বুধবার, ১৭ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা
ঐতিহ্য

নওগাঁর মহাত্মা গান্ধী আশ্রম

বাবুল আখতার রানা, নওগাঁ

নওগাঁর মহাত্মা গান্ধী আশ্রম

ইংরেজবিরোধী আন্দোলনের পথিকৃৎ, অহিংস রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, ভারতবর্ষের জনপ্রিয় নেতা মহাত্মা গান্ধীর স্মৃতিবিজড়িত গান্ধী আশ্রম। নওগাঁ জেলা শহর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে আত্রাই উপজেলায় অবস্থিত এ আশ্রমটি হতে পারে একটি আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র। আশ্রমটিতে ভারতীয় অর্থায়নে মহাত্মা গান্ধী ও পিসি রায় মেমোরিয়াল হল গড়ে উঠেছে। একতলা ভবনটি দ্বিতলায় উন্নীত করা হচ্ছে। গান্ধীর স্মৃতিবিজড়িত গুদাম ঘরটিও সংস্কার করা হচ্ছে। এ ছাড়াও নওগাঁ জেলা পরিষদের অর্থায়নে সেখানে বাউন্ডারি ওয়াল ও দৃষ্টিনন্দন গেট নির্মাণ করা হয়েছে। ইংরেজবিরোধী আন্দোলনের ডাক দিয়ে জনমনে জায়গা করে নেন ভারতবর্ষের কিংবদন্তি মহাত্মা গান্ধী। হিন্দু-মুসলমান ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে ধর্ম বর্ণের ঊর্ধ্বে থেকে তিনি এ আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন। ইংরেজদের পণ্য বর্জন করে দেশীয় পণ্য ব্যবহারে জনমত সৃষ্টি করেন। জনশ্রুতি আছে, মহাত্মা গান্ধী এ আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য ১৯২৫ সালে আত্রাই এসেছিলেন। সে সময় আত্রাই রেলওয়ে স্টেশনসংলগ্ন আজকের এই গান্ধী আশ্রমে অবস্থান করে এলাকার অসহায় মানুষকে সহযোগিতা করেন। একই সঙ্গে এলকাবাসীকে আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তুলতে তিনি এখানে খদ্দর কাপড় তৈরির তাঁতশিল্প এবং খাঁটি সরিষার তেলের জন্য ঘানি স্থাপন করেন। এ বিষয়ে গান্ধী আশ্রমের সেক্রেটারি জেনারেল ডা. নিরঞ্জন কুমার দাস বলেন, এক সময় গান্ধী আশ্রমের উন্নয়ন মুখ থুবড়ে পড়েছিল। স্থানীয় এমপি ইসরাফিল আলম ও সাবেক এমপি ওহিদুর রহমানকে উপদেষ্টা করার পর তাদের প্রচেষ্টায় এখানে গড়ে তোলা হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন মহাত্মা গান্ধী ও পিসি রায় মেমোরিয়াল হল। এখানে প্রতি বছর পালিত হয় গান্ধীর জন্মোৎসব। ইসরাফিল আলম এমপি বলেন, মহাত্মা গান্ধীর স্মৃতিধন্য গান্ধী আশ্রম এখন আর অবহেলিত নেই।

উন্নয়নের ছোঁয়ায় এটি একটি পর্যটন কেন্দ্রে রূপান্তরিত হতে চলেছে। ইতিমধ্যে এখানে সুদৃশ্য বসার জায়গা ও পানির ফোয়ারার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে এখানে আধুনিক মডেলের ডাকবাংলো, বিভিন্ন ভাস্কর্য নির্মাণ ও প্রয়োজনীয় অবকাঠামো গড়ে তোলা হবে। গান্ধী আশ্রমের সভাপতি অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম বলেন, বর্তমান এমপি ও সাবেক এমপির প্রচেষ্টায় গান্ধী আশ্রম অনেক দূর এগিয়েছে। এখানে একটি পূর্ণাঙ্গ দাতব্য চিকিৎসালয়, কৃষি খামার, মৎস্য খামারসহ বেশ কিছু স্থাপনা গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে। যেহেতু আশ্রমটি উপজেলা সদরের একেবারেই সন্নিকটে, রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন এবং মনোরম পরিবেশে, তাই এখানে উল্লিখিত স্থাপনাগুলো নির্মিত হলে ও প্রয়োজীয় অবকাঠামো গড়ে তুলতে পারলে এটি একটি আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠবে।

সর্বশেষ খবর