শিরোনাম
রবিবার, ২৮ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

আওয়ামী লীগে প্রার্থীর ছড়াছড়ি বিএনপির গলার কাঁটা জামায়াত

দিনাজপুর প্রতিনিধি

আওয়ামী লীগে প্রার্থীর ছড়াছড়ি বিএনপির গলার কাঁটা জামায়াত

জেলার সবচেয়ে বড় সংসদীয় আসন দিনাজপুর-৬। নবাবগঞ্জ, ঘোড়াঘাট, হাকিমপুর ও বিরামপুর উপজেলা নিয়ে এ আসনটি গঠিত। এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক। তার দলীয় মনোনয়ন নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা আছে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে। আসনটিতে তীব্র দলীয় কোন্দল আছে। ফলে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে। বর্তমান এমপি ছাড়াও আওয়ামী লীগে সম্ভাব্য প্রার্থীর ছড়াছড়ি।

মনোনয়নপ্রত্যাশী সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলতাফুজ্জামান মিতা বলেন, দলের জন্য নিবেদিতপ্রাণ ও ত্যাগী নেতাদের অবমূল্যায়ন করায় চারটি উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে। তবে এসব অভিযোগ নাকচ করে শিবলী সাদিক দাবি করেন, আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে দু-একজন অপপ্রচার চালাচ্ছেন। দলের মধ্যে কোনো কোন্দল বা দ্বন্দ্ব নেই। সমানভাবে চার উপজেলায় উন্নয়ন করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা হলেন— বর্তমান সংসদ  সদস্য শিবলী সাদিক, সাবেক সংসদ সদস্য আজিজুল হক চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলতাফুজ্জামান মিতা, নবাবগঞ্জ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান, বিরামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মিজানুর রহমান মণ্ডল, বিরামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পারভেজ কবির, বিরামপুরের সাবেক পৌর চেয়ারম্যান আক্কাস আলী, আওয়ামী লীগের ঘোড়াঘাট উপজেলার সহ-সভাপতি কাজী মাকসুদুর রহমান চৌধুরী (লাবু চৌধুরী) এবং নবাবগঞ্জ উপজেলার জয়পুর ইউপি চেয়ারম্যান আইনুল হক চৌধুরী। এদিকে বিএনপির সঙ্গে জোটভিত্তিক নির্বাচন হলে আসনটি জামায়াতে ইসলামী চাইবে। কয়েকবার এ আসন থেকে জামায়াতের প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। গত দুই নির্বাচনেও আসনটি জামায়াতকে ছেড়ে দেয় বিএনপি। তবে গত উপজেলা নির্বাচনে চারটি উপজেলার মধ্যে তিনটিতেই জয়লাভ করেন বিএনপি প্রার্থীরা। এদিক থেকে বিএনপি সুবিধাজনক অবস্থানে থাকলেও তাদের গলার কাঁটা হতে পারে জামায়াত। এ আসনে জামায়াতের শক্ত অবস্থান রয়েছে। তাই জামায়াত এ আসন বিএনপিকে ছাড় দিতে রাজি নয়। এ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা হলেন— দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ও চিকিৎসক নেতা ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন ও জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক লুত্ফর রহমান মিন্টু। জামায়াতের প্রার্থী আজিজুর রহমান চৌধুরী ১৯৯১ সালে এককভাবে নির্বাচন করে বিজয়ী হন। ২০০১ সালেও চারদলীয় জোটের এমপি নির্বাচিত হন তিনি। ২০০৮ সালে তিনি মারা যান। এরপর নবম সংসদ নির্বাচনে জয়লাভ করেন আওয়ামী লীগের আজিজুল হক চৌধুরী। তখন জামায়াতের প্রার্থী ছিলেন মো. আনোয়ারুল ইসলাম। আগামী নির্বাচনেও জোট থেকে জামায়াতের এ প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া হবে এটাই প্রত্যাশা নেতা-কর্মীদের। এ কারণে এ আসনে জেলা জামায়াতের আমির আনোয়ারুল ইসলামের পক্ষে জামায়াত নেতা-কর্মীরা নীরবে কাজ শুরু করে দিয়েছেন। জাতীয় পার্টি নেতারা বলছেন, ২০০৮ সালে আসনটি জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা থাকলেও শেষ পর্যন্ত কথা রাখেনি আওয়ামী লীগ। জাতীয় পার্টির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের তালিকায় রয়েছেন— আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি শিবলী সাদিকের চাচা, জাপার কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি দেলোয়ার হোসেন। আগামী নির্বাচনে জাতীয় পার্টি থেকে তার চাচা দেলোয়ার হোসেনের সম্ভাব্য প্রার্থী হওয়া নিয়ে অনেকটা বিব্রত এমপি শিবলী সাদিক। তবে চাচা কিংবা ভাতিজা কেউ একজন প্রার্থী হলে অপরজন ছাড় দিতে পারে বলে জানা গেছে। মহাজোটের আরেক শরিক ন্যাপের কেন্দ্রীয় মহাসচিব ও সাবেক এমপি কাজী লুত্ফর রহমান এ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী বলে তার অনুসারীরা জানান।

সর্বশেষ খবর