শনিবার, ২০ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা
বাংলাদেশ প্রতিদিনের সাংবাদিক সেজে প্রতারণা

দুষ্ট চক্রের অনেকেরই নাম বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ প্রতিদিনের সাংবাদিক সেজে প্রতারণায় জড়িত চক্রের সদস্যদের অনেকেরই নাম বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে। এরা বখাটে প্রকৃতির যুবকদের কাছ থেকে কমিশনপ্রাপ্তির বিনিময়ে ভুয়া আইডি কার্ড দেয়, যে কার্ড ব্যবহার করে প্রতারকরা দিনের পর দিন মানুষকে করছে প্রতারণা। করছে ব্ল্যাকমেইল। বাংলাদেশ প্রতিদিনের সাংবাদিক সেজে ব্ল্যাকমেইল করতে গিয়ে গ্রেফতার নেয়ামত  উল্যাহ শিমুল ও শয়নকে রিমান্ডে নেওয়ার পর জিজ্ঞাসাবাদে তারা এই তথ্য দেন। তারা বুধবার গ্রেফতার হন। আদালতের নির্দেশে এ দুই প্রতারককে এক দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে মিরপুর থানা পুলিশ। তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, গ্রেফতার দুই ভুয়া সাংবাদিক শয়ন ও শিমুলকে একটি প্রতারক চক্র ‘নিয়োগ’ দেয়। তারা নিজেদের বাংলাদেশ প্রতিদিনের অনুসন্ধানী সেলের রিপোর্টার বলে পরিচয় দিতেন। এ চক্রে জড়িত রয়েছেন বেশ কথিত প্রভাবশালী কিছু সাংবাদিক। এরা দীর্ঘদিন ধরে মানুষকে ব্ল্যাকমেইল করে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। তাদের অন্যতম কৌশল হচ্ছে— উচ্চ শ্রেণি-পেশার মানুষকে মাদক ব্যবসায়ী, নাশকতায় জড়িত বিএনপি নেতা ও জঙ্গি মদদদাতা আখ্যা দিয়ে হয়রানিমূলক প্রতিবেদন করা। বিভিন্ন অখ্যাত সাপ্তাহিক ও অনলাইনে সংবাদ ছাপিয়ে প্রথমে তারা চাঁদাবাজি করে, পরে হুমকি দেয়, ‘আমরা যে অঙ্কের টাকা চাই তা এখনই দাও, নইলে বাংলাদেশ প্রতিদিনেও তোমাদের বিরুদ্ধে নিউজ করা হবে।’ মিরপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ওয়াহিদুজ্জামান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘দুই আসামির কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আমরা পাচ্ছি। এসব তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। তবে যেসব নাম বেরিয়ে আসছে তাদের এরই মধ্যে নজরদারিতে রাখা হয়েছে।’ এর আগে আদালতে গ্রেফতারকৃতদের পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, শিমুল, শয়নসহ অজ্ঞাত আরও সাত-আট ব্যক্তি বহুল প্রচারিত বাংলাদেশ প্রতিদিনের ভিজিটিং কার্ড ও আইডি কার্ড তৈরি করে নিজেদের ওই পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয় দেন। এ ছাড়া তারা বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের হুমকি দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ আদায়ের পর আত্মসাৎ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ১০ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১০টায় মিরপুরের জনৈক করিম মিয়ার কাছ থেকে তারা ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। এ ঘটনায় করিম মিয়া বাংলাদেশ প্রতিদিন কার্যালয়ে এসে কর্তৃপক্ষের কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেন। পরে পত্রিকাটির প্রশাসনিক কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান আসলাম বাদী হয়ে মিরপুর থানায় মামলা করেন। অভিযান পরিচালনাকারী ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (পশ্চিম) জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ মাহমুদ হাসান বলেন, ‘গ্রেফতারকৃতরা একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। মুখোশের আড়ালে এ চক্রের সঙ্গে জড়িত অনেক “নামি” মানুষও। অনেক প্রমাণ আমদের কাছে এসেছে। আমরা এগুলো যাচাই-বাছাই করছি।’

সর্বশেষ খবর