বুধবার, ৩১ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

জোটেই ভোট করবে জামায়াত দেবে স্বতন্ত্র প্রার্থী

শফিকুল ইসলাম সোহাগ

হাই কোর্টের আদেশে জামায়াতে ইসলামীর প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’ নিষিদ্ধ হলেও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যে কোনো মূল্যে তারা নির্বাচনে অংশ নিতে চায়। ১৯৪১ সালের ২৬ আগস্ট পাকিস্তানের লাহোরে জন্ম নেওয়া দলটি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবে কিনা, অংশ নিলেও বিএনপির প্রতীক ব্যবহার করবে কিনা এ নিয়ে জনমনে দিন দিন প্রশ্ন বাড়ছে। জানা যায়, জামায়াত আগামী নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০দলীয় জোটের ব্যানারে অংশ নেবে। নিজেদের প্রতীক না থাকলেও ‘ধানের শীর্ষ’ ব্যবহার করবে না। স্বতন্ত্রভাবে ভোট করবে জামায়াত।

জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মাওলানা আবদুল হালিম বলেন, আমরা নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। নির্বাচন জোটগতভাবেই করব। তবে নির্বাচনের প্রতীক কী হবে, এ নিয়ে কাজ চলছে। প্রতীক আমাদের জন্য এখন বড় সমস্যা নয়। সবাই জামায়াতকে চেনে এবং পছন্দ করে। দলের পার্লামেন্টারি বোর্ডের একাধিক সদস্য জানান, জামায়াত সব আসন বাছাই করে এরমধ্যে ১০০ আসনে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে। তবে প্রতিটি আসনের প্রার্থী রয়েছে দলটির। তবে জোটভিত্তিক নির্বাচনের অধিকতর সম্ভাবনা থাকায় শেষ পর্যন্ত কত আসন চূড়ান্ত হবে, তা এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের একজন সদস্য বলেন, যেহেতু আসন ভাগাভাগির বিষয়টি এখনো টেবিলে আসেনি, সেজন্য সুনির্দিষ্ট করে আমরা এখনই কথা বলব না। জোটের টেবিলে ওঠার পর বিষয়টি নিয়ে আমাদের অবস্থান জানাব। জানা যায়, দলীয় প্রতীক নির্ধারণ ও এ সংক্রান্ত বিষয়ে কাজ করতে একটি আইনি বিশেষজ্ঞ কমিটি কাজ করছে। এ কমিটি হাইকোর্টের আদেশে স্থগিত নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন ও প্রতীক বিষয়ে পর্যালোচনার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেবে। কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের একটি সূত্র জানায়, নির্বাহী পরিষদ দলের পার্লামেন্টারি বোর্ডের দায়িত্ব পালন করে। জামায়াতের আমির এই কমিটির প্রধান। এরপর নির্বাচন পরিচালনা কমিটি আছে, এই কমিটির প্রধান সেক্রেটারি জেনারেল। সংসদীয় নির্বাচনের প্রার্থী নির্ধারণ করতে দলের একটি কেন্দ্রীয় কমিটি আছে। সে কমিটি আরও আগেই শতাধিক আসনে জরিপসহ নেতা-কর্মীদের অভিমত নিয়েছে। প্রার্থী নির্ধারণ প্রক্রিয়া সম্পর্কে পার্লামেন্টারি কমিটির একজন সদস্য জানান, প্রার্থী বাছাই করতে কেন্দ্রীয় একটি বিভাগ আছে। সে কমিটি প্রত্যেকটি এলাকায় তৃণমূলে যায়। ছাত্র-ছাত্রী, নারী, পুরুষসহ স্তরভিত্তিক জনশক্তির গোপন অভিমত নেওয়া হয়। গোপন ব্যালটে তারা প্রত্যেকটি স্তরের লিখিত অভিমত কেন্দ্রে আনেন। এরপর বাছাই শেষে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি আবারও বাছাই করে। এক বা একাধিক নাম সাজিয়ে কে কত ভোট পেলেন, তা হিসাব করা হয়। এই কমিটি পার্লামেন্টারি কমিটির কাছে প্রস্তাব পেশ করে। এরপর পার্লামেন্টারি বোর্ড এই অভিমতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত দেয়। দায়িত্বশীল একজন নেতা জানান, ইতিমধ্যে আমাদের টার্গেট করা আসনের প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া শেষ। এটাকে দুটো ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হবে। প্রথম তালিকায় থাকবে নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনা ৮০ শতাংশের ওপর আছেন, এমন প্রার্থীদের নাম। যেখানে দলীয় ভোট বেশি। এর মধ্যে বিজয়ী উপজেলাগুলো রয়েছে। নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত এই দায়িত্বশীল আরও জানান, পুরো প্রক্রিয়া শেষ হলেও এখন পর্যন্ত কয়েকটি আসনে প্রার্থী নির্ধারণ বাকি আছে। এর মধ্যে কেউ হয়তো মারা গেছেন বা কেউ হয়তো অবস্থার পরিবর্তন করেছেন। জামায়াতের প্রভাবশালী আরেক নেতা বলেন, জোটভিত্তিক নির্বাচন করলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে প্রতীক হবে আলাদা। ধানের শীষ নেবে না জামায়াত। ধানের শীষে ভোট করলে দলের স্বকীয়তা যেমন থাকে না তেমনি জোটগতভাবে আমাদের আসন নেমে আসবে অর্ধেকে।

 

সর্বশেষ খবর