মঙ্গলবার, ১৯ জুন, ২০১৮ ০০:০০ টা

বন্যায় ডুবেছে গ্রামের পর গ্রাম

মৌলভীবাজারে বাঁধ ভেঙে পানিবন্দী দুই লাখ মানুষ, ব্যাপক ক্ষতি ফসলের

সৈয়দ বয়তুল আলী, মৌলভীবাজার

বন্যায় ডুবেছে গ্রামের পর গ্রাম

মৌলভীবাজারের বড়হাট এলাকায় সড়কে তীব্র পানির স্রোত। পারাপার হতে বেগ পেতে হচ্ছে —বাংলাদেশ প্রতিদিন

কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে মনু নদ ও ধলাই নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে নদীর বাঁধ ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে গেছে। ঈদের আগের দিন এ ঘটনা ঘটেছে। এতে মৌলভীবাজার পৌরসভা, মৌলভীবাজার সদর উপজেলাসহ, জেলার কুলাউড়া, কমলগঞ্জ, রাজনগর উপজেলার ৩০টি ইউনিয়নের ২৫টি স্থান ভেঙে যায়। এ অবস্থায় পানি প্রবেশ করে প্রায় শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে আছেন ৪ উপজেলার  প্রায় দুই লক্ষাধিক মানুষ।

প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, এ বন্যায় ডুবে গেছে আউস ধান, সবজি ক্ষেতসহ গ্রামীণ সড়ক। এতে চরম দুর্ভোগে পোহাচ্ছেন এলাকাবাসী। তলিয়ে গেছে অসংখ্য বাসা-বাড়ি, দোকানপাট। বিধ্বস্ত হয়েছে সহস্রাধিক কাঁচা ঘর। ফলে মানুষ ঈদের খুশি বিসর্জন দিয়ে নিজেদের জানমাল গবাদি পশু ও মালামাল রক্ষায় ব্যস্ত থেকেছেন। জানা গেছে, বন্যার পানিতে ডুবে কমলগঞ্জ উপজেলায় শিশুসহ ৫ জন ও কুলাউড়া উপজেলায় ২ জন এবং রাজনগরে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন কমলগঞ্জ উপজেলার কাঁঠালকান্দি গ্রামের আবদুুল ছত্তার, তার ছেলে আবদুল করিম, আলীনগর বস্তির সেলিম মিয়া, শমশেরনগর ভাদাইরদেউলে প্রতিবন্ধী রমজান আলী ও রহিমপুর ইউনিয়নের প্রতাপী গ্রামে মিছির মিয়ার দেড় বছরের শিশু সন্তান ছাদির মিয়া রাজনগর উপজেলার সুনামপুর গ্রামের ইমাদ উদ্দিন (৫)। বন্যায় আটকেপড়া লোকদের উদ্ধারে কয়েকটি স্থানে উদ্ধার অভিযানে অংশ নিয়েছে সেনাবাহিনীসহ সরকারি কর্মকর্তা ও স্বেচ্ছাসেবীরা। আরও জানা গেছে, পানির স্রোতে ভারতের কৈলাশহরে যাতায়াতে শমশেরনগর-চাতলাপুর সড়কে কালভার্ট ব্রিজ ধসে পড়ে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। শহরের সঙ্গে সিলেট ও চার উপজেলার সড়ক যোগাযোগও বিছিন্ন রয়েছে। মৌলভীবাজার পৌর শহরে পানি প্রবেশ করে সরকারি চারটি খাদ্য গুদামের মজুদ খাদ্যও নষ্ট হয়েছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বন্যা কবলিত মানুষের জন্য ১৭৮০ মেট্রিক টন চাল, ৯,১৯,০০০ টাকা নগদ বরাদ্দ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক। বন্যায় দুর্গতদের জন্য ৫০টি আশ্রয়ণ কেন্দ  স্থাপন করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর বিশেষ ৪টি টিম  দুর্গত এলাকা থেকে পানিবন্দী মানুষ উদ্ধারে সহযোগিতা করছে। মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক তোফায়েল ইসলাম বলেন, বন্যার দুর্গতদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে। এছাড়া দুর্যোগ  মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় ত্রাণ রয়েছে। আরও ত্রাণ বরাদ্দের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে ।

সর্বশেষ খবর