে তাহলে তো কথাই নেই। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন সম্পন্ন হলে এটি হবে দেশের প্রথম বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) সার্ভিস। এটি পরিচালনার জন্য শতভাগ সরকারি মালিকানাধীন ঢাকা বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডও (ঢাকা বিআরটি) গঠন করা হয়েছে। এ প্রকল্পের মূল করিডরের মোট দৈর্ঘ?্য ২০ দশমিক ৫০ কিলোমিটারের মধ্যে উত্তরা থেকে টঙ্গী পর্যন্ত সাড়ে চার কিলোমিটার থাকবে এলিভেটেড বিআরটি লেন। বাকি ১৬ কিলোমিটার থাকবে সমতলে। এয়ারপোর্ট থেকে গাজীপুর পর্যন্ত মোট ২৫টি স্টেশন থাকবে। বিআরটি রুটে প্রতি ঘণ্টায় উভয় দিক থেকে ২৫ হাজার যাত্রী পরিবহন করবে। সময় লাগবে মাত্র ৪০ মিনিট। এতে করে যেমন যানজট দূর হবে, পাশাপাশি দ্রুততম সময়ে গাজীপুরের লোকজন রাজধানী ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর