মঙ্গলবার, ১৯ জুন, ২০১৮ ০০:০০ টা

১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার সাক্ষী হেলাল সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত

প্রতিদিন ডেস্ক

ফেনীতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী পুলিশ পরিদর্শক হেলাল উদ্দিন ভূঁইয়া। পুলিশ জানিয়েছে, ফেনীর রামপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গত রবিবার দুপুরে তিনি গুরুতর আহত হয়েছিলেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর : বিডিনিউজের।

বাংলাদেশ পুলিশের ১৯৯৫ ব্যাচের সার্জেন্ট হেলাল ২০০৪ সালে আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র উদ্ধারের সময় ছিলেন চট্টগ্রামের বন্দর থানার কয়লার ডিপো পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ। সর্বশেষ তিনি চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের বন্দর থানার পেট্রল ইন্সপেক্টর (পিআই-বন্দর) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। হাইওয়ে পুলিশের মহিপাল থানার এসআই আশিকুর রহমান জানান, রবিবার কুমিল্লার বাসা থেকে নিজে গাড়ি চালিয়ে চট্টগ্রামে ফিরছিলেন হেলাল। রামপুর এলাকায় গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে গুরুতর আহত হন তিনি। চট্টগ্রাম নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (বন্দর) কামরুল হাসান জানান, দুই ছেলে এক মেয়ের জনক হেলালের বাড়ি কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার গোবিন্দপুরে। তবে তার পরিবারের সদস্যরা থাকতেন কুমিল্লা শহরের ভাড়া বাসায়। দুই সন্তানের মধ্যে তার মেয়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ  থেকে গত বছর এইচএসসি পাস করেছেন, ছেলে কুমিল্লা জিলা স্কুলের ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী। পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে হেলাল উদ্দিন কুমিল্লায় নিজ বাসায় গিয়েছিলেন। সেখান থেকে কর্মস্থল চট্টগ্রাম ফেরার পথে ফেনীর রামপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল চট্টগ্রামের আনোয়ারা সিইউএফএল ঘাটে অস্ত্র খালাসের ঘটনা জানতে পেরে  সেখানে প্রথমে ছুটে যান ওই সময় বন্দর পুলিশ ফাঁড়িতে দায়িত্বরত কর্মকর্তা সার্জেন্ট আলাউদ্দিন ও কয়লার ডিপো পুলিশ ফাঁড়ির সার্জেন্ট হেলাল উদ্দিন। তাদেও দেওয়া তথ্যে  সেদিন অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনা ঘটে, যা অনেক কর্তা ব্যক্তিদের  গোচরেই ভারতের বিদ্রোহীদের জন্য আনা হয়েছিল বলে পরে আদালতের রায়ে উঠে আসে। অস্ত্র উদ্ধারের পর ট্রলারে থাকা একে-৪৭ রাইফেল চুরি করে বিক্রির অভিযোগ তুলে আলাউদ্দিন ও হেলালকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। নোয়াখালীর সুধারাম থানায় একটি অস্ত্র আইনের মামলায় তারা আসামিও হয়েছিলেন। প্রায় ২৭ মাস কারাভোগ করে তারা পরে জামিন পান। ২০১১ সালে তারা আবার চাকরিতে বহাল হন। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ২০০৬ সালের ২২ ও ২৩ মে তাদের ডাণ্ডাবেড়ি পরিয়ে সাক্ষ্য দিতে আনা হয়েছিল চট্টগ্রাম আদালতে। হেলালের সহকর্মী ও ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার আরেক সাক্ষী মো. আলাউদ্দিন বর্তমানে ফেনী জেলা পুলিশের ওসি (রেশন স্টোর) হিসেবে দায়িত্বে আছেন। আলাউদ্দিন বলেন, ১০ ট্রাক অস্ত্র উদ্ধারের পরের বছর ২০০৫ সালের আগস্ট মাসে নোয়াখালীর সুধারাম থানার একটি অস্ত্র মামলায় আমাদের গ্রেফতার করে র‌্যাব। গ্রেফতারের পর নির্যাতনে হেলালের একটি পা ভেঙে যায়। ২০১০ সালের দিকে সুধারাম থানার মামলায় অব্যাহতি পাওয়ার পর ২০১১ সালে চাকরি ফিরে পান তারা। এরপর অস্ত্র মামলার পুনঃতদন্তের পর আমাদের প্রধান সাক্ষী করা হয়। আলাউদ্দিন জানান, ১০ ট্রাক অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনার ১০ বছর পর ২০১৪ সালে হেলাল ও তিনি প্রেসিডেন্ট পুলিশ মেডেল (পিপিএম) লাভ করেন। ২০১৫ সালের দিকে হেলাল পুলিশ পরিদর্শক হিসেবে পদোন্নতি পান।

সর্বশেষ খবর