মঙ্গলবার, ৩ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

বোটানিক্যাল গার্ডেনে বাড়ছে পর্যটন আকর্ষণ

মোস্তফা কাজল

বোটানিক্যাল গার্ডেনে বাড়ছে পর্যটন আকর্ষণ

নান্দনিক জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান বা বোটানিক্যাল গার্ডেনের প্রতি পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়ছে। প্রতি বছর ১৫ লাখ দেশি-বিদেশি পর্যটক ছুটে আসেন এখানে। এর মধ্যে সাধারণ উদ্ভিদপ্রেমীসহ শিক্ষা ও গবেষণার  কাজেও অনেকে এ উদ্যানে আসেন। এ উদ্ভিদ উদ্যানটি সরকারি সংস্থা বন বিভাগের আওতাধীন। ১৯৬১ সালে রাজধানীর মিরপুরে এ উদ্যানের যাত্রা হয়। বিচিত্র প্রজাতির উদ্ভিদের সমারোহে ৫৭টি বিভাগে বিভক্ত এ উদ্যানটি। এ বাগানের মূল উদ্দেশ্য বিভিন্ন জাতের উদ্ভিদ সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও জিনপুল তৈরি। এ উদ্যানে আরও রয়েছে গোলাপবাগান, পাইনবাগান, ফল গাছের বাগান, বাঁশবাগান, পাম গাছের বাগান, মৌসুমি বাগান, ঔষধি গাছের বাগান, পদ্মপুকুর, শাপলাপুকুর, ক্যাকটাস হাউস, অর্কিড হাউস এবং ইনডোর গাছের জন্য রয়েছে নেট হাউস। ছোট-বড় জলাশয় আছে সাতটি। এ বাগানের মোট আয়তন প্রায় ১১ একর। এখানে বর্তমানে ১১৭টি উদ্ভিদ পরিবারভুক্ত ৯৫২ প্রজাতির গাছ-গাছালি রয়েছে। এর মধ্যে ২৫৬ প্রজাতির ৩৫ হাজার বৃক্ষ, ৩১০ প্রজাতির ১০ হাজার গুল্ম ও ৩৭৮ প্রজাতির ১২ হাজার বিরুল ও লতাজাতীয় উদ্ভিদ। পুরো এ উদ্যানকে দেখার জন্য রয়েছে সুউচ্চ পর্যবেক্ষণ টাওয়ার। বিদেশি পর্যটকরা এ টাওয়ারে উঠে সবকিছু অবলোকন করেন। সবচেয়ে মজার বিষয় হলো উদ্যানের ভিতরে কোনো খাবার হোটেল নেই। দর্শনার্থীরা ইচ্ছা করলে বাইরে থেকে খাবার কিনে ভিতরে নিতে পারেন। তবে উদ্যানের ভিতরে যেখানে-সেখানে ময়লা ফেলা যায় না। এজন্য বিভিন্ন স্থানে ৪২টি ডাস্টবিন রাখা আছে। এ ছাড়া নিরাপত্তা নিশ্চিতে টহল পুলিশ কাজ করছে। আগত পর্যটক খালেদ খান বলেন, ঢাকা শহরে বিশাল আকারে প্রাকৃতিক পরিবেশ খুব বেশি নেই। বোটানিক্যাল গার্ডেনে হাঁটতে বেশ লাগে। চারপাশের বিভিন্ন প্রকৃতির গাছ দেখে মন ভরে যায়। এ ছাড়া উঁচু টিলা আর নিচু জলাশয়ের পাশ দিয়ে হেঁটে যেতে ভালোই লাগবে সবার। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শত শত পর্যটকের পদচারণে মুখরিত থাকে এ উদ্ভিদ উদ্যান। এখানের প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য সবাইকে হাতছানি দিয়ে ডাকে। উদ্যানের মধ্যে ৩ একর জায়গাজুড়ে দুটি নার্সারি রয়েছে। সরকার নির্ধারিত মূল্যে এ নার্সারি থেকে চারা কেনা যায়। এ উদ্ভিদ উদ্যানে আরও আছে লেক ও ঘূর্ণায়মান হাঁটার পথ। এ ছাড়া উদ্ভিদগুলো শনাক্ত করার সুবিধার্থে প্রতিটি উদ্ভিদের গায়ে নামফলক দেওয়া আছে। প্রধান ফটক দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করলেই চোখে পড়ে আফ্রিকান ওবাব গাছ। এর একটু পাশেই নানা জাতের গোলাপবাগান। প্রধান পথ ধরে একটু সামনে গেলে দেখা মিলবে অস্ট্রেলিয়ার সিলভার ওক, জাকারান্ডা ও ট্যাবে বুইয়া, জাপানের কর্পূর, মালয়েশিয়ার ওয়েল পাম, থাইল্যান্ডের রামবুতাম। রাস্তার দুই পাশে রয়েছে দেবদারু ও অস্ট্রেলিয়া থেকে সংগ্রহ করা বিভিন্ন প্রজাতির ইউক্যালিপটাস। ভিতরের চৌরাস্তা থেকে উত্তরের রাস্তাটি ধরে একটু গেলে দেখা মিলবে কর্পূর, ম্যাগনোলিয়া, শ্বেতচন্দন, গ্লিরিসিডিয়া, ফার্ন কড়ই, তুন, কেশিয়া নড়ুসা, ট্যাবেবুইয়া ও চেরি গাছ। উদ্যানের গোলাপবাগানের ভিতরে পাকা জলাধারে আছে ব্রাজিলের একটি জলজ উদ্ভিদ, নাম তার আমাজান লিলি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর