শিরোনাম
রবিবার, ২৮ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি নাগরিকত্বের রেকর্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক, যুক্তরাষ্ট্র

গত বছর পর্যন্ত এক দশকে ইমিগ্র্যান্ট ও নন-ইমিগ্র্যান্ট ভিসায় ২ লাখ ৭৭ হাজার ৭২৭ বাংলাদেশি গেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। অন্যদিকে গত আট বছরে লাল-সবুজ পাসপোর্ট বিসর্জন দিয়ে মার্কিন সিটিজেন হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছেন ৬৮ হাজার ১৯৫ জন। ইউএস সিআইএস ও হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্ট থেকে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, ২০০৮ থেকে ২০১৭ সালে মোট ১ লাখ ৩৩ হাজার ৩৪৬ বাংলাদেশি গেছেন গ্রিনকার্ড নিয়ে। অর্থাৎ তারা পারিবারিক কোটা অথবা ডিভি লটারি কিংবা অন্য কোনো পন্থায় ইমিগ্র্যান্ট ভিসা লাভ করেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১৭ হাজার ১৪৭ জন গেছেন ২০১৬ সালে। দ্বিতীয় বৃহৎ হচ্ছে ১৫ হাজার ৪৯৪ জন, ২০০৯ সালে। ২০০৮ সালে ৯ হাজার ৪০৯, ২০১০ সালে ১৩ হাজার ২৮৭, ২০১১ সালে ১৫ হাজার ১৯, ২০১২ সালে ১৩ হাজার ৭৭৪, ২০১৩ সালে ১০ হাজার ৬৯৩, ২০১৪ সালে ১২ হাজার ৯৯, ২০১৫ সালে ১৪ হাজার ৯৩ ও ২০১৭ সালে গেছেন ১২ হাজার ৩৩১ জন। নন-ইমিগ্র্যান্ট তথা স্টুডেন্ট, ট্যুরিস্ট, বিজনেস, কূটনৈতিক ভিসায় গেছেন ১ লাখ ৭৪ হাজার ৩৮১ জন। সবচেয়ে বেশি ২০১৪ সালে ৩৫ হাজার ২৫ জন। আর ২৮ হাজার ৮০ জন গেছেন ২০১৩ সালে। ২০০৮ সালে ৮ হাজার ৬২৭, ২০০৯ সালে ১০ হাজার ৫৪৪, ২০১০ সালে ১১ হাজার ১০৬, ২০১১ সালে ১১ হাজার ২৩৮, ২০১২ সালে ১৫ হাজার ৯১১, ২০১৩ সালে ২৮ হাজার ৮০, ২০১৫ সালে ২১ হাজার ৬৩৬, ২০১৬ সালে ১৭ হাজার ৭১৫ এবং ২০১৭ সালে গেছেন ১৪ হাজার ৪৯৯ জন বাংলাদেশি।

এর মধ্যে কতজন ফিরেছেন সে তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি। তবে অনেকেই বিয়ে, বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান ইত্যাদি প্রক্রিয়ায় গ্রিনকার্ড লাভ করেন। ইউএসসিআইএসের তথ্যানুযায়ী, ২০১৬ সালে সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশি (৯ হাজার ৯৪৯) সিটিজেনশিপ নিয়েছেন। সবচেয়ে কম ৬ হাজার ৯৭৯ জন সিটিজেন হিসেবে শপথ নেন ২০১০ সালে। ২০১১ সালে ৭৩৫, ২০১২ সালে ৮ হাজার ৪১৭, ২০১৩ সালে ৯ হাজার ৫৭১, ২০১৪ সালে ৭ হাজার ৪৭৫, ২০১৫ সালে ৯ হাজার ৭৫০ এবং ২০১৭ সালে ৮ হাজার ৬২৯ জন সিটিজেন হয়েছেন। গ্রিনকার্ড পাওয়ার পাঁচ বছর পরই সিটিজেন হওয়া যায় প্রচলিত রীতি অনুযায়ী। তবে এর সঙ্গে আরও কিছু বিধি অনুসরণ করতে হয়। জানা গেছে, ডিভি লটারি থেকে বাংলাদেশের নাম বাদ যাওয়ার পর ইমিগ্র্যান্ট ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে আসার সংখ্যা কিছুটা কমেছে। তবে পারিবারিক কোটা বহাল থাকায় সে ঘাটতি পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আগ্রহ অনুযায়ী পারিবারিক কোটা সংস্কারের যে উদ্যোগ পরিলক্ষিত হচ্ছে তা বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশি আগমনের হার ক্রমান্বয়ে কমবে বলে সবার ধারণা। কেবল মেধাবী, দক্ষ ও উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন স্বজনরাই তখন ইমিগ্র্যান্ট ভিসার যোগ্য হবেন। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, ট্রাম্পের অভিবাসনবিরোধী মনোভাবকে ধরাশায়ী করতে ৬ নভেম্বরের মধ্যবর্তী নির্বাচনের গুরুত্ব অপরিসীম এবং ডেমোক্র্যাটরা এ ব্যাপারে ঐক্যবদ্ধ।

সিটিজেনশিপে ভারতীয়রা : গত বছর ৫০ হাজার ৮০২ জন ভারতীয় শপথ নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সিটিজেন হিসেবে। আগের বছরের চেয়ে তা ৪ হাজার বেশি। ২০১৫ সালে শপথ নেন ৪২ হাজার ২১৩ জন ভারতীয়। অর্থাৎ প্রতি বছর গড়ে ৪ হাজার জন করে বেড়েছে। গত বছর মোট ৭ লাখ ৭ হাজার ২৬৫ জন বিদেশি শপথ নেন আমেরিকার নাগরিক হিসেবে। আগের বছর সে সংখ্যা ছিল ৭ লাখ ৫৩ হাজার ৬০। তারও আগের বছর ছিল ৭ লাখ ৩০ হাজার ২৫৯। অর্থাৎ সারা বিশ্বের লোকজনের সিটিজেনশিপ গ্রহণের পরিমাণ ক্রমেই বেড়েছে ভারতীয়দের। গত বছর সবচেয়ে বেশি মেক্সিকান শপথ নেন, ১ লাখ ১৮ হাজার ৫৫৯ জন। অনেক কম হলেও ভারতীয়রা হচ্ছে দ্বিতীয় বৃহত্তম অভিবাসী এবং তৃতীয় শীর্ষে রয়েছে চীন ৩৭ হাজার ৬৭৪ জন। চতুর্থ ফিলিপাইন, ৩৬ হাজার ৮২৮। ডমিনিকান রিপাবলিকের ২৯ হাজার ৭৩৪ ও কিউবার ২৫ হাজার ৯৬১ জন শপথ নিয়েছেন গত বছর। গত বছর সিটিজেন হিসেবে শপথ গ্রহণকারীর মধ্যে মহিলার সংখ্যা বেশি, ৩ লাখ ৯৬ হাজার ২৩৪ জন। গত বছর শপথ গ্রহণকারী ভারতীয়ের মধ্যে ১২ হাজার জন বাস করছেন ক্যালিফোর্নিয়ায়। এর পরে রয়েছেন নিউজার্সিতে ৫ হাজার ৯০০ ও টেক্সাসে ৩ হাজার ৭০০।

সর্বশেষ খবর