বাংলাদেশে যাকে আমরা ‘ভক্সওয়াগন’ নামে চিনি, জার্মানির স্থানীয় লোকেরা তাকে ‘ফক্সভোগেন’ নামে ডাকে। ইউরোপের এক নম্বর গাড়ি নির্মাতা এই প্রতিষ্ঠানটির কারখানা জার্মানির উল্ফসবারগে। সে কারণে উল্ফসবারগের বদলে ‘ফক্সভোগেন’ নামেই চেনে ছবির মতো ছোট এই শহরটিকে। আর ভক্সওয়াগনের এই শহরে এখন সবচেয়ে বেশি আলোচিত বাংলাদেশের নাম। সে আলোচনায় ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের ছোট্ট দেশটির ক্ষুদ্রঋণের সাফল্য, নারীর ক্ষমতায়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ মানবসম্পদ সূচকে উন্নতির গল্প উঠে আসছে বারে বারে। ভক্সওয়াগন এর প্রদর্শনী কেন্দ্র অটোস্ট্যাডে আজ ৮ নভেম্বর থেকে শুরু হবে সোশ্যাল বিজনেস সামিটের নবম কনফারেন্স। বিশ্বের প্রায় ২৮টি দেশের ২শ’র বেশি প্রতিনিধি এসেছেন এই সম্মেলনে অংশ নিতে। তার আগে ৬ নভেম্বর থেকে শুরু হয়েছে তরুণদের নিয়ে সোশ্যাল বিজনেস একাডেমিয়া কনফারেন্স। এই কনফারেন্সে ঘুরে ফিরে আসছে বাংলাদেশের উন্নতির উদাহরণ। কীভাবে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ঋণে এত সাফল্য পেল, শিক্ষা স্বাস্থ্যসহ মানবসম্পদ খাতে কীভাবে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে স্বল্পোন্নত এ দেশটি তাই শুনতে চাচ্ছে সবাই। সামাজিক ব্যবসার প্রবক্তা, শান্তিতে নোবেল জয়ী প্রফেসর মোহাম্মদ ইউনুস বলেন, গ্লোবাল সোশ্যাল বিজনেস সম্মেলনে যেসব সামাজিক সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয় তার প্রায় সবগুলোর অস্তিত্ব রয়েছে বাংলাদেশে। দারিদ্র্য, বেকারত্ব, ক্ষুদ্রঋণ, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত বাংলাদেশের উন্নয়নে বড় চ্যালেঞ্জ। তাই সামাজিক ব্যবসা সম্মেলনে ঘুরেফিরেই আসে বাংলাদেশের নাম। বাংলাদেশে ক্ষুদ্র ঋণের সাফল্য, নারীর ক্ষমতায়নে ক্ষুদ্র ঋণের ভূমিকা, সামাজিক ব্যবসার মাধ্যমে বেকারত্ব দূর করে স্বাবলম্বী হওয়ার গল্প— এসবই শুনতে চায় বিশ্ব। বাংলাদেশকে বাদ দিয়ে সামাজিক ব্যবসার মিলন চিন্তাও করা যায় না। মালয়েশিয়ার সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ইদ্রিস জোসে এসেছেন এই সম্মেলনে অংশ নিতে। শিক্ষা স্বাস্থ্যসহ মানবসম্পদ সূচকে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ায় তিনিও বিস্মিত। তবে উন্নয়ন টেকসই করার জন্য ধরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও বেশি গবেষণামূলক কার্যক্রম বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। ইদ্রিস বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে কোনো সন্দেহ নেই, এই উন্নতি আরও গতি পাবে যদি গবেষণা ও প্রশিক্ষণে আরও বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। সম্মেলনে অংশ নিতে পাকিস্তান থেকে এসেছেন দেশটির শীর্ষস্থানীয় ইংরেজি দৈনিক দ্য ডনের ব্যুরোচিফ সৈয়দ আলী শাহ। বাংলাদেশ নিয়ে তিনিও উচ্চকিত। অনুষ্ঠানের এক ফাঁকে জানতে চাইলেন- বাংলাদেশ এখন ডলারের দাম কত? যখন শুনলেন ৮৫ টাকার কাছাকাছি, তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বললেন, হায় খোদা! পাকিস্তানে এখন ডলারের দাম ১৩৫ রুপি!