বুধবার, ৩১ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলাসহ ২৪ প্রকল্প অনুমোদন একনেকে

নিজস্ব প্রতিবেদক

‘জরুরিভিত্তিতে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় মাল্টি-সেক্টর’সহ ২৪ হাজার ৭৪০ কোটি টাকায় ২৪টি উন্নয়ন প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। গতকাল রাজধানীর শেরেবাংলা নগর এনইসি সম্মেলনকক্ষে একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এসব প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়।

বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গারা যতদিন কক্সবাজারে থাকবেন ততদিন তাদের ভালোমন্দ দেখার দায়িত্ব আমাদের। আমরা তাদের ভালো থাকার ব্যবস্থা করছি। যখন তারা মিয়ানমারে ফেরত যাবেন তখন সেখানকার স্থানীয় বাংলাদেশিরা এসব অবকাঠামোর সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবেন। কেননা, রোহিঙ্গাদের কারণে তারা অনেক কষ্টভোগ করছেন। বিশ্বব্যাংক ও এডিবিসহ অনেক সংস্থা ও দেশ অনুদান দিচ্ছে। আমরা তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। জরুরি ভিত্তিতে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় মাল্টি-সেক্টর প্রকল্পের আওতায় রোহিঙ্গাদের জন্য সুপেয় পানি, স্বাস্থ্য ও পয়ঃনিষ্কাশন, আশ্রয় শিবিরের অভ্যন্তরে সড়ক, ফুটপাথ, বাতি, হাটবাজার উন্নয়ন, যোগাযোগকারী সড়ক, সেতু, সাইক্লোন শেল্টার, মাল্টিপারপাস কমিউনিটি কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ১ হাজার ৫৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। মুস্তফা কামাল, প্রধানমন্ত্রী একনেক সভায় ডাকঘরগুলোতে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ই-কমার্সসহ বিভিন্ন নতুন কার্যক্রম গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। এ ছাড়া শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের সমাধিস্থল সংরক্ষণের পাশাপাশি যেখানে গণহত্যা হয়েছে, সেখানকার গণকবরে যারা শায়িত আছেন তাদের নাম খুঁজে বের করে তালিকা তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন। যাদের নাম পাওয়া যাবে না, সেখানে লিখতে হবে অজানা শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সব পুলিশের জন্য পর্যায়ক্রমে আবাসন ব্যবস্থা করতে হবে। প্রত্যেক জেলায় একটি করে ১০ তলা ভবন তৈরির নির্দেশ দেন তিনি। একনেকে অনুমোদন পাওয়া উল্লেখযোগ্য প্রকল্পগুলো হচ্ছে— ৫ হাজার ৫৭৯ কোটি টাকায় বগুড়া হতে শহীদ এম মনসুর আলী স্টেশন-সিরাজগঞ্জ পর্যন্ত নতুন ডুয়েলগেজ রেললাইন নির্মাণ, এক হাজার ৭৩৭ টাকা ব্যয়ে ঈশ্বরদী থেকে পাবনা হয়ে ঢালারচর পর্যন্ত নতুন রেললাইন নির্মাণ (দ্বিতীয় সংশোধিত), ১ হাজার ৫১০ কোটি টাকা ব্যয়ে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ১ থেকে ৫ নম্বর জোনের অভ্যন্তরীণ রাস্তা, নর্দমা ও ফুটপাথ নির্মাণ, ৬৯৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন অঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা, নর্দমা ও ফুটপাথ নির্মাণ। ১ হাজার ২৭২ কোটি টাকা ব্যয়ে ডিজিএফআই-এর টেলিযোগাযোগ ও আইসিটি অবকাঠামো, মানবসম্পদ এবং কারিগরি সক্ষমতা উন্নয়ন, ১ হাজার ২৫৯ কোটি টাকা ব্যয়ে মাদানী এভিনিউ থেকে বালু নদী পর্যন্ত মেজর রোড প্রশস্তকরণ এবং বালু নদী থেকে শীতলক্ষ্যা নদী পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ (প্রথম পর্ব), ৪২১ কোটি টাকায় বাংলাদেশ সচিবালয়ে ২০ তলা বিশিষ্ট নতুন অফিস ভবন নির্মাণ, ৭৯৮ কোটি টাকা ব্যয়ে কর্ণফুলী সেতু নির্মাণ, ৪৫৭ কোটি টাকা ব্যয়ে রাজউক পূর্বাচল ৩০০ ফুট মহাসড়ক হতে মাদানী এভিনিউ- সিলেট মহাসড়ক পর্যন্ত সংযোগ সড়ক নির্মাণ, ৪৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে ডাক অধিদফতরের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন এবং সম্প্রসারণ, ৪৬১ কোটি টাকা ব্যয়ে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও অন্যান্য বীর যোদ্ধাদের সমাধিস্থল সংরক্ষণ ও উন্নয়ন, ৯২৭ কোটি টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে বাংলাদেশ পুলিশের জন্য ৯টি আবাসিক টাওয়ার নির্মাণ, ১ হাজার ১৮৪ কোটি টাকা ব্যয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির স্থায়ী ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠা, ৬৫৬ কোটি টাকা ব্যয়ে বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘর নির্মাণ (সংশোধিত), ৩৫৮ কোটি টাকায় পতেঙ্গায় বিএনএ বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্স নির্মাণ এবং ৩ হাজার ৬৯১ কোটি টাকায় ২৩টি জেলায় পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট স্থাপন প্রকল্প।

সর্বশেষ খবর