বৃহস্পতিবার, ২৬ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

সুইসাইডাল নোটে স্কুলছাত্রী মালিহার যত অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

সুইসাইডাল নোটে স্কুলছাত্রী মালিহার যত অভিযোগ

রুলকরা খাতার পাতায় নিজের আত্মহত্যার কারণ লিখে গেছে সুমাইয়া আক্তার মালিহা (১৪)। তার এই আত্মহত্যার জন্য নিজের স্কুলের এক শিক্ষিকার নাম উল্লেখ করেছে। গত মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে রাজধানীর শাহজাহানপুর এলাকার গুলবাগের বাসা থেকে পুলিশ মালিহার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে। ওই ঘর থেকেই তার হাতে লেখার একটি সুইসাইডাল নোট উদ্ধার করে পুলিশ। সুইসাইডাল নোটে মালিহা লিখেছে, ‘আমার Suicide করার কারণ একমাত্র রিমি মেডাম। সে শুধু আমাকে  দেখে তার জিদ কমানোর জন্য। সে অযথা পরীক্ষায় আমার খাতা নিসে। আর পরীক্ষায় কম নাম্বার দিসে।  তোমরা যদি পার তাহলে সে মেডামের মানসিক চিকিৎসা দাও। Mental Hospital এ পাঠাও। মেডাম আমারে অভিশাপ দিসে, তাই আমি ভালো result খারাপ হইছে। Maliha’. মালিহার লেখার সূত্র ধরে তার বাবা মোহাম্মদ আলী একটি মামলা দায়ের করেছেন। দায়ের করা মামলার ভিত্তিতে শিক্ষিকা রিমি আক্তারকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শাহজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম। মালিহা বংশাল কায়েতটুলি এলাকার মোহাম্মদ আলীর মেয়ে। তারা শাহজাহানপুর গুলবাগ পাওয়ার হাউস এলাকার ২৭৬/বি নম্বর বাসার ৬ তলায় ভাড়া থাকেন। মালিহা শহীদ ফারুক ইকবাল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। গত দশ-বারো দিন আগে তার পরীক্ষা শেষ হয়। শাহজাহানপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মনিরুজ্জামান জানান, ‘গত মঙ্গলবার রাতে খবর পেয়ে ওই বাসায় গেলে মেয়েটিকে ওড়না দিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় পাই। ঝুলন্ত অবস্থা থেকে নামিয়ে আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে বুধবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, এই ঘটনায় আত্মহত্যা প্ররোচনায় একটি মামলা হয়েছে। পরিবারের অভিযোগ, মালিহার কাছ থেকেই তারা জানতে পেরেছেন, পরীক্ষার সময় স্কুলের শিক্ষিকা রিমি আক্তার মালিহার পরীক্ষার খাতা কেড়ে নেন। বিষয়টি নিয়ে মালিহা মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং পরীক্ষায় তার ফল খারাপ হবে বলে ধারণা করতে থাকে। গত মঙ্গলবার রাতে মালিহার মা মুনমুন বেগম ছোট মেয়ে সামিহাকে নিয়ে পাশের ঘরে ছিলেন। মালিহা তার ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ করে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দেয়। অনেকক্ষণ ডাকাডাকির পর কোনো সাড়া না পেয়ে দরজা ভেঙে দেখি ফ্যানে ঝুলন্ত মৃতদেহ। পরে পুলিশ এসে ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে। মালিহার চাচাতো ভাই আলমগীর অভিযোগ করে বলেন, স্কুলের শিক্ষিকা রিমি শুধু মালিহার সঙ্গেই নয়, আরও অনেক ছাত্রীর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছেন বলে তারা জানতে পেরেছেন। তার কাছে কোচিং না করলে তিনি আচরণ খারাপ করেন, এমন অভিযোগও তাদের জানা রয়েছে। এদিকে, শিক্ষিকা রিমি আক্তারকে বুধবার বিকালে গ্রেফতার করে শাহজাহানপুর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।

সর্বশেষ খবর