বৃহস্পতিবার, ১৬ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা

কুয়াকাটায় মাকে বেঁধে মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা

পটুয়াখালী প্রতিনিধি

কলাপাড়া উপজেলার কুয়াকাটা গ্রামে মাকে বেঁধে রেখে ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীকে নিজ বসতঘরে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় বাসিন্দারা ঘটনাস্থলে গিয়ে বিবস্ত্র অবস্থায় ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে কুয়াকাটা ২০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। আহত অবস্থায় ওই ছাত্রীর মাকে উদ্ধার করে কুয়াকাটা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহত ছাত্রীর বাবা অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে ধর্ষণের পর হত্যা উল্লেখ করে মহীপুর থানায় মামলা করেছেন। তবে ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত তা নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ। এ ঘটনায় কেউ এখনো গ্রেফতার হয়নি।

নিহত স্কুলছাত্রীর চাচা জানান, রাতে একদল দুর্বৃত্ত তার ভাইয়ের ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। এ সময় তার ভাবী দৌড়ে পাশের বাড়ি গিয়ে ‘ডাকাত, ডাকাত’ বলে চিৎকার দিয়ে সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন। তার ডাকচিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে ঘরে দুই শিশুকে দেখতে পেলেও আরেক মেয়েকে খুঁজে পাননি। অনেক খোঁজাখুঁজির পর ঘরের দোতলায় বিবস্ত্র অবস্থায় তার নিথর দেহ তারা পড়ে থাকতে দেখেন। দ্রুত কুয়াকাটা ২০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার সময় স্কুলছাত্রীর বাবা ঘরে ছিলেন না। নিহত স্কুলছাত্রীর ওই চাচার দাবি, মা-মেয়ে দুজনই গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এলাকাবাসীর তথ্যমতে, দুর্বৃত্তরা সংখ্যায় চারজন ছিল। মুখোশ পরে তারা বাড়িতে ঢোকে। দুর্বৃত্তরা মা ও মেয়ে দুজনকেই ধর্ষণ করে। ধর্ষণের কারণে হয়তো শিশুটি মারা গেছে। নিহত স্কুলছাত্রীর ফুফুর ভাষ্য, ‘দুর্বৃত্তরা যখন ঘরে ঢোকে, তখন আমার ভাইয়ের বউ ঘুমাচ্ছিলেন। পাশে ছোট বাচ্চা দুটিও ঘুমাচ্ছিল। বাচ্চা দুটির মুখে স্কসটেপ লাগায় দুর্বৃত্তরা। এরপর মা ও মেয়ের ওপর অত্যাচার চালায়। আমরা এর বিচার চাই।’ ওই গ্রামের এক বাসিন্দা সাংবাদিকদের বলেন, ‘ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনা ঘটেছে বলে আমরা ধারণা করছি।’ কুয়াকাটা হাসপাতালের চিকিৎসক মো. আরিফুজ্জামান জানান, হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই ওই কিশোরী মারা গেছে। তবে প্রাথমিকভাবে তার মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে তিনি কিছু বলতে পারেননি।

মহীপুর থানার এসআই মো. হাফিজুর রহমান জানান, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। তবে কী কারণে হত্যার ঘটনা ঘটেছে তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। এ বিষয়ে জানতে মহীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, ‘নিহত কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে ধর্ষণের পর হত্যা উল্লেখ করে মামলা করেছেন। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। আসামি গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।’ পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার মইনুল ইসলাম বলেন, ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যাবে। মামলা হয়েছে। এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

সর্বশেষ খবর