রবিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

পদ্মা সেতু এখন শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু

মূল কাজের ৭০ ভাগ শেষ

মুন্সীগঞ্জ ও শরীয়তপুর প্রতিনিধি

দেশের মানুষের প্রবল ইচ্ছায় সেতু মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিয়েছে পদ্মা সেতুর নামকরণ হবে ‘শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু’। গতকাল দুপুরে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে সেতু কাজের সার্বিক অগ্রগতি পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ কথা জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু থেকে সরে যাওয়ার পর নিজস্ব অর্থায়নে সেতু নির্মাণের সাহস দেখিয়েছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার একক সাহসের সোনালি ফসল পদ্মা সেতু আজ দৃশ্যমান। তার একক অবদানের জন্য এ সেতু নির্মাণ হচ্ছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী সৎসাহস দেখিয়ে প্রমাণ করেছেন তিনি বঙ্গবন্ধুর বীর কন্যা। সে কারণে ৩১ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নিজস্ব অর্থায়নে সেতু নির্মাণ হচ্ছে। সেতুর নামকরণের বিষয়ে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন থেকে বহু চিঠিপত্র আসে, সবার অভিমত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে সেতুটির নামকরণ হোক। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ জনমতের প্রতিফলন ঘটাতে চায়। তাই ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতুর নামে নামকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি ‘শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু’। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, এ পর্যন্ত পদ্মা সেতুর সার্বিক কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৫৯ শতাংশ এবং মূল সেতুর অগ্রগতি ৭০ শতাংশ। আগামী ১৩ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ    হাসিনা পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তে এসে এই সফলতার বিষয়টি প্রকাশ করবেন। ততদিনে এ সেতুর কাজ ৬০ ভাগ শেষ হবে। তিনি বলেন, ১৩ অক্টোবর নাগাদ সার্বিক কাজের ৬০ ভাগ সম্পন্ন হবে। আর এ ৬০ ভাগ কাজের মধ্যে পদ্মা সেতুর মাওয়া থেকে মাদারীপুর-ভাঙ্গা পর্যন্ত অ্যাপ্রোচ সড়ক, ১ হাজার ৩০০ মিটার নদীরক্ষা কাজ, পদ্মা সেতুতে রেলওয়ে বক্স স্ল্যাব, ছয় লেন অ্যাপ্রোচ রোডের উদ্বোধন করবেন বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে সেতুমন্ত্রী বিশেষ নৌযানে চড়ে পদ্মা সেতু নির্মাণের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজ ঘুরে দেখেন। এরপর তিনি জাজিরা প্রান্তে গিয়ে সেতুর ৫টি স্প্যান ও স্প্যানে রেলসংযোগের স্ল্যাব বসানোর কাজও প্রত্যক্ষ করেন। শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার নাওডোবা পদ্মা প্রান্তের সিনোহাইড্রোর জাজিরা ঘাটে এসে মন্ত্রী সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর কাজ সঠিক সময় সম্পন্ন হতো। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে একটু দেরি হচ্ছে। সেখান থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন তিনি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম, পদ্মা সেতু প্রকল্পের প্রকৌশলী দেওয়ান আবদুল কাদের, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শ্রীনগর সার্কেল কাজী মাকসুদা লিমা প্রমুখ। এ ছাড়া শরীয়তপুর ও মাদারীপুর জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, সড়ক ও জনপথ বিভাগ, সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। প্রকল্পসূত্র জানায়, ২০০৯ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতু প্রকল্পের শুরু থেকে গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ১৫ হাজার ৭৬ কোটি টাকা, যা মোট বরাদ্দের ৫২ দশমিক ৩৬ শতাংশ। এ ছাড়া সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারে থাকা এ প্রকল্পে চলতি অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে বরাদ্দ ছিল ৫ হাজার ৫২৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। সেখান থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত খরচ হয়েছে ১ হাজার ২৭ কোটি ৭৮ লাখ টাকা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর