বৃহস্পতিবার, ২৬ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা
তিন সিটি নির্বাচন

এমপিদের প্রচারণা ঠেকাতে স্পিকারকে চিঠি ইসির

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজশাহী, বরিশাল, সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এমপিদের প্রচারণা ঠেকাতে জাতীয় সংসদের স্পিকারকে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সেইসঙ্গে নির্বাচন কমিশন তিন সিটির ভোট সুষ্ঠু করতে তিন বিভাগীয় কমিশনার ও পুলিশ কমিশনারকে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে, যাতে ভোটের দিন পরিবেশ সুষ্ঠু থাকে এবং ভোটাররা নির্বিঘ্নে কেন্দ্রে যেতে পারেন। ইসি জানিয়েছে, হয়রানি বা অন্য কোনো উদ্দেশ্যে তিন সিটিতে কাউকে ‘গণগ্রেফতার’ করা হচ্ছে না। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে।

গতকাল বিকালে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশন আইনশৃঙ্খলার শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিশেষ বৈঠক করে। এর আগে ইসি আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। দুই বৈঠকের বিষয় নিয়ে পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ। তিনি বলেন, রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রচারণায় অংশ নেওয়ায় গাজীপুর ও খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়রকে মৌখিকভাবে সতর্ক করা হয়েছে। স্পিকারকেও চিঠি দেওয়া হয়েছে, যাতে সংসদ সদস্যরা নির্বাচনে প্রচারণায় অংশ নিতে না পারেন। সচিব বলেন, হয়রানি বা অন্য কোনো উদ্দেশ্যে তিন সিটিতে কাউকে ‘গণগ্রেফতার’ করা হচ্ছে না। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। এদিকে বিএনপি অভিযোগ করে আসছে, ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে রাজশাহী, সিলেট ও বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থীর মনোনীত এজেন্টদের তুলে নিয়ে সাজানো মামলায়  গ্রেফতার দেখানো হচ্ছে।

ইসি সচিব বলেন, গণগ্রেফতার করা হচ্ছে প্রার্থীর অভিযোগ হতে পারে। তবে পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন গণগ্রেফতার করা হচ্ছে না। ওখানে (রাজশাহীতে) ককটেল বিস্ফোরণ ঘটেছে, সেটাকে  কেন্দ্র করে যারা যারা জড়িত শুধু তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। হয়রানি করার জন্য কাউকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না। সচিব জানান, পত্রপত্রিকায় বা অন্যভাবে যেসব তথ্য এসেছে সেগুলোর বিষয়ে পুলিশ কমিশনারদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে। তারা জানিয়েছেন কাউকে হয়রানির উদ্দেশ্যে নয়, সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে এবং মামলার ভিত্তিতে তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। বিএনপির লিখিত অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি জানান, এ ধরনের কোনো অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি। আমরা বিষয়গুলো তলিয়ে দেখছি। রিটার্নিং অফিসারের কাছে অভিযোগের তালিকা দেওয়া হয়েছে। তারাও বিষয়গুলো দেখছেন। তারা দেখছেন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া কাউকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না।

নির্বাচনের পরিবেশের বিষয়ে ইসি সচিব জানান,  এখন পর্যন্ত নির্বাচনী পরিস্থিতি অত্যন্ত ভালো বলে বৈঠকে জানানো হয়েছে। শান্তিপূর্ণভাবে প্রার্থীরা প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। কোথাও কোনো সমস্যা হচ্ছে না। হৃদ্যতাপূর্ণভাবে, সুষ্ঠুভাবে তারা প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন। বিভিন্ন সময় যেসব অভিযোগ আসছে এগুলো তাত্ক্ষণিকভাবে তারা সেগুলো খতিয়ে দেখছেন এবং সুরাহা করার ব্যবস্থা করছেন। নির্বাচন কমিশন কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে যেন সুষ্ঠু পরিবেশ অক্ষুণ্ন থাকে। নির্বাচনের দিন যেন এমন কোনো পরিবেশ সৃষ্টি না হয়, যাতে ভোটাররা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিতে বাধার সম্মুখীন না হয়।

আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে ইসি সচিব জানান, সামনের তিন সিটি নির্বাচনে যা যা সহযোগিতা প্রয়োজন তারা তা করবে। আমরা তাদের কাছে এ ধরনের কিছু বলিনি। উনারা বলেছেন, যেসব অভিযোগ ইসির বিরুদ্ধে হয়ে থাকে সেসব অভিযোগের ভিত্তি নেই। সরকারি দল এসব অভিযোগের প্রশ্রয়  দেয় না। কারণ, নির্বাচন কমিশন স্বাধীন সংস্থা, আইন কানুন বিধি বিধান অনুসারে পরিচালিত করবে। ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে কিনা— জানতে চাইলে সচিব বলেন, আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়গুলো ওভাবে আলোচনা হয়নি। ইডব্লিউজির প্রতিবেদন প্রসঙ্গে সচিব বলেন, ইডব্লিউজি এজন্য ক্ষমা চেয়েছে। তারা আমার সঙ্গে দেখা করেছে। লিখিতভাবে প্রতিটি পত্রিকায় তারা প্রতিবাদ দিয়েছে।

সর্বশেষ খবর