শিরোনাম
রবিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
সাক্ষাৎকার

মুনাফা সুশাসনে আর্থিক খাতের শীর্ষ প্রতিষ্ঠান অগ্রণী ব্যাংক

—ড. জায়েদ বখত

আলী রিয়াজ

মুনাফা সুশাসনে আর্থিক খাতের শীর্ষ প্রতিষ্ঠান অগ্রণী ব্যাংক

ব্যাংক খাতে মূল সমস্যা সুশাসন। দীর্ঘ সময় সুশাসনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো এখন অনেক বেশি স্বচ্ছ। অগ্রণী ব্যাংকও এর বাইরে ছিল না। নানা সংকট কাটিয়ে মুনাফা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সরকারি সবগুলো ব্যাংকের শীর্ষ প্রতিষ্ঠান এখন অগ্রণী ব্যাংক। আমাদের তারল্য সংকট নেই। অনিয়ম,             দুর্নীতির বাইরে একটি স্বচ্ছ প্রতিষ্ঠান হিসেবে অগ্রণী ব্যাংককে সর্বোচ্চ অবস্থানে নিয়ে এসেছি। অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. জায়েদ বখত সম্প্রতি ব্যাংক খাত, অর্থনীতি, প্রবৃদ্ধি নিয়ে কথা বলেন বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে। জায়েত বখত বলেন, সরকারি ব্যাংকগুলোর পরিচালন পর্ষদ গঠন নিয়ে নানা সমালোচনা ছিল। এগুলো এখন সমালোচনা কাটিয়ে উঠেছে। অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের ভূমিকায় প্রতিটি ব্যাংকের পর্ষদ অনেক বেশি দক্ষ ও যোগ্য। ব্যাংকিং অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তিরাই এখন বেশির ভাগ পর্ষদের সদস্য। ফলে ব্যাংকগুলোতে এখন ঋণ প্রদানে স্বচ্ছতা ও সুশাসন ফিরে এসেছে। তিনি বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংকের মধ্যে শীর্ষ প্রতিষ্ঠান এখন অগ্রণী ব্যাংক। আমাদের ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ২০ শতাংশের বেশি ছিল। এটা এখন ১৫ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। আমাদের ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট ও পর্ষদের মধ্যে সমন্বয় অনেক বেশি। ফলে কাজের দ্রুততা ও স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ব্যাংক ঋণের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের অনিয়ম হওয়ার সুযোগ নেই। ইন্টারনাল কাউন্টার পার্ট অ্যারেজমেন্ট বিভাগ নামে সম্পূর্ণ স্বাধীন একটি বিভাগ খোলা হয়েছে, যারা প্রকল্প পরিদর্শন থেকে শুরু করে সব কিছু নিরীক্ষা করে পর্ষদের কাছে প্রতিবেদন দিচ্ছে, নিজেদের মতামত তুলে ধরে প্রকল্প সম্পর্ক বিস্তারিত জানাচ্ছে। এতে কোনো কর্মকর্তার হাত থাকে না। ফলে ঋণ প্রদানে কোনো ধরনের অনিয়ম হওয়ার সুযোগ নেই। তিনি বলেন, ব্যাংকে পদোন্নতির ক্ষেত্রে আমরা একটি নিয়ম করে দিয়েছি। কোনো ধরনের তদবির, লবিং করে অগ্রণী ব্যাংকে পদোন্নতির সুযোগ নেই। যারা ডিজিএম থেকে জিএম হবেন, তাদের পরীক্ষা নিয়েই দেওয়া হচ্ছে। তারা যদি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন, তবে পদোন্নতি হবে। জায়েদ বখত বলেন, অগ্রণী ব্যাংকের প্রতিটি বিভাগের কাজের সমন্বয় আনতে আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। সারা দেশে আমাদের ৯৪৪টি শাখায় এখন অনলাইন। যে কোনো শাখার সমস্যা বা অন্য কিছু সরাসরি ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগে যোগাযোগ করতে পারছে। এ ছাড়া ব্যাংকের লেনদেনের ক্ষেত্রে তাত্ক্ষণিক সুবিধা পাচ্ছে গ্রাহক। অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের ব্যাংক সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণ করে। মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের পাশাপাশি ব্রুনাইয়ে রেমিট্যান্স আহরণের জন্য চুক্তি করেছি সে দেশের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে। এভাবে যেখানেই আমাদের নাগরিকরা রয়েছেন সেখানে রেমিট্যান্স সংগ্রহের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছি। বিশিষ্ট এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ব্যাংক খাত এখন সংকট কাটিয়ে উঠেছে। সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকটি বেসরকারি ব্যাংকের ঘটনার সঙ্গে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের সম্পর্ক নেই। এগুলো কিছুটা ভিন্ন ধরনের ঘটনা। সরকারি ব্যাংকগুলো বেসরকারি ব্যাংকের সংকট মোকাবিলায় অর্থ সরবরাহ করেছে। সার্বিক অর্থনীতি নিয়ে তিনি বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা, অস্থিতিশীলা যদি না থাকত তাহলে আমাদের প্রবৃদ্ধি আরও বেশি হতো। ক্ষমতার ধারাবাহিকতা না থাকলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বা উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্ত হয়। বর্তমানে দেশের আর্থিক কাঠামো একটি শক্তিশালী ভিত পেয়েছে। এডিবিও বলেছে প্রবৃদ্ধি সাড়ে ৭ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, তারল্য পরিস্থিতি সবই ইতিবাচক। ব্যাংক ঋণের সুদের হার কমানোয় বিনিয়োগ পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। ফলে আর্থিক খাতে আপাতত কোনো শঙ্কার কারণ নেই।

সম্পাদনা : মুজাহিদ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর