শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ৩০ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা
ইভিএম নিয়ে তোলপাড়

ইভিএম পদ্ধতিকে স্বাগত জানিয়েছে আওয়ামী লীগ

রফিকুল ইসলাম রনি

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট গ্রহণের নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে আওয়ামী লীগ। তারা বলছে, চলমান পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ করা হলে, ব্যালট বাক্স ছিনতাই, ব্যালটে আগেই সিল মারার ঘটনা ঘটে।

সে কারণে সনাতন পদ্ধতির ঝামেলা এড়াতে এবং উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে, আমাদের তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের দিকে নজর দিতে হবে। দ্রুততম সময়ে নির্ভুল পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ এবং গণনার জন্য ইভিএম ব্যবহার খুব উপযোগী একটি পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে ভোট হলে কোনো প্রার্থী অভিযোগ করতে পারবে না। আবার সময় এবং টাকার খরচ কম হবে। এ ছাড়া ইতিমধ্যে স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে এই পদ্ধতি ব্যবহারের সুফল দেশবাসী পেয়েছে। সে বিবেচনায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএমে ভোট গ্রহণের ইসির সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলটির নেতারা। তবে মাঠের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ইভিএমের বিরোধিতা করে বলছে, সরকার নির্বাচনে ডিজিটাল কারচুপি করে ক্ষমতায় আসতে চায়। এটা সরকারের নীল নকশা। সূত্র মতে, গত বছর নির্বাচন কমিশন গঠনের সময় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগ চারটি সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দিয়েছিল। এই প্রস্তাবের চার নম্বরটি ছিল ‘অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য বিরাজমান সব বিধিবিধানের সঙ্গে জনগণের ভোটাধিকার অধিকতর সুনিশ্চিত করার স্বার্থে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ই-ভোটিং চালু করা’। দলটির নেতারা বলছেন, আওয়ামী লীগ সব সময় তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের দিক থেকে উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে চায়। বিশ্বের বিভিন্ন উন্নত দেশে নির্বাচনে ইভিএম পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। সে কারণে বাংলাদেশেও ইভিএমের ব্যবহার চান ক্ষমতাসীন দলের নেতারা।  এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘বিশ্বের উন্নত দেশ, উন্নত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে ইভিএম পদ্ধতি চালু আছে। আওয়ামী লীগ তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারের সবচেয়ে বেশি উন্নতির চেষ্টা করে। সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণ, নিরাপদ এবং দ্রুত করতে ইভিএম ব্যবহার করা হয়। ইতিমধ্যে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের সময়ে কিছু এলাকায় ইভিএম ব্যবহার করা হয়েছে। জনগণ দ্বারা এটি সমাদৃত হয়েছে। আগামী নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারে ইসির সিদ্ধান্তকে আমি স্বাগত জানাই। তবে ইভিএম যন্ত্রপাতি ক্রয়সহ এটি ব্যবহারের বিষয়ে প্রশিক্ষণের দরকার রয়েছে।’ সরকার ডিজিটাল কারচুপির নীল নকশা বাস্তবায়ন করছে— বিএনপি নেতাদের এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের এ প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, ‘বিএনপি বরাবরই প্রযুক্তি ব্যবহারে ভয় পায়। ১৯৯২ সালে যখন দেশে বিনামূল্যে সাবমেরিন কেবল স্থাপনের প্রস্তাব এসেছিল, তখন তারা তা ফিরিয়ে দিয়ে বলেছিল, দেশের সব তথ্য পাচার হয়ে যাবে। বিএনপি তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার জানে না। সরকার নীল নকশা করছে এমন বক্তব্য অশিক্ষিত লোকদের মতো কথাবার্তা। পশ্চাৎপদ চিন্তাভাবনা। আশা করি তারা উন্নত প্রযুক্তিকে স্বাগত জানিয়ে আধুনিক চিন্তা-চেতনা নিয়ে দল পরিচালনা করবে।’ আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত একাধিক নেতা জানিয়েছেন, আগামী মাসেই শুরু হবে আওয়ামী লীগের পোলিং এজেন্টদের প্রশিক্ষণ। এই প্রশিক্ষণে ইভিএম পদ্ধতি ব্যবহার শেখানো হতে পারে। দলটির নেতারা মনে করেন, নির্বাচনে হেরে গিয়ে পরাজিত প্রার্থীরা ভোট গ্রহণ পদ্ধতি নিয়ে নানামুখী অভিযোগ করেন। ইভিএম পদ্ধতি চালু করা হলে সেই অভিযোগ বন্ধ হবে। একই সঙ্গে সময় এবং টাকা খরচ কমে আসবে বলে মনে করেন তারা। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমরা বার বার বলে আসছি, নির্ভুল, ত্রুটিপূর্ণ ও সঠিক পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ করতে হলে আধুনিক পদ্ধতির দিকে যেতে হবে। তা না হলে প্রতিটা নির্বাচনের সময়ই ভোট কারচুপির অভিযোগ থাকে। এ ছাড়া ব্যালেট বাক্স ছিনতাই, ব্যালট বাক্সে সিল মারার অভিযোগ ওঠে। ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ করা হলে ওই সব অভিযোগ আর উঠবে না। আমরা মনে করি, ঝামেলামুক্ত ভোট গ্রহণ করতে হলে তথ্যপ্রযুক্তির দিকেই যেতে হবে। অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন যদি ইভিএম ব্যবহার করে, তাহলে স্বাগত জানাবে আওয়ামী লীগ।’

সর্বশেষ খবর