শনিবার, ১৪ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

বিষয়টিকে ওভারস্টেপিং মনে হয়েছে

—ড. এ কে আজাদ চৌধুরী

বিষয়টিকে ওভারস্টেপিং মনে হয়েছে

বহিরাগতদের ঠেকাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) প্রবেশমুখে চৌকি বসানোর সিদ্ধান্তটি বাস্তবে প্রয়োগ করা হবে একটি কঠিন কাজ। বরং এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কা আছে। আমার কাছে বিষয়টিকে  ‘ওভারস্টেপিং’ বলে মনে হয়েছে। ঢাবির সাবেক উপাচার্য ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (্ইউজিসি) সাবেক চেয়ারম্যান ড. কে আজাদ চৌধুরী বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বহিরাগত বলতে আসলে কাদের বোঝাচ্ছে? যে শিক্ষার্থী আজ থেকে চার দশক আগে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরিয়ে গেছেন তিনি কি তবে বহিরাগত! তবে আমার সঙ্গে যখন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কথা হয়েছে তখন দায়িত্বপ্রাপ্তরা আমাকে জানিয়েছেন, বহিরাগত বলতে তারা হলে বহিরাগতদের বুঝিয়েছেন। অন্য কিছু নয়।

এ কে আজদ চৌধুরী আরও বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বহিরাগত প্রবেশে কড়াকড়ি কার্যকরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির প্রবেশমুখে নিরাপত্তা চৌকি বসানোর মতো সিদ্ধান্ত অতীতে কখনো নেওয়া হয়নি। আর এ বিষয়ে এমন ফলাও করেও কখনো ঘোষণা আসেনি। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সৃষ্ট সংকটময় পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতায় বিশ্ববিদ্যালয়টির হল থেকে বহিরাগতদের বের করে দিতে দেখেছি। বিশেষ করে ’৯০-এর দশকে ছাত্রদল/ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী এবং এর সঙ্গে জড়িত বহিরাগতদের মাধ্যমে সহিংস পরিস্থিতি তৈরি হলে তাদের হল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল। এ ছাড়া জিয়া ও এরশাদ আমলেও ঢাবিতে বগিহরাগতদের প্রবেশ করতে দেওয়া হতো না। এজন্য সার্কুলারও জারি করা হয়েছিল। এর বিরুদ্ধে পরে আমরা প্রতিবাদ করেছিলাম। কারণ, ঢাবি ক্যাম্পাস একটি মুক্তচিন্তার স্থান। সেখানে প্রবেশের অধিকার সবাইকে দিতে হবে। তিনি বলেন, আমি নিজেও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরের দায়িত্ব পালনকালে ক্যাম্পাসে চলমান রাজনৈতিক দলগুলোর সহিংসতা কঠোর হাতে দমন করেছি। এজন্য বহিরাগতদেরও হল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল। তবে আমি মনে করি বহিরাগতদের হল থেকে বের করা হলেও মুক্ত চিন্তাধারার চর্চা হয় যে ক্যাম্পাসে, সে স্থান থেকে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থী নয় বলে অন্যদের প্রবেশে বাধা দেওয়া উচিত হবে না। এ বিষয়ে প্রশাসনের একক সিদ্ধান্ত ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে জড়িত অন্যদের মনোভাব কী তা জানতে হবে। এ কে আজাদ চৌধুরী আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন নিরপেক্ষ থেকে এর শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দেবেন। হয়তো পারিপার্শ্বিক অবস্থার কারণে এ ক্ষেত্রে তারা কিছুটা বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন। আর যেহেতু সামনে জাতীয় নির্বাচন সেহেতু এ সময়টায় যে কেউ অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করবে। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকেও সচেতন থাকতে হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর