ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অধীন ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের পুনরায় পরীক্ষা নেওয়া হবে। পরীক্ষার আগে প্রশ্নফাঁস হওয়ার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনস কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গতকাল দুপুরে পুনরায় ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়টি সাংবদিকদের জানান ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান। মিটিংয়ে অংশগ্রহণকারী আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন ও ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে ডিনস কমিটি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরবর্তী পরীক্ষার তারিখ সংশ্লিষ্ট অনুষদের ডিন নির্ধারণ করবেন। এর আগে গতকাল সকালেও এই ভর্তি পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। যাচাই-বাছাই সাপেক্ষে পুনরায় এই ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার দাবিতে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দেয় ছাত্রলীগ। বেলা ১২টার দিকে চার দফা দাবিতে উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামানকে স্মারকলিপি প্রদান করে ঢাবি শাখা ছাত্রলীগ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপউপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক নাসরীন আহমাদ, উপউপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ, প্রক্টর অধ্যাপক গোলাম রব্বানী। স্মারক প্রদানের সময় ছাত্রলীগের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনটির ঢাবি শাখার সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন, ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনসহ সংগঠনটির বিভিন্ন ইউনিটের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে তারা একটি মৌন মিছিল করে। অন্যদিকে পরীক্ষা বাতিল করাসহ প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে কোটা সংস্কার আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গড়ে ওঠা প্ল্যাটফর্ম ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’। গতকাল বেলা সাড়ে ১২টার দিকে দিকে তারা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। এতে প্রায় তিন শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেয়। ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে তারা সন্ত্রাসবিরোধ রাজু ভাস্কর্যে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে। প্রসঙ্গত, গত ১২ অক্টোবর সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত এই ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ ওঠে। পরীক্ষা শুরুর ৪৩ মিনিট আগে ৭২টি প্রশ্ন উত্তরসহ হোয়াটস অ্যাপ, মেসেঞ্জারসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ভর্তিচ্ছুদের হাতে চলে যায়। এই প্রশ্নগুলো ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের সঙ্গে হুবহু মিলে যায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসন তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটি পরীক্ষায় ডিজিটাল জালিয়াতির প্রমাণ পায়। জালিয়াতির অভিযোগে প্রশাসন পাঁচজনকে আটকও করে। পরে ১৬ অক্টোবর ফল প্রকাশ স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েও ওই দিন পুনরায় ফল প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।