বুধবার, ৩১ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে দুদকের অভিযান, নানা অনিয়ম

নিজস্ব প্রতিবেদক

হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত এ অভিযান পরিচালিত হয়। জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতালের দুর্নীতির কারণে হৃদরোগ চিকিৎসা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। দুদক অভিযোগ কেন্দ্রে (হটলাইন-১০৬) গতকাল এমন অভিযোগ আসায় মহাপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মাদ মুনীর চৌধুরীর নির্দেশে চার সদস্যের একটি টিম আকস্মিক অভিযান চালায়। টিমের নেতৃত্ব দেন সহকারী পরিচালক ফারজানা ইয়াসমিন। অভিযানের ব্যাপারে দুদক এনফোর্সমেন্ট অভিযানের প্রধান সমন্বয়ক মোহাম্মাদ মুনীর চৌধুরী বলেন, হৃদরোগ হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা ভেঙে পড়েছে।

প্রায় ৪ ঘণ্টার এ অভিযানে দুদক টিম জানতে পারে, হাসপাতালে বেড প্রাপ্তির ক্ষেত্রে ওয়ার্ডবয়দের ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত ঘুষ প্রদান করতে হয়। এ ছাড়াও সিরিয়াল ভেঙে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা ঘুষের বিনিময়ে ইমারজেন্সি ইসিজি করানো হয়। এমনকি ডেথ সার্টিফিকেট নেওয়ার সময়ও ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা ঘুষ প্রদান করতে হয়। আরও জানা গেছে, কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে জীবাণুনাশক অটোক্লেভ মেশিন ক্রয়ের উদ্যোগ নিলেও হাসপাতালে ২টি অকেজো মেশিন ব্যবহৃত হচ্ছে। অকেজো মেশিন মেরামতে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান সিএমএইচডির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি। ফলে জীবাণু মুক্তকরণের ব্যবস্থা না করেই রোগীদের হৃদযন্ত্রের অপারেশন চলছে। ফলে গত আগস্ট মাসের পর ইনফেকশনে রোগী মৃত্যুর হার বেড়ে গেছে। কারিগরি ব্যবস্থাপনায় মারাত্মক ত্রুটি ও অবহেলার কারণে রোগীদের মৃত্যু এবং সার্বিক অব্যবস্থাপনার বিষয়ে হাসপাতালের অধ্যাপক (ডা.) এম আর সিজারকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জানান, হাসপাতালের দুটি অপারেশন থিয়েটারের মধ্যে একটি চালু আছে। অপরটিতে পানি পড়ার কারণে অপারেশন বন্ধ করে রিনোভেশন করা হচ্ছে। পানি পড়ার কারণে ইনফেকশনের সম্ভাবনা রয়েছে বলেও তিনি স্বীকার করেছেন। তিনি হাসপাতালের ওয়ার্ডবয় এবং আনসার সদস্যদের দৌরাত্ম্যের কথা স্বীকার করেছেন। পাশাপাশি দায়ীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা। এ ছাড়া শিগগিরই দুর্নীতিবাজ কর্মচারীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গতকালের এ অভিযান পরিচালনা প্রসঙ্গে দুদক এনফোর্সমেন্ট অভিযানের প্রধান সমন্বয়ক মহাপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মাদ মুনীর চৌধুরী বলেন, হৃদরোগ হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা ভেঙে পড়েছে। চিকিৎসা সেবায় ব্যর্থতা নিয়ে কারও দায়িত্বে থাকা উচিত নয়। শিগগিরই এসব অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতি দূর না করতে পারলে দায়িত্বপ্রাপ্তদের দুদকের জবাবদিহিতার আওতায় আনা হবে। এসব ঘটনার পেছনে দুর্নীতিই প্রধান কারণ বলে মনে করে। সঙ্গত কারণে দুদক এসব বিষয়ে শিগগিরই অনুসন্ধান শুরু করবে।

সর্বশেষ খবর