সোমবার, ২৯ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

আওয়ামী লীগে আফিল না লিটন বিএনপিতে প্রার্থীর ছড়াছড়ি

সাইফুল ইসলাম, যশোর

আওয়ামী লীগে আফিল না লিটন বিএনপিতে প্রার্থীর ছড়াছড়ি

যশোরের সীমান্তবর্তী উপজেলা শার্শা নিয়ে যশোর-১ সংসদীয় আসন। দেশের সবচেয়ে বড় স্থলবন্দর বেনাপোল এ আসনেই। আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের একটি বড় অংশই এ বন্দর দিয়ে হয়। এখান থেকে সরকার প্রতি বছর কয়েক হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আয় করে।

গত ১০টি সংসদ নির্বাচনে এ আসনে আওয়ামী লীগ পাঁচবার, বিএনপি তিন, জাতীয় পার্টি ও জামায়াতে ইসলামী একবার করে জয়ী হয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতা তবিবর রহমান সরদার একাই তিনবার ১৯৭৩, ১৯৯১ এবং ১৯৯৬ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। মরহুম শিল্পপতি শেখ আকিজ উদ্দিনের ছেলে শেখ আফিল উদ্দিন দুই মেয়াদ ধরে এ আসনের সংসদ সদস্য। বিএনপি থেকে আলী তারেক ১৯৭৯ সালে, ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে মফিকুল হাসান তৃপ্তি এবং ২০০১ সালে আলী কদর এ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। এ ছাড়া জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী নূর হোসেন ১৯৮৮ সালে এবং জাতীয় পার্টির প্রার্থী নজরুল ইসলাম ১৯৮৬ সালে এখান থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শিল্পপতি শেখ আফিল উদ্দিন। তবে এবার দলীয় মনোনয়ন নিয়ে নিজ দলের মধ্যেই কঠিন লড়াইয়ে নামতে হতে পারে তাকে। জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বেনাপোল পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম লিটন এবার দলীয় মনোনয়ন পেতে অনেক আগে থেকেই মাঠে নেমে পড়েছেন। পাসপোর্ট অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক আবদুল মাবুদও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ার চেষ্টা করছেন। এলাকার নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তারও যোগাযোগ রয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত শেখ আফিল উদ্দিন অথবা আশরাফুল আলম লিটনের মধ্যে যে কেউ দলের মনোনয়ন পাবেন বলে মনে করেন স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। মহাজোটের অন্যতম শরিক জাতীয় পার্টির শার্শা উপজেলা কমিটির সভাপতি আক্তার হোসেনও এ আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার চেষ্টা করছেন। এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেতে অন্তত হাফডজন নেতা চেষ্টা করে যাচ্ছেন। সংস্কারপন্থি নেতাদের আবার দলে ফিরিয়ে আনা শুরু করেছে বিএনপি। ওয়ান-ইলেভেনের পর দল থকে বহিষ্কৃত কেন্দ্রীয় সাবেক দফতর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তি দলে ফিরলে তিনি এ আসন থেকে প্রার্থী হওয়ার জন্য চেষ্টা করবেন বলে জানা গেছে। এ ছাড়া এ আসন থেকে প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন যশোর নগর বিএনপির সভাপতি সাবেক মেয়র মারুফুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মহসিন কবীর, শার্শা উপজেলা বিএনপির সভাপতি খায়রুজ্জামান মধু, সাধারণ সম্পাদক হাসান জহির এবং যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নূরুজ্জামান লিটন। এর আগে একবার আসনটি বিএনপি তাদের জোটের শরিক জামায়াতকে ছেড়ে দিয়েছিল। জামায়াত এবারও জোটের কাছে এ আসনটি দাবি করবে। জেলা জামায়াতের সাবেক আমির মাওলানা আজিজুর রহমানকে প্রার্থী করার কথা চিন্তা দলে আছে। তবে শরিকদের এ আসনটি ছেড়ে দেওয়ার ব্যাপারে বিএনপির নেতা-কর্মীদের মাঝে প্রবল আপত্তি আছে। যশোরের ছয়টি আসনের মধ্যে তিনটিই বিএনপি শরিকদের ছেড়ে দিয়েছিল। ফলে এলাকাগুলোয় বিএনপির সাংগঠনিক অবস্থা খুবই নাজুক হয়ে পড়েছে।

সর্বশেষ খবর