কুমিল্লায় পেট্রল বোমায় বাস পুড়িয়ে মানুষ হত্যার মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে হাই কোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিতই থাকছে। গতকাল ওই জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের দায়ের করা লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি করে দিয়ে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। এ আদেশের ফলে অন্য সব মামলায় জামিন হলেও আগামী এক মাসে খালেদা জিয়ার কারা মুক্তির পথ আটকে গেল। আদেশে বলা হয়, খালেদা জিয়ার জামিন প্রশ্নে হাই কোর্ট যে রুল দিয়েছিল, চার সপ্তাহের মধ্যে তার নিষ্পত্তি করতে হবে। সে পর্যন্ত জামিনের ওপর চেম্বার আদালতের দেওয়া স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় কারাদণ্ডের রায়ের পর সাড়ে চার মাস ধরে কারাগারে থাকা খালেদা জিয়া ইতিমধ্যে ওই মামলায় সর্বোচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন। কিন্তু কুমিল্লার নাশকতার দুটিসহ কয়েকটি মামলায় গ্রেফতার দেখানোয় তার মুক্তি আটকে যায়। মুক্তি জটিলতা দূর করতেই ওইসব মামলায় হাই কোর্টে জামিন আবেদন করেন তার আইনজীবীরা। এর আগে গত ২৮ মে কুমিল্লার হত্যা মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন হাই কোর্ট। এরপর রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে চেম্বার আদালত ওই জামিন স্থগিত করে দেয়। গতকাল রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম এবং খালেদা জিয়ার পক্ষে এজে মোহাম্মদ আলী, খন্দকার মাহবুব হোসেন, মওদুদ আহমেদ, জয়নুল আবেদীন ও মাহবুব উদ্দিন খোকন, বদরুদ্দোজা বাদল, একেএম এহসানুর রহমান, ফারুক হোসেন শুনানিতে অংশ নেন। শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘এতবড় নৃশংস ঘটনায় করা মামলার প্রধান ব্যক্তি হওয়ার পরও যদি তাকে জামিন দেওয়া হয়, তবে এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি ও তাদের পরিবারগুলোর কছে কী বার্তা যাবে? ফলে আমার আরজি হলো, হাই কোর্টের দেওয়া জামিন বাতিল করা হোক।’ অন্যদিকে খালেদা জিয়ার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব শুনানিতে বলেন, ‘খালেদা জিয়ার সম্মানহানি করতেই পেট্রল বোমা মেরে মানুষ হত্যা করা হয়েছে। বিরোধী দলের ওপর দোষ চাপিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে নস্যাৎ করতে সরকারের এজেন্টরা পেট্রল বোমা মেরে নাশকতা করেছে। তার দায়-দায়িত্ব বেগম খালেদা জিয়ার না।’ খালেদা জিয়া ৭৩ বছর বয়সী ‘অসুস্থ একজন নারী’ এবং তিনি ‘জীবন ঝুঁকিতে রয়েছেন’- এমন যুক্তি দেখিয়ে তার জামিন বহাল রাখার আবেদন করেন এই আইনজীবী।
